৪০তম বিসিএস

প্রথম বিসিএসেই কাস্টমস ক্যাডারে খুবির লোপা সাহা

লোপা সাহা
লোপা সাহা   © টিডিসি ফটো

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ফার্মেসি ডিসিপ্লিনের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী লোপা সাহা ৪০তম বিসিএসে কাস্টমস ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।

জীবনের প্রথম বিসিএসে অংশ নিয়ে বাজিমাত করা লোপা সাহা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের নিকটে তার জীবনের সংগ্রাম ও সাফল্যের গল্প-বিসিএস জয়ের গল্প শুনিয়েছেন। তার সঙ্গে কথা বলেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের খুবি প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার পরিবারে কে কে রয়েছেন?  

লোপা সাহা: আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। বাবা ছিলেন কোচিংয়ের শিক্ষক, এর পাশাপাশি টিউশনি করাতেন আর মা গৃহিণী।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিসিএসের স্বপ্ন কিভাবে?

লোপা সাহা: ছোটকাল থেকেই পড়ালেখায় মোটামুটি ভালো ছিলাম বলে পরিবার থেকেও খুব উৎসাহ দিত। আমারও একটা স্বপ্ন ছিল, বড় হয়ে সুপ্রতিষ্ঠিত হবার৷ সরকারি চাকরির প্রতি আকর্ষণ থেকেই আমার বিসিএস প্রিপারেশন শুরু। সেই থেকে তাজরিনা আর অভিজিৎ দাদার সাথে বিসিএস-এর প্রস্তুতি শুরু হয়। 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: পড়াশোনায় কোনো ধরনের সহায়তা প্রয়োজন হয়েছে কি? 

লোপা সাহা: বাবার সীমিত আয়ে সংকুলান হতো না। এতে আমার সেজো পিসি আর সেজো পিসামনি বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. অসীম কুমার সাহা আমার ও ছোট ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ জোগাতে সাহায্য করতেন। দেখতে দেখতে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্পণ করি৷ আমি যখন তৃতীয় বর্ষে পড়ি, তখন বাবা মারা যাওয়াতে আমাদের পরিবারে এক বিপর্যয় নেমে আসে৷ সেই সময় আমার আর আমার ভাইয়ের পড়াশুনার যাবতীয় খরচ আমার সেজো পিসি আর পিসামনি বহন করেন, বাবার শূন্যতা তারা কখনোই আমাদের বুঝতে দেয় নাই।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিসিএস পরীক্ষার কিভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন?

লোপা সাহা: গ্রাজুয়েশনের পরে মাস্টার্স চলাকালীন সময়ে প্রিলি দিই। প্রিলি দিয়ে নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস আরও বাড়ে। এরপর নিজের একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি লিখিতর জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকি। মাস্টার্সের থিসিসের মধ্যে লিখিত পরীক্ষা পড়ে। সেই সময় আমাদের তিনজনেরই একই সুপারভাইজার ড. সমীর কুমার সাধুর থেকে আমরা পড়ার জন্য থিসিসের কাজে কিছুটা বিরতি চেয়ে নিই। লিখিত পরীক্ষাও বেশ ভালো হয়। এরপর মাস্টার্স শেষ করি। এরপর আমার বিবাহিত জীবন শুরু হয়। আমার শ্বশুরবাড়ির মানুষেরাও আমার পড়াশোনার জন্য উৎসাহ দিত।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: অনুপ্রেরণা ও যাদের অবদান ছিল?

লোপা সাহা: আমাকে স্বনির্ভর হওয়ার জন্য আমার প্রথম অনুপ্রেরণা ছিল আমার পরিবার, আর সেই সাথে ছিল পিসি আর পিসেমনি। আর আমার স্বামী আমাকে সবসময় আমাকে উৎসাহ দিয়ে বলতো, 'নিজের একটা পরিচয়ে পরিচিত হতে'। করোনা পরিস্থিতির জন্য ভাইভা অনেক পরে হওয়াতে আমি এর মাঝেই ৪১ বিসিএসের পাশাপাশি ৪০তম বিসিএসের ভাইভার প্রিপারেশন নিতে থাকি। এরপর আসে ভাইভা। পরীক্ষাও ভালোই হয়। অপেক্ষায় থাকি চূড়ান্ত ফল প্রকাশের। দেখতে দেখতে আসে সেই স্বপ্ন পূরণের মাহেন্দ্রক্ষণ। আমি কাস্টমস ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হই।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: অনুভূতি কেমন ছিল?

লোপা সাহা: আনন্দটা আরও বেড়ে যায়, যখন আমার সাথেই তাজরিনা পুলিশ ক্যাডারে আর অভিজিৎ দা প্রশাসনে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়। এটা আমাদের তিনজনেরই প্রথম বিসিএস এবং এ সাফল্য আমাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। এই সাফল্যের মাঝে একটাই আফসোস, আমার বাবা এই সুখের দিনে আমার পাশে নাই। তবুও আমার কাছে এটা পরম আনন্দের যে আমি আমার পিসি, পিসামনির আশার পরিস্ফুটন ঘটাতে পেরেছি। আমি স্রষ্টার কাছে চিরকৃতজ্ঞ যে আমার স্বপ্নকে তিনি সত্যি করেছেন। পরিশেষে আমি আমার এই চাকরির মাধ্যমে দেশ সেবায় অবদান রাখতে চাই।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার আগামীর দিনের জন্য শুভ কামনা।

লোপা সাহা: আপনাকেও আন্তরিক ধন্যবাদ।  


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence