চবির ভিসি হতে যাওয়া শিক্ষার্থীবান্ধব কে এই অধ্যাপক ইয়াহইয়া আখতার?

অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ  ইয়াহইয়া আখতার
অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার  © সম্পাদিত

চট্টগ্রাম বিশ্বদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য (ভিসি) হিসেবে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন উচ্চশিক্ষালয়টির রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার। অত্যন্ত নীতিবান এবং শিক্ষা ও ছাত্রবান্ধব শিক্ষক হিসেবে পরিচিত তিনি। এছাড়াও গণতন্ত্র ও নির্বাচন নিয়ে তাঁর বহু গবেষণা ও লেখালেখি রয়েছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টির সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পদে নিয়োগ পাওয়ার পর ছাত্রবান্ধব শিক্ষক হিসেবে তিনি প্রশংসা কুড়িয়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের।

অধ্যাপক ইয়াহইয়ার বাড়ি খুলনা জেলায়। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিএ (অনার্স) এবং এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ওয়াটারলু থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে দ্বিতীয় এমএ ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সিডনি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

পেশাগত জীবনে অধ্যাপক আখতার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষক হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন এবং ১৯৮২ সাল থেকে এই বিভাগে অধ্যাপনা করছেন। তার গবেষণার মূল ক্ষেত্রসমূহের মধ্যে রয়েছে সমসাময়িক রাজনীতি, দুর্নীতি, ধর্ম, নির্বাচন এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতি। তিনি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গবেষণা জার্নালে গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন। দুইবছর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপনা থেকে অবসর গ্রহণ করেন। 

আরও পড়ুন: চবির ভিসি হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন অধ্যাপক ইয়াহইয়া আখতার

গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান
ড. আখতারের লেখালেখি মূলত গবেষণামূলক এবং তিনি রাজনীতি ও সমাজতত্ত্ব বিষয়ে বহু প্রবন্ধ ও গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন। তার লেখা বই ‘ইলেকটোরাল করাপশন ইন বাংলাদেশ’ (২০০১), যা ইংল্যান্ডের অ্যাশগেট পাবলিশিং লিমিটেড থেকে প্রকাশিত, পশ্চিমা ও প্রাচ্যের প্রতিষ্ঠিত সমাজবিজ্ঞানীদের সমাদর পেয়েছে। এছাড়াও তার ‘রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও সামাজিকীকরণ: প্রসঙ্গ বাংলাদেশ’ (১৯৯১), ‘নির্বাচন, দুর্নীতি ও রাজনীতি’ (২০০৩) এবং ‘চারদলীয় জোট সরকারের দেশ শাসন’ (২০০৩) বইগুলোও বহুল পঠিত হয়েছে। তার প্রবন্ধ ও গবেষণা অনেক আন্তর্জাতিক জার্নাল এবং সেমিনারে প্রকাশিত হয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ তার লেখা ‘দুর্নীতি রোধে সংবাদপত্রের ভূমিকা’ শীর্ষক রিসার্চ মনোগ্রাফ প্রকাশ করেছে।

ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স এবং মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। পরে কানাডার  নামকরা ইউনিভার্সিটি অব ওয়াটারলু থেকে রাজনীতি বিজ্ঞানে দ্বিতীয় মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। পিএইচডি সম্পন্ন করেন বিশ্বের আরেক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সিডনি থেকে। 

ড. আখতার একাডেমিক কাজের পাশাপাশি সামাজিক ও গবেষণামূলক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তিনি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর সদস্য এবং রিসার্চ সোসাইটি অব বাংলাদেশ-এর যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া, তিনি ইয়ুথ ফোরাম ফর ডেমোক্রাসির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন।

তার বিষয়ে চবি শিক্ষার্থী শেখ আব্দুল্লাহ ইয়াসিন বলেন, স্যার শিক্ষার্থীবান্ধব সজ্জন একজন মানুষ। আমাকে একজন ছাত্র হিসেবেই গণ্য করতেন বোধহয়। তাই তিনি প্রায় সময় ওয়াটসএপে খোঁজখবর নিতেন। বহু বছর অবমূল্যায়নের পর আজ স্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হতে যাচ্ছেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়টির রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী মুনজের সাদ বলেন, স্যারের সাথে আমাদের প্রায়ই কথাবার্তা হতো; বলা যায় উনি একজন শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষক। আমাদের ওরিয়েন্টেশনের সময় তিনি প্রথমেই বলে দিয়েছিলেন তাঁর অফিস আমাদের জন্য সবসময়ই খোলা। আমরা চাইলে যখন ইচ্ছা যেতে পারি। আমি আশা করতে পারি স্যারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।  


সর্বশেষ সংবাদ