ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটে আসন ১৮৫১টি, প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়   © ফাইল ছবি

আগামী ১২ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা। এবার বিজ্ঞান ইউনিটে মোট আসন সংখ্যা ১ হাজার ৮৫১টি। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ১ হাজার ৭৭৫টি, মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ৫১টি এবং বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ২৫টি আসন বরাদ্দ রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক ও তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মো. শরিফুল ইসলামের দেয়া তথ্যমতে- ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে এ ইউনিটে। মোট এক হাজার ৮৫১টি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৫টি। অর্থাৎ প্রতিটি আসনের বিপরীতে লড়াই করবেন প্রায় ৬৯ জন। আজকের প্রতিবেদনে থাকছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি প্রস্তুতি সম্পর্কিত কিছু তথ্য।

নম্বর বণ্টন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক ইউনিট ভর্তি পরীক্ষা নৈর্ব্যক্তিক এবং লিখিত উভয় পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি পরীক্ষার মোট নম্বর হবে ১০০ তন্মধ্যে ৬০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক এবং ৪০ নম্বরের লিখিত অংশ থাকবে। নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা ৪৫ মিনিট এবং লিখিত পরীক্ষা ৪৫ মিনিটের হবে। যে সকল প্রার্থী উচ্চ মাধ্যমিক অথবা সমমানের পর্যায়ে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, গণিত ও জীববিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়ন করেছে তারা এ সকল বিষয়ে পরীক্ষা দিবে। তবে কোনো পরীক্ষার্থী ইচ্ছা করলে শুধুমাত্র উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ৪র্থ বিষয়ের পরিবর্তে বাংলা অথবা ইংরেজি যেকোনো একটি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে পারবে। এখানে উল্লেখ্য যে, পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়ন বিষয়ে পরীক্ষা দেয়া আবশ্যিক। A-Level পর্যায়ে অধ্যয়নকৃত পরীক্ষার্থী পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়নসহ অন্য (গণিত/ জীববিজ্ঞান/ বাংলা/ ইংরেজি বিষয়ের মধ্যে) যেকোনো  দুইটি বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে মোট চারটি বিষয় পূর্ণ করবে। প্রতিটি বিষয়েই ১৫ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক এবং ১০ নম্বরের লিখিত প্রশ্ন থাকবে।

ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর: ভর্তি পরীক্ষার নৈর্ব্যক্তিক অংশের পাস নম্বর ২৪। নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষায় ২৪ নম্বরে পেলে কেবল লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্রের মূল্যায়নের জন্য বিবেচিত হবে। লিখিত অংশের পরীক্ষায় পাস নম্বর ১২। তবে ১০০ নম্বরের মধ্যে নৈর্ব্যক্তিক এবং লিখিত পরীক্ষার মোট পাস নম্বর ৪০। যারা ৪০ এর কম নম্বর পাবে তাদের কে ভর্তির জন্য বিবেচনা করা হবে না । প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ করে কেটে নেয়া হবে।

আরও পড়ুন: পরীক্ষা দিতে চান বারবার ফেল করা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের প্রস্তুতি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতির সময় পাওয়া যায় বেশ কম। এইচএসসি পরীক্ষার পর মাত্র মাস তিনেক সময় হাতে থাকে, প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য। প্রস্তুতি তখনই সার্থক হবে যদি তা হয় পূর্ণাঙ্গ, নচেৎ তা ফলপ্রসূ হওয়ার সম্ভাবনা কেবল ক্ষীণতরই হতে থাকে।একারণে, প্রতিটি বিষয়ের জন্য আলাদা করে প্রস্তুতি নেওয়া খুবই জরুরি। কারণ, একেক বিষয়ের জন্য প্রস্তুতির প্যাটার্ন একেক রকমের হয়ে থাকে। এছাড়া প্রস্তুতির ক্ষেত্রে বিগত বছরগুলোতে আসা প্রশ্ন সলভ করাটা অত্যন্ত জরুরি। এর মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়। ঢাবিতে সাধারণত সরাসরি প্রশ্ন রিপিট হয় না হলেও প্রশ্নের ধরণ রিপিট হয়। 

পদার্থবিজ্ঞান: পদার্থবিজ্ঞানে গাণিতিক সমস্যার সাথে সাথে কিছু তাত্ত্বিক প্রশ্নও আসে। তবে গাণিতিক প্রশ্ন সংখ্যায় বেশি আসে বলে এই ভাগে গুরুত্ব দিতে হবে। গাণিতিক প্রশ্নের সমাধানের জন্য প্রতিটি সূত্র এমনভাবে পড়তে হবে, যাতে পরীক্ষার হলে আর চিন্তা করে বের করতে না হয়। কারণ সূত্র চিন্তা করে বের করার কোন সময় নাই। প্রশ্নের গাণিতিক সমস্যা ভালোভাবে পড়ে বুঝতে হবে যে, কি বের করতে বলা হয়েছে। তখন সেটা বের করার সম্ভাব্য সূত্রগুলোর সাথে প্রদত্ত উপাত্তের রাশিগুলো মিলিয়ে সেই সঠিক সূত্রটা লিখে ফেলতে হবে। এরপর সূত্রের মধ্যে কোন রাশি অজানা থাকলে, সেগুলোও একই নিয়মে বের করতে হবে। এছাড়া বইয়ের সকল লেখচিত্রের ব্যাখ্যা বুঝতে হবে। কারণ এই লেখচিত্র থেকে প্রায়ই প্রশ্ন আসে।

রসায়ন: রসায়নে গাণিতিক ও তাত্ত্বিক প্রশ্ন প্রায় সমানুপাতিক হারে আসে। গাণিতিক অংশে ভালো করার জন্য বিভিন্ন একক ও সংকেত ভালোভাবে আয়ত্তে আনতে হবে। কারণ একক কিংবা সংকেত থেকেও অনেক প্রশ্নের সম্ভাব্য উত্তর খুঁজে বের করা যায়। তাত্ত্বিক অংশের জন্য যোজনী, বিক্রিয়া, ভর, তুল্য সংখ্যা, সংকেতসহ সব অধ্যায় মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলো নাম সহ বুঝে পড়তে হবে। বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে প্রভাবক, তাপমাত্রার চাপের মানের দিকে খেয়াল রাখতে হবে, যাতে বুঝতে ভুল না হয়। কারণ এই অংশেই মান পরিবর্তন করে কনফিউশন তৈরি করা হয়।

উচ্চতর গণিত: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান ইউনিটে সাধারণত জটিল গাণিতিক প্রশ্ন করা হয় না। অধিকাংশ প্রশ্নই থাকে মৌলিক বিষয় থেকে। একারণে গণিতে ভালো করার জন্য নিয়মিত অনুশীলন ও সূত্র মনে রাখার কোন বিকল্প নেই। এছাড়া, গাণিতিক সমস্যা সমাধানের বিভিন্ন সংক্ষিপ্ত পদ্ধতি অনুশীলন করতে হবে।
জীববিজ্ঞান: জীববিজ্ঞানে প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র থেকে সাধারণত সমানসংখ্যক প্রশ্ন থাকে এবং প্রায় প্রতিটি অধ্যায় থেকে প্রশ্ন থাকে। জীববিজ্ঞানে ভালো নম্বর পেতে হলে বৈজ্ঞানিক নাম, বৈশিষ্ট্য ও শ্রেণিবিন্যাস বেশি বেশি পড়তে হবে।  জীববিজ্ঞানে সাধারণত প্রশ্ন রিপিট হতে দেখা যায় একারণে বিগত বছরের প্রশ্ন ভালোভাবে সমাধান করতে হবে।

বাংলা: প্রথম পত্রের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা বইয়ের কবিতার লাইন, কবি ও লেখক পরিচিতি এবং গল্প ও কবিতার উৎস, গল্পের উপজীব্য বিষয় ভালোভাবে পড়তে হবে। আর ব্যাকরণ অংশের জন্য পদ, সমাস, কারক, বানান বিষয়ে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। এক্ষেত্রে নবম-দশম শ্রেণির বোর্ড নির্ধারিত বাংলা বইটি বেশ সহায়ক।

ইংরেজি: সাধারণত গ্রামার থেকেই বেশি প্রশ্ন করা হয় ইংরেজিতে। গ্রামারে ভালো ধারণা থাকলে এ বিষয়ে ভালো নম্বর তোলা সহজ। এছাড়া শব্দভিত্তিক অর্থাৎ ভোকাবুলারি, সিনোনেইম, এন্টোনেইম থেকেও অনেক প্রশ্ন হয়। বিশেষ করে বোর্ড নির্ধারিত বইয়ের কঠিন কঠিন শব্দগুলো আয়ত্তে আনতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence