এইচএসসির পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিযুদ্ধ: পথ কতটা কঠিন?

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা  © ফাইল ছবি

কোটা সংস্কার ও পরবর্তীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে এবার পুরো এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শেষ করা সম্ভব হয়নি। ১৩টি পত্রের মধ্যে সাতটির পরীক্ষা হয়েছিল। বাকি পরীক্ষাগুলো বাতিল করে সাবজেক্ট ম্যাপিং করে ফলাফল প্রকাশ করবে শিক্ষাবোর্ডগুলো। ফল প্রকাশও এক-দেড় মাসের মধ্যে হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সদ্য এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া শিক্ষার্থীরা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যুদ্ধে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা অনেক হওয়ায় চান্স পাওয়াও বেশ সহজ। তবে শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি আসন নিজের করে নেওয়া মোটেও সহজ নয়। এরমধ্যে বুয়েট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে।

ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে কাঙিক্ষত বিষয়ে ভর্তির জন্য ভালো প্রস্তুতির পাশাপাশি ভাগ্যেরও একটা ব্যাপার আছে। নিজের কথা দিয়েই শুরু করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগে যে খুব আহামরি প্রস্তুতি ছিল, তা নয়। প্রতিদিন নিয়ম করে কয়েক ঘণ্টা করে প্রস্তুতি নিয়েছি। কোচিংয়ের ক্লাসগুলো নিয়মিত করেছি। তবে কোচিংয়ের পরীক্ষায় শতাধিক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর মধ্যে আমার অবস্থান থাকতো ৫০ এরও পরে।

এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা অনেক হওয়ায় চান্স পাওয়াও বেশ সহজ। তবে শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি আসন নিজের করে নেওয়া মোটেও সহজ নয়। এরমধ্যে বুয়েট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে নিয়মে পরীক্ষা হতো, সে নিয়মে নেওয়া কোচিংয়ের ওই পরীক্ষায় এভাবে পিছিয়ে থাকা মানে চান্স না পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি- আমার মধ্যে এমন একটি ধারণা তৈরি হয়েছিল। তবে আমার সে বিশ্বাস বদলে দিয়েছিলেন কয়েকজন শিক্ষক আর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিত কয়েকজন বড় ভাই।

তারা আমাকে বলেছিলেন, ভর্তি পরীক্ষায় টিকে যাওয়ার জন্য ভালো প্রস্তুতি জরুরি। তবে তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তারা আমাকে বলেছিলেন, সেটি থাকলেই প্রস্তুতিতে কিছুটা ঘাটতি থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব। তা হলো, ‘আত্মবিশ্বাস’। এটিই আসলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে বড় ভূমিকা রেখেছিল আমার ক্ষেত্রে।

দেখা যায়, অনেকে কোচিং কিংবা মডেল টেস্ট পরীক্ষায় ভালো ফল করতে না পারলে আশা হারিয়ে ফেলেন। তারা ভাবেন, আমার আর চান্স পাওয়া হবে না। বাস্তবতা আসলে তা নয়। কোচিংয়ের এসব পরীক্ষায় সাধারণত একটু জটিল বা কঠিন টাইপের প্রশ্ন করা হয়। ফলে নম্বর তোলা কঠিন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কোচিং বা মডেল টেস্টের মতো নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন করা হয় সবদিক বিবেচনা করেই। ফলে অতটা জটিল হয় না, মানসম্মত প্রশ্ন করা হয়। সে হিসেবে প্রশ্ন থাকে বেশ সহজ, কিন্তু কৌশলী (ট্রিকি)। সে কারণে কোচিং বা মডেল টেস্টের প্রশ্নে হতাশ না হয়ে প্রস্তুতি ভালোভাবে চালিয়ে যাওয়াটাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।

আরো পড়ুন: এইচএসসির ফল কবে জানে না আন্তঃশিক্ষা বোর্ড

আরও একটি বিষয় হলো- পরীক্ষা শুরুর আগে কেন্দ্রে বসে অনেকে ঘাবড়ে যান। কি প্রশ্ন আসবে? কেমন পরীক্ষা নেবে তারা? আমি চান্স পাব তো? এমন নানা ধরনের প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খায় তাদের। পরীক্ষার আগে এ ধরনের চিন্তা বাদ দিতে হবে। আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে, যে প্রশ্নই আসুক, আমি পারব।

বিশ্ববিদ্যালয় তো একটি নয়। অনেকগুলো ভালো বিশ্ববিদ্যালয় এখন রয়েছে। একটিতে না হলে আরেকটিতে হবে। ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। এভাবে যদি মনটাকে পরীক্ষার আগে ফ্রেশ রাখা যায়, তাহলে সাফল্য ধরা দিতে বাধ্য। আমার ক্ষেত্রে এ কাজটিই হয়েছিল। পরীক্ষার দিন নিজের স্বাভাবিক থাকা আমার চান্স পেতে বড় ভূমিকা রেখেছিল। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে পরীক্ষাটা দিতে পেরেছিলাম।

প্রস্তুতি না থাকলেও দ্বিতীয়বারও ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে চান্স পেয়েছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে প্রথমবারে চান্স পাওয়া বিষয়েই শেষ পর্যন্ত পড়াশোনা শেষ করেছিলাম। এখানে বলে রাখা ভালো, আমাদের সময়ে দুইবার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিযুদ্ধ শুরু হবে আর এক-দু’মাস পরেই। এখন প্রতিটি দিন, প্রতিটি মিনিট গুরুত্বপূর্ণ। প্রস্তুতিটা এখন ভালোভাবে নিলে আর আত্মবিশ্বাস রাখলে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব। শুভ কামনা উচ্চশিক্ষার দুয়ারে কড়া নাড়া সবার জন্য।

লেখক: সাংবাদিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence