আনোয়ারায় শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ‘লাইব্রেরি এক্স’: বইপড়ায় ফিরছে তরুণ প্রজন্ম
- আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৫, ০৮:১১ PM , আপডেট: ১৬ জুন ২০২৫, ১২:৫৮ PM

প্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় বই পড়ার অভ্যাস যখন ক্রমেই বিলীন হতে বসেছে, ঠিক তখনই চট্টগ্রামের আনোয়ারায় শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে যাত্রা শুরু করেছিলো নতুন এক পাঠাগার— ‘লাইব্রেরি এক্স’।
গত ২০ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করা এই পাঠাগারের মূল স্লোগান— ‘যেখানে জ্ঞান উন্মুক্ত ও সীমাহীন’। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে এ পর্যন্ত ২০ জনের বেশি শিক্ষার্থী পাঠাগার পরিচালনায় সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। তাদের কেউ কেউ অনলাইনে, আবার কেউ সরাসরি মাঠপর্যায়ে পাঠকসেবায় নিয়োজিত রয়েছেন।
লাইব্রেরি এক্সের পরিচালক মুনতাসিন হেলাল বলেন, বর্তমান প্রজন্ম স্মার্টফোন ও প্রযুক্তি নির্ভরতায় অতিমাত্রায় ডুবে যাচ্ছে। ফলে বই পড়ার প্রতি আগ্রহ কমে গেছে। পাঠাভ্যাস ফিরিয়ে আনতে আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছি।
প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ বোরহানউদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীরা অ্যাকাডেমিক পড়াশোনার বাইরেও যেন বিজ্ঞান, ইতিহাস, গবেষণা ও সাহিত্যচর্চায় আগ্রহী হয় সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
পাঠাগারের জ্ঞানগ্রহীতা আনোয়ারা সরকারি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী বলেন, লাইব্রেরি এক্সের মাধ্যমে আমার পছন্দের বইগুলো সহজেই পাচ্ছি। এটা আমাদের জন্য বড় সুযোগ।
সদ্য এসএসসি পরীক্ষা দেয়া শিক্ষার্থী সৈয়দা নুজহাত নজরুল বলেন, লাইব্রেরি এক্স থেকে বই পড়ে আমি অনেক উপকৃত হয়েছি। আমার ভাষাজ্ঞান ও শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয়েছে, সুন্দরভাবে কথা বলা ও লেখার দক্ষতা বেড়েছে। বিভিন্ন ধরনের বই পড়ে আমার চিন্তার পরিধি প্রসারিত হয়েছে। এখন আমি ভিন্নমতকেও সম্মান করতে পারি এবং নিজেকে আরও ভালোভাবে চিনতে শিখেছি। লাইব্রেরি এক্সের এ উদ্যোগে আমরা সত্যিই অনেকভাবে উপকৃত হচ্ছি।
কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী ইমরান বিন বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি থেকে নিজেকে মুক্ত করে বইয়ের কাছে ফিরিয়ে এনেছে এই লাইব্রেরি। এরকম উদ্যোগ সময়ের দাবি ছিল।
এ বিষয়ে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার বলেন, ‘‘এ ধরনের উদ্যোগ অত্যন্ত ইতিবাচক। শিক্ষার্থীরা যাতে বইমুখী হয়, সেটি আমাদের সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ধরনের যেকোনো উদ্যোগে সার্বিক সহযোগিতা থাকবে।’’
লাইব্রেরি এক্স থেকে বই সংগ্রহের জন্য পাঠকদের প্রথমে পাঠাগারের ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করতে হবে। এরপর কিপারের মাধ্যমে নির্ধারিত লোকেশন থেকে বই সংগ্রহ করা যাবে। সাত দিনের জন্য বই নেয়া যাবে; জনপ্রতি নামমাত্র চার্জ হিসেবে ২০ টাকা। তাছাড়া, তিন মাসের মেম্বারশিপ সুবিধাও রয়েছে। মাত্র ৮০ টাকার বিনিময়ে তিন মাস ধরে ইচ্ছেমতো বই পড়া যাবে। তবে একসঙ্গে একটির বেশি বই সংগ্রহ করা যাবে না।