রাবির হলে ৩৪ ছাত্রলীগ নেতার ২৯ জনই নিষ্ক্রিয়, বিবাহিত ৫
- মারুফ হোসেন মিশন, রাবি
- প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৪, ১২:০৩ PM , আপডেট: ২৬ মে ২০২৪, ১২:১১ PM
আগের কমিটি গঠনের সাত বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ১৭টি আবাসিক হল শাখা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। সম্মেলনের মাধ্যমে ২০২২ সালের ২৪ মার্চ গঠিত এক বছর মেয়েদী এ কমিটি দু’বছর পার করে ফেলেছে। তবে নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেই। এদিকে ১৭ হলের ৩৪ জন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে মাত্র পাঁচজন সক্রিয় রয়েছেন। বাকি ২৯ জন নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছেন। সম্মেলন না হওয়ায় তাদের অধিকাংশই ক্যাম্পাস ত্যাগ করেছেন।
আর পাঁচ নেতা বিয়ে করেছেন বলে জানা গেছে। এদিকে হল কমিটি না থাকায় ছাত্রলীগের নতুন কর্মী তৈরিও হচ্ছে না। আবার যারা সক্রিয় ছিলেন, তারাও হতাশ হয়ে ক্রমশ নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে হল কমিটির দাবি জানিয়েছেন অবস্থান করা নেতাকর্মীরা।
রাবিতে হল শাখা ছাত্রলীগের ৩৪ জন মূল নেতার মধ্যে ২৫ জনই ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচজন নেতা বিয়ে করে সংসার করছেন। কেউ সরকারি চাকরি করছেন কেউবা ক্যাম্পাসে থেকেও নিষ্ক্রিয়। এছাড়া কয়েকদিন আগে দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় হলের তিন নেতাকে বহিষ্কার করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
নেতাকর্মীরা বলছেন, ছাত্রলীগের দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় হল পরিচালনার জন্য সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। অথচ রাবিতে হল শাখা ছাত্রলীগের ৩৪ জন মূল নেতার মধ্যে ২৫ জনই ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচজন নেতা বিয়ে করে সংসার করছেন। কেউ সরকারি চাকরি করছেন কেউবা ক্যাম্পাসে থেকেও নিষ্ক্রিয়। এছাড়া কয়েকদিন আগে দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় হলের তিন নেতাকে বহিষ্কার করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
নিষ্ক্রিয় ২৯ জনের মধ্যে বাকি চারজন ক্যাম্পাসে থাকলেও রাজনীতিতে সক্রিয় নন। এরইমধ্যে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল ছাত্রলীগের সভাপতি মো. নিয়াজ মোর্শেদ শুভ, হবিবুর হলে সাধারণ সম্পাদক মো. আশিকুর রহমান অপু, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সভাপতি মো. কাব্বিরুজ্জামান রুহল ক্যাম্পাসে থাকলেও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ দল থেকে তাদের বহিষ্কার করে।
এদিকে হল শাখা ছাত্রলীগের সক্রিয় পাঁচ নেতার মধ্যে দু’টি ছাত্র হলের সাধারণ সম্পাদক এবং ছাত্রী হলের তিন নেত্রী রয়েছেন। এর মধ্যে দু’জন শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতি পদ পেয়েছেন। তাদের স্থলে হলের দুই নেতা ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ পরিস্থিতিতে হলে অবস্থান করা নেতাকর্মীদের দাবি- দ্রুত সময়ে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করতে হবে।
জিয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজিদ বলেন, ‘হল সম্মেলন এখন আমাদের সময়ের দাবি। হল কমিটির মাধ্যমে হল শাখা ছাত্রলীগের ইউনিটগুলি শক্তিশালী হয় এবং সংগঠনে গতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। কর্মীরা সংগঠনের প্রতি দায়িত্বশীল হয় এবং কাজের প্রতি আগ্রহী হয়। আমরা চাই দ্রুত হল সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হোক।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, ‘আমি ও আমার সভাপতি দায়িত্বে আসার আগে থেকেই হল কমিটি নেই। ১৭ হলের ৩৪ জন মূল নেতার মধ্যে গুটিকয়েক ক্যাম্পাসে অবস্থান করলেও অধিকাংশই চলে গেছেন। অনেকেই চাকরি নিয়ে বিয়েও করেছেন। অনেক নেতার পড়াশোনা শেষ হয়ে যাওয়ায় রাজশাহী থেকে চলে গেছেন।’
আরো পড়ুন: কুবি ‘বন্ধের দায় উপাচার্যের’, আলোচনায় বসবে না শিক্ষক সমিতির
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর হল শাখা ছাত্রলীগকে গতিশীল করার জন্য প্রতিটিতে দু’জনকে দায়িত্ব দিই। যেসব হলের সভাপতি-সম্পাদক আছেন, সে সব হলগুলোতে তাদের মনোনীত নেতা-কর্মীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদককে জানিয়ে রাবি ছাত্রলীগকে গতিশীল করার লক্ষ্যে দ্রুতই আমরা বর্তমান হল কমিটি বিলুপ্ত করব। হল সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি দেব।’
রাবি শাখা ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্রবিষয়ক সম্পাদক সাহিদুল ইসলাম শাকিল বলেন, ‘হল কমিটির ৩৪ জন মূল নেতার মধ্যে ৪-৫ জন ক্যাম্পাসে আছেন। বাকিরা পড়াশোনা শেষ হয়ে যাওয়ায় ক্যাম্পাস ত্যাগ করেছেন। আমরা অনুভব করছি, খুব দ্রুত হল সম্মেলন হওয়া উচিত। সর্বশেষ জয় ও লেখক ভাই হল সম্মেলন দিয়েছিলেন। আমরা সাদ্দাম ও ইনান ভাইয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলে দ্রুতই হল সম্মেলনের আয়োজন করব।’