সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়া প্রতিদিন চলবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন

শিক্ষকদের সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি
শিক্ষকদের সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি  © ফাইল ছবি

সর্বজনীন পেনশন ‘প্রত্যয়’ স্কিম বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে রয়েছেন দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকরা। কর্মসূচি নিয়ে তারা বলছেন, কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকার ফলে নিয়মিত কোনো কর্মসূচি ছিল না, আজ শনিবারও নেই। বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামীকাল রোববার (৭ জুলাই) থেকে নিয়মিত কর্মসূচি চলবে। তবে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি নেই, সেসব ক্যাম্পাসগুলোতে আজও আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া শনিবার সকালে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় দেশের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ শনিবার আন্দোলন বন্ধ রয়েছে। যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে আজকে সাপ্তাহিক ছুটি নেই, তাদের আন্দোলন কার্যক্রম আজকেও চলমান রয়েছে। আন্দোলনের অংশ হিসেবে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে।

জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। তবে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ আর কয়েকটি ক্যাম্পাসে সাপ্তাহিক ছুটিতে ভিন্নতা রয়েছে। যবিপ্রবি ও মাভাবিপ্রবির সাপ্তাহিক ছুটি বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার।

অধ্যাপক নিজামুল হক ভূইয়া বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকলেও আজ খোলা রয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বুয়েট শিক্ষকরা আজকে কর্মবিরতি কর্মসূচি শুরু করেছেন। আমি কিছুক্ষণের মধ্যে বুয়েটের কর্মসূচিতে অংশ নেব। এভাবে যে ক্যাম্পাসে যেদিন ছুটি থাকবে, সে ক্যাম্পাসে সেদিন আন্দোলনও স্থগিত থাকবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রত্যয় বাতিলসহ তিন দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জন করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও।

শিক্ষকরা বলছেন, বর্তমান ব্যবস্থায় একজন অধ্যাপক মাসে ৪৫ হাজার ৭৯০ টাকা পেনশন পান। এ জন্য তাদের বেতন থেকে কোনো টাকা কাটা হয় না। সর্বজনীন পেনশন নিয়ে গঠিত মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন ব্যবস্থায় ৩০ বছর বয়সে যোগ দিয়ে ৬৫ বছর বয়সে অবসর নিলে মাসে মাসে বেতন থেকে টাকা কাটার পর পেনশন পাওয়া যাবে ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৬০ টাকা।

কিন্তু আনুতোষিক বা গ্রাচ্যুইটি বাবদ এককালীন ৮০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা নতুন ব্যবস্থায় পাওয়া যাবে না। এই টাকা পেনশন তহবিল বা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করলে যে মুনাফা পাওয়া যায়, তা যোগ করলে বর্তমান ব্যবস্থায় পেনশন দাঁড়ায় মাসে ১ লাখ ১৩ হাজার টাকা। এখানে সুবিধা কমার অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষকনেতারা। কর্তৃপক্ষ বলছে, ১ জুলাই থেকে যাঁরা যোগ দেবেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে।

এদিকে, আন্দোলন নিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অচলাবস্থা নিয়ে শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের গত বৃহস্পতিবারের নির্ধারিত বৈঠক শেষ পর্যন্ত হয়নি। বৈঠকটি স্থগিত করার কারণ হিসেবে মন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ততার কথা বলা হয়েছে। এখন ঠিক কবে নাগাদ এই বৈঠক হতে পারে, সে ব্যাপারেও সরকারের দিক থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো সময় জানানো হয়নি শিক্ষকনেতাদের।

সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচির বিরুদ্ধে আন্দোলনে থাকা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকনেতারা আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকের অপেক্ষায় থাকার কথা বলছেন। তারা আশা করছেন, শিগগিরই সরকারের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে তাদের এই বৈঠক হবে। আলোচনা করেই একটা সমাধানে যেতে চান তারা।

অধ্যাপক নিজামুল হক ভূইয়া বলেন, সরকারের ভেতরে কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অপমান করার জন্য পেনশনের প্রত্যয় কর্মসূচি হাজির করেছে। কিন্তু আমরা বর্তমান সরকারের পক্ষেই সব সময় কথা বলেছি। আমরা বিশ্বাস করি, সরকার আলোচনার মাধ্যমে প্রত্যয় কর্মসূচির প্রজ্ঞাপন বাতিলের আমাদের দাবি মেনে নেবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence