আইসিইউতে থাকা রাবির সেই শিক্ষার্থীর বুকে শতাধিক গুলির ‘পিলেট’

আইসিইউতে চিকিৎসারত রাবি শিক্ষার্থী
আইসিইউতে চিকিৎসারত রাবি শিক্ষার্থী  © টিডিসি ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত এক শিক্ষার্থীর শরীরে শতাধিক গুলির ‘পিলেট’ পাওয়া গেছে। বর্তমানে ওই শিক্ষার্থী হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন আছেন।

ওই শিক্ষার্থীর নাম মশিউর রহমান ওরফে মিহাদ (২৩)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক ছাত্র।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পিলেট ঢুকে তাঁর পাচকতন্ত্র ছিদ্র হয়ে গেছে। তাঁর এক্স-রে ফিল্মে ১০৭টির বেশি পিলেট পাওয়া গেছে। গত রোববার চার ঘণ্টা ধরে তার পরিপাকতন্ত্রে অস্ত্রোপচার করে নাড়ি জোড়া লাগানো হয়। বর্তমানে তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এর আগে, গত শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটে সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে আহত হন ওই শিক্ষার্থী। 

মশিউরের সহপাঠীরা জানান, ঘটনার দিন সবাই বিনোদপুর গেটের দিকে যাচ্ছিলেন। সেখানে কী হয়েছে, দেখার জন্য তাঁরাও গিয়েছিলেন। রাত ১০টার পর পুলিশের গুলিতে মশিউর গুরুতর আহত হন। তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। শুরুতে তাঁর ক্ষতস্থানের রক্ত বন্ধ হচ্ছিল না। পরদিন বিকেল চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়।

এ ছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় গতকাল সোমবার চার শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। চোখের ‘ভিট্রিয়ল রেটিনাল ইনজুরি’র কারণে তিনজনকে ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে এবং মাথায় গুলি লাগার কারণে আরেকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে পাঠানো শিক্ষার্থীরা হলেন মার্কেটিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের আলিমুল ইসলাম, আইন বিভাগের শেষ বর্ষের মো. আল-আমিন ইসলাম ও ফারসি বিভাগের শেষ বর্ষের মিসবাহুল। আর মাথায় গুলির কারণে আইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী স্মারক মাহমুদকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়।

শিক্ষার্থীদের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর বলেন, চোখের সমস্যায় যাঁদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে, তাঁদের চোখের ভেতরে জমাট রক্ত ছিল। সেগুলো পরিষ্কার করা হয়েছে। তাঁদের পরবর্তী চিকিৎসার জন্য তিনজন চিকিৎসকের সমন্বয়ে একটি বোর্ড করা হয়েছে। আর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছাত্রকে আজ প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাঁর চিকিৎসার ব্যাপারে কাল পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, ছাত্রদের চিকিৎসা ব্যয়ের পুরোটাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করছে।


সর্বশেষ সংবাদ