চাকসু নির্বাচনে প্রার্থীর বয়স নিয়ে আপত্তি ছাত্রদলের
- চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৫, ০৫:১৮ PM , আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৫, ০৮:২৬ PM
সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) নতুন গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেট। গঠনতন্ত্রের ধারা ৩-এর (গ)তে বলা হয়েছে, চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত (এমফিল, পিএইচডিসহ) শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ ৩০ বছর পর্যন্ত প্রার্থী ও ভোটার হতে পারবেন, যা নিয়ে আপত্তি তুলেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে চাকসু ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়টি জানান সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, `চাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুই দুইবার ক্যাম্পাসের ক্রিয়াশীল সh ছাত্র সংগঠন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছিলেন। সর্বশেষ বৈঠকে উপ-উপাচার্য, ছাত্র উপদেষ্টা, চাকসুর পরিচালক, প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সব ছাত্র সংগঠনের সম্মতিক্রমে হ্যাঁ/না ভোটের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে বলা হয়েছিল, চাকসুর প্রার্থীতার ক্ষেত্রে নিয়মিত স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরাই প্রার্থী হতে পারবে।কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় যে সিন্ডিকেট অনুমোদিত চাকসুর গঠনতন্ত্রের ৩ নং ধারার ‘গ’তে উল্লেখ করা হয়, ‘চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থী হতে হলে শিক্ষার্থীকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণকালীন শিক্ষার্থী হতে হবে (যিনি ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়ে স্নাতক, মাস্টার্স এমফিল, বা পিএইচডি প্রোগ্রামে অধ্যয়নরত এবং কোনো আবাসিক হলে অবস্থানরত বা সংযুক্ত)। উক্ত ধারার মাধ্যমে সদস্য হওয়ার যোগ্যতায় স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরের সঙ্গে এমফিল ও পিএইচডি কোর্সের শিক্ষার্থীদের রাখা হয়। এ ছাড়া বয়সসীমা ৩০ নির্ধারণ করা হয়। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত তাদের পূর্ব প্রতিশ্রুতির ব্যত্যয় ঘটায়।’
আরও পড়ুন: এক ভাইভা নিয়ে এনটিআরসিএর ২০ কর্মকর্তার আয় দেড় কোটি টাকা
এতে বলা হয়, ‘একটি বিশেষ সংগঠন ছাড়া চাকসু সংক্রান্ত সব অংশীজনের সম্মতিক্রমে গৃহীত সিদ্ধান্ত প্রশাসন কি কারণে পরিবর্তন করেছেন, সে ব্যাপারে ছাত্র সংগঠন হিসেবে আমরা ওয়াকিবহাল না। ওনারা যদি চুপিসারে অংশীজনদের মতামত পরিবর্তন করবেন, তাহলে অংশীজনদের ডাকার প্রয়োজন ছিল না। ছাত্রদল এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করছে এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ফিরে যাওয়ার জোর দাবি রাখছে। এ ছাড়া ডাকসু, জাকসু ও রাকসু সংশোধিত সবশেষ গঠনতন্ত্র পর্যালোচনা করে দেখতে পাই, শুধু ডাকসুতে এমফিল কোর্স ব্যতীত অন্য কোনো সংসদে এমফিল, পিএইচডি প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীরা অন্তর্ভুক্ত নয় বলে উল্লেখ করে সংগঠনটি।’
লিখিত বক্তব্যে উপাচার্যের পদাধিকারী ও তাদের কর্তব্য, গঠনতন্ত্রে প্রশাসনের নারীবিদ্বেষী মনোভাব, খাদ্য নিরাপত্তা, নির্বাচন বিধিমালাতে নির্বাচন কমিশন গঠনসংক্রান্ত কোনো রোডম্যাপ না থাকা, ৫ আগস্ট থেকে ক্যাম্পাস নিয়ন্ত্রণ, হলে মিল সিস্টেম চালুর মাধ্যমে আধিপত্য বিস্তার, মব সৃষ্টি, গুপ্ত হামলায় প্রশাসনের নিরবতা, অপদস্ত উপাচার্য নিজের বিচার করতে না পারা, ক্লাসরুমকে রাজনৈতিক কার্যালয় বানানো, ভুঁইফোড় সংগঠন, বিগত ফ্যাসিবাদী আমলের দোষী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের শাস্তি প্রদানে অনিহার বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি আলাউদ্দীন মহসিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান, সিনিয়র সহসভাপতি মামুনুর রশীদ মামুন, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াসিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়সহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।