মন্ত্রণালয় বলছে তদন্ত করতে আর ইউজিসি দিচ্ছে পুরস্কার!

ড. ফেরদৌস জামান ও ইউজিসি লোগো
ড. ফেরদৌস জামান ও ইউজিসি লোগো  © ফাইল ফটো

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত বেশকিছু অভিযোগ আমলে নিয়ে এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে মন্ত্রণালয়ের চিঠি আমলে না নিয়ে উল্টো ওই কর্মকর্তাকে কমিশনের সচিব পদে স্থায়ীভাবে নিয়োগের সুপারিশ করেছে কমিশনের একটি সিলেকশন বোর্ড।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি সানোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি ড. ফেরদৌস জামানের বিরুদ্ধে তিন পৃষ্ঠার একটি অভিযোগপত্র শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর দপ্তরে জমা দেন। সেখানে ইউজিসি সচিবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলে ধরা হয়। একই অভিযোগ ইউজিসি চেয়ারম্যান বরাবর উত্থাপন করা হলেও তিনি সেটি আমলে নেননি। যদিও মন্ত্রণালয় অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে এ বিষয়ে তদন্ত করতে গত বুধবার ইউজিসির চেয়ারম্যানকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।

বেসরকারি মাধ্যমিক-১ শাখার উপসচিব ড. মো. ফরহাদ হোসেন স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামান এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগপত্রের ছায়ালিপি প্রেরণ করা হলো। অভিযোগসমূহ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক বিভাগকে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক সম্মেলনে লাল তালিকাভুক্ত ড্যাফোডিলের প্রচার

অনুসন্ধানে জানা যায়, মন্ত্রণালয় যে কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশনা দিয়েছে, তাকেই সচিব পদে স্থায়ীভাবে নিয়োগ দিতে সুপারিশ করেছে কমিশনের একটি সিলেকশন বোর্ডে। যদিও ওই সিলেকশন বোর্ডে ইউজিসির চেয়ারম্যান ও পূর্ণ সদস্যরাসহ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা ছিল। নিয়োগের সুপারিশ আগামী রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ইউজিসির পূর্ণ কমিশন সভায় উত্থাপন করার কথা রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসি সদস্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ড. ফেরদৌস জামানকে স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। এর বাইরে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এদিকে অভিযোগকারী সানোয়ার হোসেনের দাবি, অতীতে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ফেরদৌস জামানের বিরুদ্ধে একাধিক তদন্ত পরিচালনা হয়। সেসব তদন্তে অনেক অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কমিশনের তাকে শাস্তির আওতায়ও আনা হয়।

আরও পড়ুন: কার্যক্রম চললেও লাল তারকা চিহ্ন নেই ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে

সানোয়ার হোসেন ড. ফেরদৌস জামানের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক কিছু অভিযোগও উত্থাপন করেছেন। এর একটি খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাজেট সম্মানি গ্রহণ বিষয়ে। এ বিষয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, কমিশনের সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও পরিচালক এর মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা সত্ত্বেও খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাজেট সম্মানি বাবদ দুই বার মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ গ্রহণ করেছে। যার আইনত কোনো সুযোগ নেই। কেননা অর্থ মন্ত্রনালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ৫ম গ্রেডের উর্দ্ধে কোন কর্মকর্তার এ ধরনের বাজেট সম্মানি নেয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া কমিশনের দায়িত্বে থেকে বেশ কয়েক জন নিকট আত্মীয়কে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে এ কর্মকর্তা বিরুদ্ধে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে ইউজিসি চেয়ারম্যান  প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহর ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে খুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।


সর্বশেষ সংবাদ