ঢাবির হলে তরুণ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে যা বললেন সমন্বয়ক আবু বাকের

আবু বাকের মজুমদার ও তোফাজ্জল
আবু বাকের মজুমদার ও তোফাজ্জল  © ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জল নামে এক মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আবু বাকের মজুমদার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ফেসবুকের দীর্ঘ স্ট্যাটাসে ঘটনার আগে এবং পরের চিত্র বর্ণনা করেছেন তিনি। নিচে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের পাঠকদের জন্য আবু বাকেরের স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘‘আমি ফজলুল হক মুসলিম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। গতকাল ❝ফজলুল হক মুসলিম হল স্পোর্টস টুর্নামেন্ট❞-এর ফুটবল টুর্নামেন্ট চলছিলো। আনুমানিক সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমি ঢাকা মেডিকেল মোড় থেকে হল-এ খেলা দেখতে আসি এবং খেলার উদ্বোধনী ম্যাচের একাংশ ও দ্বিতীয় ম্যাচের একাংশের ধারাভাষ্যকার হিসেবে ছিলাম। ৭টা ৪০ এ  হলের বাইরে আমার আরেকটা শিডিউল থাকায় খেলার কমেন্ট্রি বক্স থেকে উঠে (আনুমানিক সন্ধ্যা ৭:৪০) মেহেদী হাসানের (খেলার আয়োজকদের একজন) সাথে কথা বলা অবস্থায় দেখি একজনকে(চোর সন্দেহে) হলের মেইন বিল্ডিংয়ের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, উপস্থিত শিক্ষার্থী একজনকে(খেয়াল নাই) জিজ্ঞেস করায় বলে লোকটা মোবাইল চোর, দুপুরে ৬টা মোবাইল চুরি করেছে। নরমালি হল-এ অনেক এরকম লোককে আগেও ধরতে দেখেছি। সাধারণত জিজ্ঞাসাবাদ শেষে প্রক্টর অফিসের মাধ্যমে পুলিশে হস্তান্তর করে।

আমার যেহেতু একটা শিডিউল আগে থেকেই ছিলো তাই জুনিয়রকে  বাইকের চাবি দিতে বলি ,সে নিজে আমাকে দিয়ে আসার কথা বললে প্রায় একই সময়ে তাকে নিয়ে আমি আমার গন্তব্যে যাই। মোটামুট ২/৩ মিনিটের মধ্যেই আমি হল ছেড়ে কাজে যাই। পরবর্তীতে হলে ফিরতে ফিরতে বাজে প্রায় ১২টা ১৫ মিনিট। 

হলে ফেরার বেশ কিছুক্ষণ পর(সময় এক্সাক্ট মনে নেই) দুইজন জুনিয়র(চেহারা চিনলেও নাম জানিনা) এসে চোর সন্দেহে আটক করা লোকটা মারা যায় বলে জানায় এবং তার কিছুক্ষণের মধ্যেই ডিইউ নিউজ নামে একটা অনলাইন পোর্টালে এ সংক্রান্ত নিউজ দেখে পুরোপুরি নিশ্চিত হই। সাথে সাথেই সম্ভাব্য জড়িত কারা এ বিষয়ে তথ্য নেয়া শুরু করি এবং ফেসবুকে প্রতিবাদ জানাই। পরবর্তীতে একজন এসে জানায় কে যেনো হলের মুক্ত মঞ্চে সবাইকে ডেকেছে।মুক্ত মঞ্চে না গিয়েই আমারা উপস্থিত কয়েকজন আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেই বিক্ষোভ মিছিলের। 

শুরুতেই হলের এক্সটেনশন বিল্ডিং-এর সামনে আমরা স্লোগান দেয়া শুরু করি,বেশ কিছুক্ষণ এখানে স্লোগান দিয়ে ছাত্রদের নিচে নামিয়ে পরবর্তীতে মেইন বিল্ডিংয়ে মিছিল নিয়ে যাই ও ভিতরে প্রদক্ষিণ করি। পরবর্তীতে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হল হয়ে দোয়েল চত্বর হয়ে টিএসসি, ভিসি চত্ত্বর ঘুরে আবারো টিএসসি এসে বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে প্রোগ্রাম শেষ করি।

প্রোগ্রাম শেষে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে যাই, সেখানে প্রক্টর স্যার আসেন। ঢাকা মেডিকেল থেকে হল-এ এসে প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছি এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে যাচ্ছি।’’


সর্বশেষ সংবাদ