লক্ষ্মীপুরে চেয়ারম্যানের উসকানিতে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া, অস্ত্র হাতে যুবলীগ কর্মী
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৩০ PM , আপডেট: ০২ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৩৬ PM
লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সংঘর্ষ হয়েছে। শুক্রবার (২ আগস্ট) জুমার নামাজ শেষে শহরের উত্তর তেমহুনী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় যুবলীগের এক কর্মীকে প্রকাশ্যেই অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করতে দেখা গেছে।
দুই পক্ষের সংঘর্ষের এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
প্রকাশ্যেই অস্ত্র হাতে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করা ব্যক্তির নাম সুমন। তিনি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এ কে এম সালাউদ্দিন টিপুর গাড়িচালক।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহরের চকবাজার জামে মসজিদে আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনকারীরা। নামাজ শেষ না হতে সাবেক জেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন টিপুর নেতৃত্বে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় মসজিদে আসা মুসল্লিসহ ছাত্র আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দেন। এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় তারা। পরে কলেজ রোড এলাকায় কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা বৃষ্টি উপেক্ষা করে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
পরে মিছিল নিয়ে উত্তর তেমহুনীর দিকে অগ্রসর হচ্ছিল বিক্ষোভকারীরা। একপর্যায়ে মিছিলের পেছন দিক থেকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বাসার দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা কর্মীরা মিছিলকারীদের ওপর হামলা চালান। এতে মানবজমিন পত্রিকার প্রতিনিধি মো. ইউসুফ ও ছাত্র আন্দোলনকারীসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়। এতে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, বিনা উসকানিতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও যুবলীগের সাবেক সভাপতি সালাউদ্দিন টিপু ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়ার নেতৃত্বে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে অন্তত ১৫ জনকে আহত করে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় তারা।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক যুবলীগের সভাপতি এ কে এম সালাউদ্দিন টিপু বলেন, জামায়াত-শিবিরের নেতা–কর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজন নেতা কর্মীকে মারধর করে। এ ছাড়া বাসাকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে তারা।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) হাসান মোস্তফা স্বপন বলেন, লক্ষ্মীপুরে সম্পূর্ণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে সবাই। লক্ষ্মীপুরকে সুন্দরভাবে নিয়ন্ত্রণে রেখেছি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এবি ছিদ্দিক বলেন, লক্ষ্মীপুর শান্ত ছিল। সম্পুর্ণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। চেয়ারম্যানের উসকানিতেই ঘটনাটি ঘটেছে। উনি নেতাকর্মীদের নিয়ে এখানে অবস্থান না নিলে ইট মারার পরিস্থিতি হতো না। আমাদের উপস্থিতিতে তারা এখানে অবস্থান নেবে কেন? আমরা যদি আওয়ামী লীগের লোকজনকে ভেতরে না রাখতাম তাহলে লক্ষ্মীপুরে আগুন হয়ে যেত।