ঢাবি অধ্যাপক ওয়াহিদুজ্জামানের বক্তব্য নারী শিক্ষা বিরোধী: ইসলামী ছাত্র আন্দোলন

অধ্যাপক ড. এম ওয়াহিদুজ্জামান
অধ্যাপক ড. এম ওয়াহিদুজ্জামান  © টিডিসি ফটো

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার নেতারা বলছেন, পর্দা নারীর রক্ষাকবচ ও আত্মপরিচয়ের হাতিয়ার। কিন্তু স্বাধীন দেশের উচ্চশিক্ষার আঁতুড়ঘর‌ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পোশাকের মৌলিক অধিকার হরণ করে আমাদের বোনদেরকে বারবার হেনস্থার শিকার করা হচ্ছে। ইদানিং কতিপয় শিক্ষকও এই স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে যা নারী শিক্ষার পথে হুমকি ও অশনিসংকেত। ঢাবি নারী শিক্ষার্থীদের পোশাকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।

এসময় অধ্যাপক ড. এম ওয়াহিদুজ্জামানের বক্তব্য নারী শিক্ষা বিরোধী আখ্যা দিয়ে তার এই অমূলক মন্তব্যের জন্য নারী শিক্ষার্থীদের সামনে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান।

আজ মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) রাতে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাইফ মোহাম্মদ আলাউদ্দিনের পাঠানো এক বিবৃতিতে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত ও সাধারণ সম্পাদক খাইরুল আহসান মারজান এসব কথা বলেন। 

এসময় তারা নারী শিক্ষা বিরোধী শিক্ষকদের এমন আচরণের প্রতিবাদ জানানোর সাথে সাথে নারী শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু ও নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতের জোর দাবি জানান। অন্যথায় নেতৃবৃন্দ দাবি আদায়ে জোরালো আন্দোলনের হুশিয়ারী প্রদান করেন। 

নেতারা বলেন, সম্প্রতি পর্দা পালনকারী মেয়ে শিক্ষার্থীদেরকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক ওয়াহিদুজ্জামানের বারংবার হেনস্থার মুখে ফেলেছেন। শুধু এখানেই ক্ষ্যান্ত না থেকে হিজাব পরিধান করায় হেনস্থার শিকার হওয়া শিক্ষার্থীকে উগ্রবাদী দলের সদস্য বলে মন্তব্য করে ভিক্টিম ব্লেমিংয়ের অপরাধ ও করেছেন তিনি। তার এই অমূলক মন্তব্যের জন্য অবিলম্বে তাকে ক্ষমা চাইতে হবে।

তারা আরও বলেন, নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে ঢাবির এই শিক্ষক দাবী করেন যে “তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে না এসে বাসায় লেখাপড়া করা উচিৎ।” আমরা মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সাথে পর্দা পালন করার কোন সাংঘর্ষিকতা নেই। শিক্ষাকে কখনোই কোন জাত, বর্ণ কিংবা পোশাকের সীমাবদ্ধতায় আবদ্ধ করার সুযোগ নেই। এবং এই ইস্যুকে মূখ্য করে একজন শিক্ষার্থীকে শিক্ষার অধিকার ও সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা শিক্ষকসূলভ আচরণ হতে পারে না। এই মন্তব্য চরমভাবে নারী শিক্ষা বিরোধী। তার মন্তব্য সম্পূর্ণই ইসলাম বিদ্বেষপ্রসূত ও ইসলামী সংস্কৃতি বিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ।

প্রসঙ্গত, গতকাল সোমবার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসে ‘ঢাবিতে এবার ছাত্রীদের নেকাব খুলে ভাইভা নেওয়ার অভিযোগ’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদনে ড. এম ওয়াহিদুজ্জামান বলেছিলেন, “ভাইভা বোর্ডে আমাদের দেখতে হবে আমরা কার ভাইভা নিচ্ছি এবং তার রিয়েকশন বুঝে মার্কিং করতে হয়। কেউ চাইলেই মুখ না খুলে হজ্বের জন্যও যেতে পারবে না। হজ্বে যেতে হলেও মুখ দেখাতে পারলে ভাইভায় সমস্যা কি? তাছাড়া ভাইভায় শিক্ষক ছাড়া ছাত্ররাও থাকে না। তাছাড়া চাকরির সময় তারা মুখ খুলতে পারলে বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সমস্যা কি? আমার মা-খালারা পর্দা করেন তারা তো চাকরি করতে যাবে না। সে যদি পর্দা ভালো করে করতেই চায় তাহলে সে ভার্সিটিতে কেন এসেছে? ঘরে থাকবে সে। তারা বাসায় থেকে পড়াশোনা করুক ভার্সিটি তাদের জন্য নয়।”


সর্বশেষ সংবাদ