ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের গুলি করে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি, প্রতিবাদে ভাংচুর
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৪, ০৮:১২ PM , আপডেট: ০৫ জুন ২০২৪, ০৮:১৪ PM
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষের দেহরক্ষী, ব্যক্তিগত সহকারীসহ কর্মকর্তারা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের ‘শটগান দিয়ে গুলি করে উড়িয়ে দেওয়ার’ হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এরই জের ধরে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়ে অধ্যক্ষের প্রাইভেট কার ভাঙচুর করেছেন। বুধবার (৫ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দৌলতপুর কলেজ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দৌলতপুর কলেজে একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে, এমন অভিযোগ পেয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আমানুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব হোসেনের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা কলেজ ক্যাম্পাসে যান। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি-ইচ্ছুক সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে কলেজের অধ্যক্ষের ব্যক্তিগত সহকারী রাজু আহম্মেদ, সহকারী লাইব্রেরিয়ান মোমেনুর রহমান ও অধ্যক্ষের দেহরক্ষী জাফর ইকবাল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে সেখানে বাগ্বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়।
ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা বলেন, অধ্যক্ষ সাদিকুজ্জামান দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে অধ্যক্ষের অনুসারী শিক্ষক-কর্মকর্তারা শটগানের গুলিতে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এ সময় সেখানে আরও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। তখন সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী কলেজ ভবনের একটি কক্ষে গিয়ে এক শিক্ষকের জামার কলার টেনে ধরেন। বকাঝকা করে এক মিনিট পর তাঁরা বের হয়ে যান। পরে তাঁরা অধ্যক্ষের কার্যালয়ে যান। তবে অধ্যক্ষের কার্যালয়ের গেটে তালা ঝুলতে দেখে তাঁরা অধ্যক্ষের ব্যক্তিগত মাইক্রোবাসে ইটপাটকেল ছুড়ে ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে দৌলতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাকিবুল হাসানসহ অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে কলেজ ক্যাম্পাসে অধ্যক্ষের অনুসারী লোকজনের দেশি অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়েছেন।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আমানুল্লাহ বলেন, গত মঙ্গলবার কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ছাত্র–সংশ্লিষ্ট কয়েকটি দাবি নিয়ে অধ্যক্ষের কাছে গিয়েছিলেন। এ সময় ভর্তি হতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়, উপবৃত্তির টাকা ধনী ও অধ্যক্ষের মনোনীত শিক্ষার্থীদের দেওয়া ও বেশি বেতন নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। এ সময় অধ্যক্ষ কলেজ ক্যাম্পাসে কোনো রাজনীতি চলবে না বলে তাঁদের চলে যেতে বলেন। সে বিষয়ে গতকাল আবার তাঁরা ক্যাম্পাসে যান।
আমানুল্লাহ আরও বলেন, অধ্যক্ষের লোকজন অস্ত্র নিয়ে গুলি করার হুমকি দিয়েছিলেন। অস্ত্রও তাক করেছিলেন। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করেন। তাঁরাই ইটপাটকেল ছোড়েন। তাতে হয়তো গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। অধ্যক্ষ একটা দুর্নীতিবাজ লোক। তাঁর কারণে কলেজের শিক্ষকেরা ভয়ে কথা বলতে পারেন না।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, দৌলতপুর কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ছাত্র ভর্তির বিষয় নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কলেজের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের বাগ্বিতণ্ডা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কলেজে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে। পরে দৌলতপুর থানা-পুলিশ গিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করেছে। বর্তমান পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।