চবিতে সমন্বয় কমিটি গঠন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ৫ দাবি

পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা
পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি ফটো

মধ্যরাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) জিরো পয়েন্ট এলাকায় অতর্কিত হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে স্থানীয় যুবলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা।

এ ছাড়া আজকের ঘটনায় পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ভবিষ্যতে এসব সংঘাত এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় ও স্থানীয়দের নিয়ে সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সোমবার (২১ অক্টোবর) চবি শাখা ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা প্রেস ব্রিফিং করে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন।

আজকের ঘটনার প্রেক্ষিতে সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ভবিষ্যতে এমন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য সবার অংশগ্রহণে একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে সমন্বয়ক হিসেবে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কোরবান আলি। এ ছাড়া সমন্বয় কমিটিতে পাঁচ জন শিক্ষার্থী, তিন জন স্থানীয় প্রতিনিধি রয়েছেন।

আরও পড়ুন: ১৫ জুলাই ঢাবিতে হামলা, আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের আসামী হলেন যারা

সমন্বয় কমিটির পাঁচ শিক্ষার্থী দাবিগুলো তুলে ধরেন। তাদের দাবিগুলো হলো, আজ যারা হামলা করেছে, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী হানিফ ও তার সহযোগীদের আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ত্রাস সৃষ্টিকারী আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে আজকেই অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে, হাটহাজারী থানার ওসিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা নিশ্চিতের স্বার্থে রেলগেট এবং এক নম্বর গেটে পুলিশ বক্স এবং সিসিটিভির ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া গণহত্যায় অংশগ্রহণ ও সমর্থনকারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আইনি এবং একাডেমিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এদিকে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিতে শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি নাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করতে যেসব চক্র সক্রিয় রয়েছে, অবিলম্বে তাদের মূল হোতাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে সন্ত্রাসমুক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসনের সরাসরি হস্তক্ষেপ ও কার্যকর ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানাচ্ছি।

আরও পড়ুন: ভিসির কাছে শিবিরের স্মারকলিপি, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ-ডাকসু নির্বাচনসহ একগুচ্ছ প্রস্তাব

নেতারা বলেন, গতরাত পৌনে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশনে দোকান ভাঙচুর ও জিরো পয়েন্টে গুলিবর্ষণ করে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ক্যাডাররা। শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সবাইকে জিরো পয়েন্টে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানায়। পরে একটি মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলক্রসিংয়ের দিকে এগিয়ে গেলে স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আবার ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।

এ সময়ে স্থানীয় মসজিদে মাইকিং করে গুজব ছড়িয়ে এলাকাবাসীদের জড়ো হতে বলে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা। পরে তিন পুলিশ সদস্য রেলক্রসিং এলাকায় এসে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে বলেন। আশ্বস্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা ফিরে যেতে শুরু করলে পেছন থেকে রামদা ও লাঠিসোঁটা নিয়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগের প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন সদস্য শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এতে প্রায় ৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। 

তারা আরও বলেন, আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে জড়িতদের গ্রেফতার এবং শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনগণের প্রতি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।


সর্বশেষ সংবাদ