চাকসু নির্বাচন, ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারসহ ৭ দাবিতে চবি শিবিরের মানববন্ধন

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মানববন্ধনে শিবির নেতাকর্মীরা
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মানববন্ধনে শিবির নেতাকর্মীরা  © টিডিসি

শিক্ষার্থীদের জন্য শতভাগ আবাসন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারসহ সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা।

সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ মানববন্ধন করা হয়।

এ সময় নেতাকর্মীরা ‘তোমার আমার অধিকার, চাকসু চাকসু’; ‘জুলাইয়ের প্রশাসন, দাও শতভাগ আবাসন’; ‘মাথার ওপর ছাতা দে, নয় আবাসন ভাতা দে’; ‘চতুর্দিকে স্বৈরাচার, কবে হবে বহিষ্কার’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। 

শিবির ঘোষিত সাত দফা দাবিগুলো হলো শতভাগ আবাসন নিশ্চিত ও অনাবাসিকদের জন্য ভাতা প্রদান, সেশনজট নিরসন ও শিক্ষার আধুনিকায়ন, নিরাপদ ও পর্যাপ্ত যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিত করা, অনতিবিলম্বে চাকসু নির্বাচন, দ্রুত সময়ের মধ্যে টিএসসি স্থাপন, সেন্ট্রাল অডিটোরিয়াম নির্মাণ, কেন্দ্রীয় মসজিদ ও হল সংস্কার, জুলাই বিপ্লব ও ফ্যাসিবাদী শাসনের সময় নির্যাতনে জড়িত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার এবং জড়িত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা এবং বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে অবৈধ নিয়োগে জড়িতদের বিচার ও নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরিচ্যুত করা। 

আরও পড়ুন: হাবিপ্রবির লিফট যেন মৃত্যুফাঁদ, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, ‘আমরা আজ সাত দফার জন্য আন্দোলনে করছি। এর আগে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। চারটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চবি একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যার ৭৭ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে থাকতে পারেনা। আমরা লক্ষ্য করছি অনেক বিভাগ, ইনস্টিটিউট আছে যার শিক্ষার্থীদের অনার্স মাস্টার্স শেষ করতে চুল পেকে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটলে যাতায়াত করতে আমাদের ভাইবোনদের ঠোঁট, চোখ, ফেটে যাচ্ছে। এই ইতিহাস আর কত দিন?’

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৯০ সালে চাকসু বন্ধ হওয়ার পর ৩৬ বছর কেটে গেলেও চাকসু নামক সিঙ্গারা-সামুসার ঘরে কোন ছাত্র প্রতিনিধিকে বসতে দেওয়া হয়নি। ছাত্রশিবির কোনো ক্রেডিটের রাজনীতি করে না, কোনো ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন, সামাজিক সংগঠন যদি মনে করে শিবিরের ব্যানারে আমরা দাঁড়াতে চাই না, কিন্তু অধিকার আদায় করতে চাই তাহলে আগামীকাল থেকে আর আমরা এই ব্যানারে দাঁড়াবো না, নতুন কোন ব্যানারে দাঁড়াব এবং একসাথে আমাদের এই দাবি আদায় করে ছাড়ব।’

আরও পড়ুন: মেডিকেল ভর্তি নীতিমালায় বড় পরিবর্তন আসছে, পরীক্ষা কবে?

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সেক্রেটারি পারভেজ আহমেদ বলেন, ‘আপনার কি কখনো শুনেছেন বাসের সমস্যার কারণে শিক্ষকরা শহরে যেতে পারেনি? আপনারা কি কখনো শুনেছেন শিক্ষকদের খাবারের মান খারাপ? যদি শিক্ষকদের জন্য সব সুবিধা থাকে, তাহলে শিক্ষার্থীদের জন্য কেন নয়? এ বিশ্ববিদ্যালয় কি শুধু শিক্ষকদের জন্য? আর যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে চট্টগ্রাম শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয় নাম দেন। তারপর সেখানে আপনারা গবেষণা করেন কীভাবে ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন করা যায়। প্রশাসনকে বলতে চাই, কুয়েটের ভিসির থেকে শিক্ষা নেন। দাবি আদায় না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলব।’

উল্লেখ্য, সাত দফা দাবি বাস্তবায়নে চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি। এসবের মধ্যে রয়েছে সংস্কার ক্যাম্পেইন, প্রতীকী সিট বণ্টন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি।


সর্বশেষ সংবাদ