ঢাবি হলের শুরু থেকেই কাজ করছেন দোকানদার আব্দুর রব

আব্দুর রব
আব্দুর রব  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পুরাতন হলগুলোর মধ্যে অন্যতম পল্লীকবি জসীম উদ্দীন হল। ১৯৭৭ সালে এই হলে আবাসিক কার্যক্রম শুরু হলে তখন থেকেই হলে বিভিন্ন কাজের সাথে জড়িত ছিলেন আব্দুর রব। বর্তমানে তিনি হলের একটি দোকান পরিচালনা করেন। 

১৯৭৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি চালু হয় কবি জসীম উদদীন হলের আবাসিক কার্যক্রম। তখন হলে কোনো ক্যান্টিন বা দোকান ছিলো না। শিক্ষার্থীদের খাবারের চাহিদা পূরণের জন্য ছিলো শুধু একটি মেস। সেখানেই সকল শিক্ষার্থীরা খাবার গ্রহণ করতেন।

আব্দুর রবের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি হলের প্রতিষ্ঠাকালীন মেসে রান্নার কাজ করতেন। তখন তারা তিনজন রান্নার দায়িত্বে ছিলেন। পরবর্তীতে হলে একটি টং দোকান তৈরি করা হলে তিনি সেখানে চা, কেক জাতীয় শুকনো খাবার বিক্রি করতেন। এরপর একে একে আরও অনেক দোকান এবং ক্যান্টিন প্রতিষ্ঠিত হয়।

আব্দুর রব স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই ঢাকায় অবস্থান করছেন। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলায়। দরিদ্রতার কারণে ছোট বেলা থেকেই তিনি ঢাকার কাটাবনে অবস্থান করেন। পরবর্তীতে হলে কাজের সুযোগ পান। সেই থেকেই জসীম উদদীন হলেই দোকানদারি করে আসছেন তিনি।

তার সাথে কথা বলে আরও জানা যায়, তার পরিবারে তিন মেয়ে ও দুই ছেলে সন্তান আছে। মেয়েদের এবং একটি ছেলের বিবাহ সম্পন্ন করেছেন এই হলে দোকানদারি করে। বর্তমানে তার ছোট ছেলেটি তার সাথেই হলে দোকান পরিচালনা করছে। 

আব্দুর রব দীর্ঘদিন দোকান পরিচালনা এবং তার জীবনের সুখ-দুঃখের কথা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন প্রতিষ্ঠাকালীন থেকেই শিক্ষার্থীরা আমাকে রব ভাই বলে ডাকতো। একটা দোকান থাকায় সেসময় আমার আয় মোটামুটি ভালোই ছিলো। পরে অনেক দোকান হলো, তাই আয়ও কমে গেছে। পরিবার সন্তানাদি নিয়ে কোনোমতে খেয়ে পড়ে বেঁচে আছি। এখন মাসে ১৫ হাজার টাকা এবং বেশি হলে ২০০০০ টাকা আয় হয়। 

তিনি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত বলে জানান তিনি। কোনো কোনো মাসে তার প্রায় ১০ হাজার টাকার ঔষধ লাগে। টাকা দিতে হয় বলে কোনো কর্মচারী রাখেন না তিনি। নিজের ছেলেকে নিয়ে দোকানটি পরিচালনা করছেন দীর্ঘদিন যাবৎ। এ সময় তিনি কান্না বিজড়িত কণ্ঠে বলেন, এখানে সবচেয়ে কষ্ট হলো থাকার কষ্ট। ছেলে আর আমি এই ছোট্ট দোকানের মধ্যে এতো জিনিসের মাঝে জায়গা করে ঘুমাই। কোনো মতে রাত পার করতে পারলেই যেন হয়।

বৃদ্ধ আব্দুর রব জানান, যতদিন পর্যন্ত তিনি বেঁচে থাকবেন ততদিন এই দোকান চালাবেন। কারণ তার যাওয়ার বা আয় করার মতো আর কোনো জায়গা বা অবস্থান নেই। এই দোকানই তার শেষ জীবনের একমাত্র আশা ও ভরসার সম্বল।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence