অডিট আপত্তি শত কোটি টাকার বেশি

অবৈধ পদোন্নতির বৈধতা দিতে প্রবিধি সংশোধনের উদ্যোগ ইউজিসির, সিজিএর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক

  • অডিট আপত্তি নিষ্পত্তি চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ
  • বিব্রত শিক্ষা মন্ত্রণালয়

ইউজিসি
ইউজিসি  © ফাইল ছবি

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবৈধ পদোন্নতি, নিয়মবহির্ভূতভাবে ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তর, যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও বেতন-ভাতা প্রদান করায় সরকারের শত কোটি টাকার বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এসব অনিয়ম নিয়ে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর আপত্তি তুলেছে। তবে এই আপত্তি নিষ্পত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির পক্ষ থেকে অডিট অধিদপ্তরের ওপর চাপ প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়; বিষয়টি সমাধানে হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকও হয়েছে। কাল রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) ইউজিসির পূর্ণ কমিশনের সভায় অবৈধ পদোন্নতির বৈধতা দিতে নিয়োগ প্রবিধি সংশোধনের প্রস্তাব করা হবে বলে জানা গেছে। 

শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে ইউজিসির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বিধি লঙ্ঘন করে একাধিকবার পদোন্নতির তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। যোগ্যতা না থাকলেও তাদের অতিরিক্ত পরিচালকসহ বিভিন্ন উচ্চপদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে এবং সে অনুযায়ী বেতন-ভাতা উত্তোলন করা হয়েছে। এতে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের বিপুল ক্ষতি হয়েছে। এসব অনিয়ম ঢাকতেই মূলত প্রবিধি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে তদারক সংস্থা ইউজিসি। যদিও নেপথ্যে অবৈধ পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তারা চাপ প্রয়োগ করছেন খোঁজে জানা গেছে।

শুধু তাই নয়, এসব অনিয়ম ঢাকতে ইউজিসির পক্ষ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তদবিরও করা হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে অনেকটা বাধ্য হয়ে বিষয়গুলো সুরাহায় শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরে সুপারিশ পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট অন্তত তিন কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ইউজিসির বারংবার সুপারিশে বিব্রত মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। শুধু তাই নয়, বিষয়টি নিয়ে সচিব ও অতিরিক্ত সচিবদের গ্রুপেও নেতিবাচক আলোচনা হয়েছে। 

গত নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে হিসাব মহানিয়ন্ত্রক (সিজিএ) এস এম রেজভীর সঙ্গে বৈঠক করতে যান ইউজিসি চেয়ারম্যান। সঙ্গে ছিলেন সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আইয়ূব ইসলাম। বৈঠকে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কামরুল আলমকে ডেকে নেওয়া হয়েছিল। বৈঠকে ইউজিসিতে পরিচালিত অডিট রিপোর্টের ক্ষেত্রে নমনীয়তা দেখাতে মহাপরিচালককে অনুরোধ করেন ইউজিসি চেয়ারম্যান। তবে তিনি নিয়মের বাইরে গিয়ে কোনো কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কর্মকর্তাদের চাপে গত নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে হিসাব মহানিয়ন্ত্রক (সিজিএ) এস এম রেজভীর সঙ্গে বৈঠক করতে যান ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ। সঙ্গে ছিলেন ইউজিসির অডিট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আইয়ূব ইসলাম। বৈঠকে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কামরুল আলমকে ডেকে নেওয়া হয়েছিল।

সিজিএ দপ্তরের একটি সূত্র জানায়, বৈঠকে ইউজিসি চেয়ারম্যান সম্প্রতি ইউজিসিতে পরিচালিত অডিট রিপোর্টের ক্ষেত্রে নমনীয়তা দেখাতে মহাপরিচালক কামরুল আলমকে অনুরোধ করেন। তবে তিনি নিয়মের বাইরে গিয়ে কোনো কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

পরবর্তীতে অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির বিকল্প হিসেবে ইউজিসির প্রবিধি সংশোধনের পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই পরামর্শের ভিত্তিতেই ইউজিসি তাদের বিদ্যমান প্রবিধি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। ইউজিসি তাদের পরবর্তী ফুল কমিশন সভায় (২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয়) প্রবিধি সংশোধনের প্রস্তাব উত্থাপন করে অবৈধ পদোন্নতিকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করবে। এই প্রবিধি আইন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখাকেও দেখানো হয়েছে। যদিও প্রবিধি সংশোধনের নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয়কে জানানোর কথা। তবে এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে ইউজিসি।

বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে ইউজিসির অন্তত ৫ শীর্ষ ও দ্বিতীয় সারির কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের কেউই কথা বলতে রাজি হননি। তবে নাম নাম প্রকাশ না করা শর্তে দুই কর্মকর্তা জানান, ‘প্রবিধি সংশোধনে ইউজিসি কর্মকর্তাদের আপত্তি নেই, তবে সেটি যদি হয় এমন অনৈতিক বিষয়কে বৈধতা দানের। তবে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। তাছাড়া ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫-এ প্রবিধি সংশোধন হলেও সেটি দিয়ে কীভাবে আগের অবৈধ পদোন্নতিকে বৈধতা দেবে ইউজিসি, সেটি নিয়ে কর্মকর্তারা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন।’

বৈঠকের বিষয়ে জানতে হিসাব মহানিয়ন্ত্রক এস এম রেজভীর দপ্তরে গেলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তিনি তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তার মাধ্যমে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

জানতে চাইলে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কামরুল আলম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘ইউজিসির অডিট আপত্তি নিয়ে কাজ চলছে। শিগগিরই এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইউজিসিতে পাঠানো হবে। এর বেশি এ বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।’

‘প্রবিধি সংশোধনে ইউজিসি কর্মকর্তাদের আপত্তি নেই, তবে সেটি যদি হয় এমন অনৈতিক বিষয়কে বৈধতা দানের। তবে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। তাছাড়া ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫-এ প্রবিধি সংশোধন হলেও সেটি দিয়ে কীভাবে আগের অবৈধ পদোন্নতিকে বৈধতা দেবে ইউজিসি, সেটি নিয়ে কর্মকর্তারা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন।’

অডিট আপত্তি নিষ্পত্তি চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ
শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের আপত্তি নিষ্পত্তির জন্য গত ২৯ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায় ইউজিসি। ওই চিঠির প্রেক্ষিতে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরকে আপত্তি নিষ্পত্তির সুপারিশ করে গত ৫ নভেম্বর চিঠি পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিরীক্ষা বিভাগ।

সুপারিশপত্রে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের ২০২২-২০২৩ হতে ২০২৩-২০২৪ আর্থিক সনের শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর কর্তৃক হিসাব নিরীক্ষায় উত্থাপিত ৬টি অডিট আপত্তির প্রাপ্ত ব্রডশিট জবাবের বিপরীতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিম্নোক্ত মতামত পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে প্রেরণ করা হলো।’ ৬টি অডিট আপত্তির ক্ষেত্রেই ‘জবাব ও প্রমাণকের আলোকে আপত্তিটি নিষ্পত্তির সুপারিশ’ করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের পাঠানো সুপারিশপত্র ঘেটে দেখা গেছে, ইউজিসি কর্মকর্তা জেসমিন পারভিন, সুরাইয়া ফারহানা, মো. কামরুজ্জামান, মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মো. মাকসুদুর রহমান ভূইয়া, মো. শাহীন সিরাজ, মো. নাজমুল ইসলাম, মো. জিয়াউর রহমান, শীবানন্দ শীল, মো. মোস্তাফজার রহমান, সুলতান মাহমুদ, ড. মো. মহিবুল আহসান, মুহাম্মদ মাসুদ হোসেনসহ আরও অনেকের অবৈধভাবে নেওয়া বেতন-ভাতা এবং পদোন্নতির বিষয়টি সমাধানে সুপারিশ করা হয়েছে। এই কর্মকর্তারা বিধি লঙ্ঘন করে একাধিকবার পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত পরিচালক হয়েছেন বলে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের রিপোর্টে বলা হয়েছে।

এমন সুপারিশের কারণে চাপ অনুভব করছে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর। একই সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এমন সুপারিশ নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে। অডিট অধিদপ্তর বলছে, শিক্ষা অডিট তাদের নিজস্ব আইনের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। মন্ত্রণালয় অধিদপ্তরকে এমন সুপারিশ করতে পারে না। এটি নিয়মবহির্ভূত। অবৈধ একটি বিষয়ের বৈধতা দিতে সুপারিশ কেন করা হয়েছে সেটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে অধিদপ্তর।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে অডিট অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিরীক্ষা ও আইন শাখা থেকে এমন সুপারিশের পর বিষয়টি মৌখিকভাবে সচিব রেহানা পারভীনকে জানানো হয়েছে। তিনি এ ধরনের সুপারিশের ঘটনায় বিব্রত বোধ করেছেন। একইসঙ্গে বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন।

এ ধরনের সুপারিশ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব (নিরীক্ষা ও আইন) জহিরুল ইসলাম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয় শিক্ষার মাদার প্রতিষ্ঠান হওয়ায় আমরা সুপারিশ করেছি। আমাদের সুপারিশ শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরকে রাখতেই হবে বিষয়টি এমন না। সবকিছু যাচাই করে যদি তাদের মনে তাহলে তারা সুপারিশ রাখতে পারে, আবার নাও রাখতে পারে। বিষয়টি একান্তই অডিট অধিদপ্তরের।’

মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের কারণে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর চাপ অনুভব করছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘চাপ অনুভবের কিছু নেই। আমরা এর আগেও এমন সুপারিশ করেছি। তারা অনেক সুপারিশ রাখেনি। ফলে এখানে চাপের কিছু দেখছি না।’

iujisi

ইউজিসির যেসব বিষয়ে অডিট আপত্তি অধিদপ্তরের
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে (ইউজিসি) ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কোটি কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম ও সরকারি বিধি লঙ্ঘনের চিত্র উঠে এসেছে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষায়। যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ দিয়ে বেতন-ভাতা পরিশোধ, প্রাপ্যতা না থাকা সত্ত্বেও সম্মানি প্রদান, সরকারি ক্রয় বিধিমালা লঙ্ঘন করে পণ্য ও সেবা ক্রয়, জিওবি অর্থ সাসপেন্স হিসাবে স্থানান্তর, অব্যয়িত সরকারি অর্থ কোষাগারে জমা না দেওয়া এবং প্রেষণে থাকা কর্মকর্তাকে নির্ধারিত গ্রেডের বাইরে বেতন দেওয়ার মতো একাধিক গুরুতর অনিয়ম ধরা পড়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দেওয়া জবাব ও প্রমাণের ভিত্তিতে এসব অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির সুপারিশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।

অডিট প্রতিবেদনে বলা হয়, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও অনিয়মিতভাবে নিয়োগ প্রদান করে বেতন-ভাতা পরিশোধ করায় ইউজিসির আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৭৯ লাখ ৪৯ হাজার ১৪৫ টাকা। এছাড়া প্রাপ্যতা না থাকা সত্ত্বেও শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সম্মানি প্রদান করায় আরও ৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে নিরীক্ষায় উঠে আসে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারি সহায়তার (জিওবি) অর্থ নিয়মিত খাতে ব্যয় না করে একাধিক দফায় ইউজিসি সাসপেন্স ফান্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে। জনতা ব্যাংক পিএলসি, ইউজিসি শাখার বিভিন্ন হিসাবে মোট ৯৯ কোটি ৫ লাখ ২৯ হাজার ৩৭৫ টাকা স্থানান্তরের তথ্য পাওয়া যায়, যা সরকারি অর্থ ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

এছাড়া উন্মুক্ত দরপত্র (ওটিএম) ছাড়াই কোটেশন ও নগদে বিভিন্ন মালামাল ও সরঞ্জামাদি ক্রয় করে ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়েছে। পণ্য ও সেবা, যন্ত্রপাতি, মেরামত ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এই ব্যয় সরকারি ক্রয় বিধিমালা লঙ্ঘন করে করা হয়েছে বলে অডিট প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

সরকারি ক্রয় বিধিমালা (পিপিআর) ২০০৮ অনুযায়ী নির্ধারিত কোটেশন ও ডিপিএম পদ্ধতির আর্থিক সীমা অতিক্রম করেও ব্যয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোটেশন পদ্ধতিতে সীমা অতিক্রম করে ব্যয় করা হয়েছে ২ কোটি ৫ হাজার ৭৮১ টাকা এবং ডিপিএম পদ্ধতিতে একটি ক্রয়ে অতিরিক্ত ব্যয়ের পরিমাণ ৭৫ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬০ টাকা।

এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে সরকারি অনুদানের (জিওবি) অব্যয়িত অর্থ ৩০ জুনের মধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ক্ষেত্রে ইউজিসি সাসপেন্স ফান্ডে অব্যয়িত অর্থের পরিমাণ ৮৮ লাখ টাকা বলে নিরীক্ষায় উল্লেখ করা হয়।

অডিটে আরও দেখা যায়, প্রেষণ নিয়োগ অর্গানোগ্রামে ৫ম গ্রেড নির্দেশনা থাকলেও একজন কর্মকর্তাকে ১ম গ্রেডে বেতন-ভাতা প্রদান করা হয়েছে। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৫ লাখ ৬ হাজার ৬২৮ টাকা। পাশাপাশি প্রাপ্যতা না থাকা সত্ত্বেও একাধিক কর্মকর্তাকে গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদান করায় ইউজিসির মোট আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৩ কোটি ৮৬ লাখ ৬৯ হাজার ১৫৮ টাকা।

সার্বিক বিষয়ে বক্তব্য জানতে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে তার অফিসিয়াল ইমেইলে বক্তব্য জানতে চেয়ে মেইল করা হলেও এ রিপোর্ট প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত তথা ৪ দিনেও তার উত্তর পাওয়া যায়নি।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!