ডাকসু নির্বাচন নিয়ে রিট হচ্ছে, সমর্থন আছে ছাত্রদলের

ডাকসু ভবন
ডাকসু ভবন  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন নিয়ে নতুনকরে অনিশ্চয়তা দেখা দিচ্ছে। ভোটার ও প্রার্থী হবার ক্ষেত্রে বয়স বেধে দেয়া, ক্যাম্পাস ও হলে সহাবস্থান, হলে ভোটকেন্দ্রসহ কয়েকটি বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে ছাত্রলীগ ছাড়া অধিকাংশ ছাত্র সংগঠন। স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে ইচ্ছুক এমন অনেকেও এসব বিষয়ে ক্ষুব্ধ। এ অবস্থায় সংক্ষুব্ধ কেউ ডাকসু নির্বাচন নিয়ে রিট করলে তাতে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছে ছাত্রদল। ইতোমধ্যে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদের এক সহ-সম্পাদক রিটের প্রস্তুতিও নিয়েছেন।

নির্বাচন চেয়ে একটি রিট আবেদনের পর উচ্চ আদালতের আদেশে ২৮ বছর বছর ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নির্বাচনে প্রার্থীতার ক্ষেত্রে নিয়মিত শিক্ষার্থী হওয়ার সঙ্গে বয়স ৩০ বছরের মধ্যে হওয়ার শর্ত বেধে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে ছাত্রলীগ ছাড়া অধিকাংশ ছাত্র সংগঠনের শীর্ষনেতারা ছিটকে পড়ছেন নির্বাচন থেকে। বিশেষকরে বিগত ডাকসুতে জয়লাভ করা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের শীর্ষনেতাদের কেউই এবার প্রার্থী হতে পারছেন না।

প্রার্থী হতে না পেরে সংক্ষুব্ধ দলটির কেন্দ্রীয় সংসদের মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা বিষয়ক সহ-সম্পাদক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের  এমফিলের এই শিক্ষার্থীর বয়স বিশ্ববিদ্যালয়ের বেধে দেওয়া বয়সসীমার দুই মাস অতিক্রম করেছে। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থী হবার ক্ষেত্রে অতীতে কখনও বয়সের বিষয়টি ছিলো না। কিন্তু এবার কেনো ৩০ বছর বয়স বেধে দেয়া হলো? শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো নির্বাচনের ক্ষেত্রে একাডেমিক সেশনকে গুরুত্ব দেয়া উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েও তিনি ডাকসুর প্রার্থী হতে পারছেন না। অথচ একই সেশনে ভর্তি হয়েও ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এবং ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দীর প্রার্থীতার সুযোগ রয়েছে। এসব বিষয় কেনো বেআইনী হবে না তা জানতে চেয়ে উচ্চ আদালতের দারস্থ হচ্ছেন তিনি।

এ বিষয়ে আইনজীবীর সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে নিজাম বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের পর যেকোনো দিন হাইকোর্টে রিট দায়ের করবেন তিনি। এদিকে বিষয়টিতে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিষয়টিতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা নিজাম উদ্দিন তার সঙ্গে পরামর্শ করেছেন। তবে এখনও রিট আবদেনটি করা হয়নি।

রিটে সম্মতি আছে, নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হলে দায় প্রশাসনের : ছাত্রদল

এদিকে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ডাকসু নির্বাচনের জন্য ক্যাম্পাস ও হলে সহাবস্থান নিশ্চিত করা অপরিহার্য। কিন্তু দীর্ঘ ৯ বছর পর এই নির্বাচনের কারণে মধুর ক্যান্টিনে যাওয়ার সুযোগ পেলেও হলে যেতে পারছেন না তারা। এজন্য ক্যাম্পাস ও হলে সহাবস্থান এবং তা কার্যকর করতে নির্বাচন তিন মাস নির্বাচন পেছানোর দাবি তাদের। প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বচনে প্রার্থী হতে অতীতে বয়সের বিষয়টি ছিলো না। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতাদের সুবিধা দিতে এবার সরকারি দলের ছাত্র সংগঠনটির কমিটির নেতা হওয়ার বয়সসীমা ৩০ বছরকে গুরুত্ব নিয়ে ডাকসুর প্রার্থীতার বয়স নিধারণ করা হয়েছে। এছাড়া সান্ধ্যকালীন মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ডাকসু ও হল সংসদের ফি নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তাদের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ না দেওয়াটা বৈষম্যমূলক দাবি করেছেন তিনি।

ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক বলেন, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনের একদলীয় ও বৈষম্যমূলক আচরণকে তারা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবেন। এজন্য তাদের সাত দফা দাবি আদায়ে কর্মসূচি দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। তবে সহাবস্থান ও প্রার্থীতার বিষয়ে সংক্ষুব্ধ কেউ আদালতে রিট দায়ের করলে তাকে ছাত্রদল সমর্থন করবে বলে তিনি জানান। 


সর্বশেষ সংবাদ