শারীরিক দুর্বলতা দূর করতে খাবেন যেসব খাবার

ক্লান্তি দূর করতে খাবেন যেসব খাবার
ক্লান্তি দূর করতে খাবেন যেসব খাবার  © সংগৃহীত

নানা কারণে শরীরে দেখা দিতে পারে অবসাদ-ক্লান্তি। ক্লান্তি কাজে মনোযোগের ঘাটতি ঘটায় এবং কাজের গতি কমিয়ে দেয়। এই ক্লান্তি ভাব নিয়মিত হতে থাকলে তা শরীরের জন্য খুবই নেতিবাচক একটা দিক। এতে আপনার দেহ-মন অবসাদে চলে যেতে পারে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে খাবার। তবে বেছে নিতে হবে এমন কিছু খাবার, যা শরীরে সর্বাধিক শক্তি সরবরাহ করতে পারে। কিছু খাবার রয়েছে যা নিয়মিত খেলে ক্লান্তিভাব দূর করতে জ্বালানির মতো ভূমিকা রাখবে। এই জ্বালানিই শরীরের কর্মদক্ষতার ওপর প্রভাব ফেলে।

শরীরের দুর্বলতা কাটাতে ভিটামিন-সি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন-সি এর অভাব পূরণে বেশি করে টকজাতীয় ফল যেমন,কমলা, লেবু, আঙুর খেতে হবে। এ ছাড়া কিউই, লেটুসপাতা, পালংশাক ও মরিচ বেশি খেতে পারেন। 

কাজুবাদাম: কাঠ-বাদামের মতো কাজু বাদামও দেহের জন্য উপকারী। ওজনও বাড়ায় না। মজাদার কাজু বাদাম উচ্চ প্রোটিন, আঁশ ও স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ। এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ উপাদান যা শরীরকে সুস্থ রাখতে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। ২/৩টি কাজুবাদাম, কয়েকটি কিশমিশ ও একটি ডুমুর সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে পানি থেকে কাজুবাদাম, কিশমিশ ও ডুমুর আলাদা করে নিন এবং পানিটি পান করুন। সরিয়ে রাখা জিনিস গুলো পেস্ট করে খেয়ে ফেলুন। আপনার সঙ্গে সবসময় কিছু কাজুবাদাম রাখুন। যখনই কোনো কারণে দুর্বল লাগবে তখনই কয়েকটি কাজুবাদাম খেয়ে নিন। কাজুবাদামে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই , যা আমাদের শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করে এবং শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়ার লক্ষণগুলোর সঙ্গে লড়াই করে আমাদের সুস্থ রাখে।

কলা: প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম পাওয়া যায় কলায়। এই পটাশিয়াম শর্করাকে ভেঙে এনার্জির যোগান ঠিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। পাশাপাশি কলায় থাকা ভিটামিন বি, সি, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার এবং কার্বোহাইড্রেট দেহে পুষ্টির ঘাটতি হতে দেয় না। প্রতিদিন সকালে একটি কলা খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং ক্লান্তির সময়েও খেতে পারেন। উপকার সঙ্গে সঙ্গেই পাবেন।

ডার্ক চকোলেট: চকোলেট দ্রুত শক্তি বাড়ায় এবং মেজাজ ভালো করে। এর মধ্যে রয়েছে থিব্রোমিন ও ট্রিপটোফেন। মস্তিষ্কে ভালো অনুভূতির হরমোন তৈরির মাধ্যমে এটি মনকে শিথিল করতে সাহায্য করে।

বিশুদ্ধ পানি: ক্লান্ত লাগলে বিশুদ্ধ পানি পান করুন। পানি শরীরকে কর্মক্ষম রাখে। পানি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে খাদ্য উপাদান পরিবহন করে। শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে ভারসাম্যহীনতা ও দুর্বলতা দেখা দেয়। তাই সুস্থতার জন্য পানি একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান।

আরও পড়ুন: খাওয়ার পর যে ভুলগুলো করলে বিপদ বাড়তে পারে

দই: দই-এ প্রচুর মাত্রায় প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা এনার্জির ঘাটতি দূর করার সবচেয়ে জরুরি উপাদান। তাই প্রতিদিন ১ কাপ দই খান। ক্লান্তি আসবে না শরীরে।

মধু: মধুতে গ্লুকোজ ও ফ্রুকটোজ আছে যা শরীরে শক্তি যোগায় এবং দ্রুত ক্লান্তি দূর করে । এর অন্যান্য উপাদানগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

ডিম: ডিমের মধ্যে রয়েছে প্রোটিন এবং প্রয়োজনীয় এমাইনো এসিড। এ ছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন-ডি। এটি শক্তি বাড়াতে সহায়ক। ক্লান্তি দূর করতে ডিম খেতে পারেন।

চা বা কফি: শরীরকে চাঙা করতে ক্যাফেইনসমৃদ্ধ পানীয় (যেমন: চা বা কফি) বিশেষ সহায়ক। এটি হৃৎযন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়, শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বাড়ায় এবং শরীরকে উদ্দীপ্ত রাখে। তবে চা বা কফি বেশি পান করলে রাতে নিদ্রাহীনতা দেখা দিতে পারে।

ওটমিল: ওটমিলে কার্বোহাইড্রেট ছাড়াও প্রোটিন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং ভিটামিন বি ১-এর মতো উপাদান থাকে। যা শরীরের এনার্জির ঘাটতি হতে দেয় না। তাই সকালের নাস্তায় ওটমিলের সঙ্গে ফল মিশিয়ে খেয়ে নিন। এনার্জি পাবেন দিনভর।

অল্প পরিশ্রমেই যদি শরীর দুর্বল হয়ে যায় তবে বুঝতে হবে আপনার এনার্জির ঘাটতি রয়েছে। এনার্জির অভাবে শরীর ঘনঘন ক্লান্ত হয়। এই ক্লান্তি কমিয়ে দিনভর কর্মক্ষম থাকতে চাইলে দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় রাখতে পারেন উপরোক্ত খাবারগুলো।


সর্বশেষ সংবাদ