ঢাবি সাংবাদিক সমিতির ইফতারে সব ছাত্র সংগঠনের অংশগ্রহণ

  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) একই ছাদের নিচে শিক্ষক-সাংবাদিক, ছাত্রলীগ-ছাত্রদল, অধিকার- প্রগতিশীল ছাত্রনেতাদের অংশগ্রহণে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) ঢাবির শিক্ষক ছাত্র মিলনায়তনের (টিএসসি) ক্যাফেটেরিয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা) আয়োজিত ‘বৈশ্বিক পরিবর্তন ও উচ্চশিক্ষার ধারা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে সবাই এক ছাদের নিচে সমবেত হয়ে ইফতার গ্রহণ করেন। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মামুন তূষারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম রুবেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মুহাম্মদ সামাদ, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক ড. জিনাত হুদা, ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাকসুদুর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান, সাদা দলের আহবায়ক অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ । ছবি: দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস

ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির  সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কাজী রওনকুল হাসান শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি খোরশেদ আলম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব, ঢাবি সভাপতি আসিফ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক আহনাফ সাঈদ খান, ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সভাপতি অতুলন দাস আলোক, সাধারণ সম্পাদক অদিতি আদৃতা সৃষ্টি, ঢাবি আহবায়ক জাবির আহমেদ জুবলেকে, সাধারণ সম্পাদক সামি আবদুল্লাহ্, গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ।  ছবি: দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস

সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্যে শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. এম তারিক আহসান বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সম্ভাবনার জায়গা হল এদেশের বিপুল কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী। এই জনমিতিক সুফল পেতে হলে অনতিবিলম্বে তাদেরকে উপযুক্ত শিক্ষার মাধ্যমে যুগের চাহিদা পূরণে সক্ষম অভিযোজ দক্ষতার উন্নয়ন ঘটানো প্রয়োজন, তা নাহলে সামনের দেড় দশক পরেই সিনিয়র সিটিজেনের সংখ্যা বাড়তে থাকবে। মজার বিষয় হল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে উর্ধ্বমুখী রাখার ক্ষেত্রে অদক্ষ ও স্বল্পদক্ষতা সম্পন্ন প্রবাসী রেমিটেন্স যোদ্ধা, তৈরি পোশাক কারখানায় বিপুল স্বল্পশিক্ষিত নারীকর্মীদের অংশগ্রহণ এবং বাংলাদেশের পরিশ্রমী কৃষকসমাজের কৃষি ও মৎস্য ক্ষেত্রে উৎপাদন সবচেয়ে জোরালো ভূমিকা রাখছে। এই উন্নয়ন যোদ্ধাদের অধিকাংশই ন্যূনতম মৌলিক শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ পাননি অথবা পেলেও চর্চার অভাবে তা টেকসই হয়নি।

বামপন্থী ছাত্রসংগঠন ও ছাত্র অধিকার পরিষদের  নেতৃবৃন্দ। ছবি: দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস

তিনি আরও বরেন, উন্নত দেশগুলোর মোট জনসংখ্যার শতকরা ৬০-৮০ ভাগ মানুষ কারিগরি শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে তাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। অথচ গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশের মোট শিক্ষার্থীর মাত্র শতকরা ১৫ ভাগ কারিগরি বা দক্ষতাভিত্তিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে ভর্তি হয়। অদক্ষ বা স্বল্পদক্ষতা সম্পন্ন জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ যে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে, তার দশগুণ অধিক আয় করা সম্ভব হতো যদি এই জনশক্তিকে দক্ষ করে তোলা যেতো। কাজেই বিগত কয়েক দশকে বাংলাদেশ যে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় রোল মডেল হয়েছে, তাতে শিক্ষার অবদান বেশি নাকি সরকারের সুচিন্তিত নেতৃত্বের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার ফলে বিদ্যমান জনশক্তি ও সীমিত সম্পদের সুনিপুণ ব্যাবহারের অবদান বেশি তা নিবিড়ভাবে ভেবে দেখা খুব জরুরি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, সাংবাদিক সমিতিকে ধন্যবাদ প্রতি বছর এমন সুন্দর আয়োজন করার জন্য যেখানে সকল ছাত্র সংগঠন একত্রিত হয়। এর ফলে পারস্পরিক সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টির পাশাপাশি রাজনৈতিক সহাবস্থানের সৃষ্টির সুযোগ তৈরি করে। এমন পরিবেশ খুব জরুরি যে ক্যাম্পাসে সকল ছাত্র সংগঠন একত্রে কাজ করবে। সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা ও সংস্কৃতিক চর্চায় বেড়ে উঠবে শিক্ষার্থীরা। ফলে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি সুন্দর রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক পরিবেশে বড় হবে, নিজেদের মানসিক বিকাশ ঘটাতে পারবে। শিক্ষার্থীরা রাজনীতি করতে রাজনৈতিক মনস্ক হবে, রাজনৈতিক চিন্তা করবে। এসময় তিনি সবাইকে ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করার আহবান ব্যক্ত করেন।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) সভাপতি মামুন তূষার বলেন, আজকে বিশ্ব জ্ঞান বিজ্ঞানে এগিয়ে যাচ্ছে। যার পেছনে মূখ্য ভূমিকা হিসেবে কাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ। তারই ধারাবাহিকতায় ঢাবিও সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। সাংবাদিক সমিতি বরাবরের মতোই শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক প্রয়োজনে কাজ করে যাচ্ছে। ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠণের সাথে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমন্বয় করতেও সাংবাদিক সমিতি অগ্রগামী ভূমিকা পালন করছে। এসময় তিন সকল শিক্ষক, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ইফতার মাহফিলকে প্রাণবন্ত করার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence