জাকসু নির্বাচনে কোনো ঝুঁকির আশঙ্কা নেই: পুলিশ

জাকসু নির্বাচন ঘিরে জাবিতে নিরাপত্তা জোরদার
জাকসু নির্বাচন ঘিরে জাবিতে নিরাপত্তা জোরদার  © টিডিসি

দীর্ঘ ৩৩ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে এ ভোট গ্রহণ শুরু হয় চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এ দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হলের সংসদ নির্বাচনও হবে। এ নির্বাচন ঘিরে কোনো ঝুঁকির আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আনিসুজ্জামান।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিং করার সময় এ মন্তব্য করেন তিনি। এসময় তিনি বলেন, এ নির্বাচনকে ঘিরে ঝুঁকির কোনো আশঙ্কা নেই। পুরো বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে দুই হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও ৭ প্লাটুন বিজিবি, র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা কাজ করবে। বহিরাগতদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বাড়তি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিটের সঙ্গে বডি ওন ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো ঝুঁকির আশঙ্কা নেই।

তিনি আরও বলেন, অন্যান্য ফটকের তুলনায় গেরুয়া ফটক দিয়ে বাইরের লোকজন ঢোকার চেষ্টা করবে। এ কারণে সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বেশি রাখা হয়েছে। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ হাজার ৭৪৭ জন। বিভিন্ন পদে চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মোট ১৭৮ জন প্রার্থী অনুমোদন পেয়েছেন। এর মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৯ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ৬ জন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ১০ জন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হলের ২২৪টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ১০টি ছাত্রী হল ও ১১টি ছাত্র হল। প্রতিটি কেন্দ্রে থাকবেন একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা, ৬৭ জন পোলিং কর্মকর্তা ও ৬৭ জন সহকারী পোলিং কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন: জাকসু নির্বাচন : উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ

প্রসঙ্গত, জাকসুতে ২১টি হলের ২২৪টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে ১০টি ছাত্রী হল ও ১১টি ছাত্র হল। প্রতিটি কেন্দ্রে ১ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা, ৬৭ পোলিং অফিসার ও ৬৭ সহকারী পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন। কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৪০টি ব্যালটে ভোট দেবেন ভোটাররা। বিশেষ ওএমআর মেশিনে ভোট গণনা করা হবে।

নির্বাচনী সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পোশাক ও সিভিল পোশাকে প্রায় ১ হাজার ২০০ পুলিশ সদস্য ক্যাম্পাসের নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করবেন। নির্বাচন কমিশনের পরামর্শ অনুযায়ী তারা দায়িত্ব পালন করবেন। ভোটকেন্দ্র ও হলে দায়িত্ব পালন করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী। পাশাপাশি ২ জন ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।

জাহাঙ্গীরনগরের ইতিহাস এটি ১০তম জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের নির্বাচনে মোট ১১ হাজার ৮৯৭ শিক্ষার্থী ভোট প্রদান করার কথা রয়েছে। এই নির্বাচনই হবে জাহাঙ্গীরনগরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক চর্চা দৃষ্টান্ত।

এবারের জাকসু নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ ও আংশিক মিলে মোট ৮ প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শিক্ষার্থীরা। এক মধ্যে ছাত্রদল সমর্থিত পূর্ণাঙ্গ প্যানেল, ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’, বাগছাসের ‘সম্মিলিত ঐক্য ফোরাম’, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন একাংশের সমর্থিত ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল ও আরেক অংশের ‘সংশপ্তক পর্ষদ’। এ ছাড়াও রয়েছে তিনটির স্বতন্ত্র প্যানেল।

আপাতত শিক্ষার্থীরা এককভাবে কোনো প্যানেলকে সমর্থন করার কথা না ভাবলেও তারা ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়কে বিবেচনায় রাখছেন। সেগুলো হলো জুলাই আন্দোলনের স্প্রিট, প্রার্থীদের ব্যক্তিগত ইমেজ, সামাজিক কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের মনোনীত প্রার্থীদের ক্ষেত্রে দলীয় কর্মকাণ্ডকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন ভোটাররা।

 


সর্বশেষ সংবাদ