ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার উপাচার্য প্যানেল হচ্ছে না

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন  © ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বর্তমান উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২ নভেম্বর। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে প্যানেল নির্বাচনের নিয়ম রয়েছে। তবে সময় স্বল্পতার কারণে উপাচার্য প্যানেল হবে না বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দলের যুগ্ন আহ্বায়ক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। অবশ্য এবারের ভিসি প্যানেল নিয়ে শুরু থেকেই ধোয়াশাঁ ছিল।

জানা গেছে, ভিসি প্যানেল নিয়ে কোনো ধরনের উদ্যোগ নেননি বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানও। ভিসি প্যানেল নির্বাচন নিয়ে তারিখও ঘোষণা হয়নি। তবে নতুন প্যানেল গঠন নিয়ে সরকারপন্থী শিক্ষকদের নানামুখী তৎপরতা শুরু হয়েছিলে। ভিসি হতে আগ্রহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা সিনেট সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন মহলেও যোগাযোগ রাখছিলেন। 

কয়েকজন সিনেট সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী ২ নভেম্বর বর্তমান উপাচার্যের মেয়াদ শেষ। সময় আছে ২১ দিন। সাধারণত কমপক্ষে এক মাস আগে সিনেট বৈঠক ডাকার রেওয়াজ রয়েছে। এছাড়া আগামী ২৬ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। সে সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ধরনের আনুষ্ঠানিকতা থাকবে। এর আগে ভিসি প্যানেল সম্ভব নয়। তাছাড়া বর্তমান উপাচার্য ৫ দিনের চীন সফর শেষে ফিরবেন আজ বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর)। ২১ দিনের মধ্যে আর উপাচার্য প্যানেল সম্ভব নয় বলে মনে করছেন তারা।

যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক বলছেন, উপাচার্য প্যানেল যেন করতে না হয়, সে জন্য ২৬ অক্টোবর বিশেষ সমাবর্তনের তারিখ দেওয়া হয়। কারণ এর এক সপ্তাহ পর উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হবে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দলের যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নীল দলের ভেতরে প্যানেল নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়নি। তবে এতটুকু হয়েছে যে, নীল দলের আহ্বায়কসহ আমরা তিন জন উপাচার্যের কাছে গিয়েছিলাম। স্যারের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, তিনি প্যানেলের বিষয়ে কি ভাবছেন।’

আগামী ২ নভেম্বর বর্তমান উপাচার্যের মেয়াদ শেষ। সময় আছে ২১ দিন। সাধারণত কমপক্ষে এক মাস আগে সিনেট বৈঠক ডাকার রেওয়াজ রয়েছে। এছাড়া আগামী ২৬ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। সে সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ধরনের আনুষ্ঠানিকতা থাকবে। এর আগে ভিসি প্যানেল সম্ভব নয়।

উপাচার্য ভিসি প্যানেল কল করতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘উনি কল না করলে আমরা (নীল দল) কিছু করতে পারি না। উনি তখন বলেছিল, উনি এসব (ভিসি প্যানেল) বিষয়ে পরে আলাপ করবেন। হায়ার অথরিটির সঙ্গে আলাপ করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করবেন বলে ইঙ্গিত দেন। যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্যানেল কল করেন, তখনই কেবল নীল দল কাজ করতে পারেন। তার বাইরে নয়।’  

উপাচার্য প্যানেল না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি একজন সিনেট সদস্য হিসেবে আমি বলব উপাচার্য প্যানেলের জন্য যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সে ধরনের পদক্ষেপ নেই। এখনো নেওয়া হয়নি।’ 

ঢাবির বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান

কি ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উপাচার্য মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে একটা প্যানেল করতে হয়। এর জন্য মিটিং কল করতে হয়। ১০৫ জন সিনেট মেম্বারদের একটা সভা হতে হয়। অধিবেশন হতে হয়। ইটস লাইক পার্লামেন্ট। সেখানে উপাচার্য প্যানেলের নাম প্রস্তাব হয়। প্যানেলের জন্য ভোটাভুটির প্রসেস থাকে। আর এ ধরনের প্রসেস শেষ করতে এক মাস তো লাগেই। তারও বেশি লাগে। একটি প্যানেল হলেও যে তিন জনের নাম আসে, সেটা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতে হয়।’ 

সেটা নির্দিষ্ট সময়ের আগে প্রেরণ করতে হয় জানিয়ে তিনি বলেন, সে ধরনের সময় আর নেই। বর্তমান উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হবে নভেম্বরের ২ তারিখ। আর মাত্র ২১ দিন আছে। ২১ দিনের মধ্যে করতে হলে সেটা একটু ডিফিকাল্ট হয়ে যায়। উপাচার্য প্যানেলের জন্য কোনো ধরনের এনগেজমেন্ট শুরু হয়নি।’

আপনারা কি প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এজ এ ইনিস্টিটিউশন, ভাইস চ্যান্সেলর অথরিটি। ভাইস চ্যান্সেলর ২ তারিখ মেয়াদ শেষ হলে, সরকার কিছু করতে পারে। সরকার যদি মনে করে যিনি আছেন তাকে দায়িত্ব দেবে অথবা নতুন কাউকে দেবে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে। কোনো ধরনের একটা আদেশ আসতে পারে। সেই আদেশ তো আমরা জানব না।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ-১৯৭৩ অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের ধারা ১১(১) ও ১১(২) অনুসরণ করে দু’ভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১১(১) অনুসারে সিনেটে তিনজনের একটি উপাচার্য প্যানেলে নির্বাচন করা হয় এবং সেই প্যানেল থেকে যে কোনো একজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি চার বছরের জন্য উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দান করেন।

সামনে  বিশেষ সমাবর্তন, উপাচার্য এখন দেশের বাইরে। অনেকে বলছেন, প্যানেল আর হবে না। এ বিষয়ে তিনি বলেন,  এটাই ক্লিয়ারলি ইন্ডিকেশন যে উপাচার্য প্যানেল হচ্ছে না। আপাততদৃষ্টিতে তাই মনে হয়। 

এ বিষয়ে বিএনপি-জামায়াতপন্থী সাদা দলের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘ভিসি প্যানেল নিয়ে আমাদের কোনো আগ্রহ নেই। যারা ক্ষমতাসীন, তারা এটা তাদের মতো করে করবে।’ 

উপাচার্য হওয়ার দৌড়ে পুরোনো তিন মুখ

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এবার উপাচার্য হওয়ার আলোচনায় রয়েছেন পুরোনো তিন মুখ। তারা হলেন- বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এবং দুই প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ও অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।

আরো পড়ুন: ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে ঢাবিতে সমাবেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ-১৯৭৩ অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের ধারা ১১(১) ও ১১(২) অনুসরণ করে দু’ভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১১(১) অনুসারে সিনেটে তিনজনের একটি উপাচার্য প্যানেলে নির্বাচন করা হয় এবং সেই প্যানেল থেকে যে কোনো একজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি চার বছরের জন্য উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দান করেন।

আর ১১(২) ধারা অনুযায়ী, কোনো অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে যেমন অসুস্থতা, ছুটি, অপসারণ বা অন্য কোনো কারণে উপাচার্যের পদ শূন্য হলে একজনকে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করা উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের মোবাইল ফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence