ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও জুনিয়রকে মারধর

অভিযোগ তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন ঢাবির সেই ছাত্রলীগ নেতা

ঢাবি জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাজীব বিশ্বাস নয়ন
ঢাবি জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাজীব বিশ্বাস নয়ন  © সংগৃহীত

রাজধানীর একটি কলেজের ছাত্রীকে যৌন হয়রানির জেরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বাঁধন বিশ্বাসকে মারধর করেন শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাজীব বিশ্বাস নয়ন। পরে এ ঘটনার বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও শাহবাগ থানা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন বাঁধন। অভিযোগে কলেজছাত্রীকে যৌন হয়রানির বিষয়টিও উঠে এসেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে হলে মারধরের এই ঘটনা ঘটেছিল। 

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর বাঁধন বিশ্বাসের ওপর ক্ষেপছেন ছাত্রলীগ নেতা রাজীব বিশ্বাস নয়ন। এসব অভিযোগ তুলে নিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নানান হুমকি দিচ্ছেন তিনি। আজ রবিবার বিকেলে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে এ তথ্য জানান বাঁধন বিশ্বাস।

আরও পড়ুন: কলেজছাত্রীকে যৌন হয়রানির জেরে জুনিয়রকে মারধর ঢাবির ছাত্রলীগ নেতার

এ বিষয়ে বাঁধন বিশ্বাস বলেন, আমার বান্ধবীকে যৌন হয়রানি ও আমাকে মারধরের বিচার চেয়ে থানা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিলে তা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন রাজীব বিশ্বাস নয়ন। আমি হল প্রভোস্ট স্যারের কাছেও লিখিত অভিযোগ দিবো। হলের ছাত্রলীগের ভাইয়েরাও আমার পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন। আমি এ ঘটনায় ন্যায় বিচার চাই।

এ বিষয়ে হল প্রাধ্যাক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা বলেন, আমি ফোনে দুজনের অভিযোগ শুনেছি এবং তাদের শান্ত থাকতে বলেছি। তবে এখনো কেউ আমাকে লিখিত কোনো অভিযোগপত্র দেয়নি। লিখিত অভিযোগপত্র হাতে পেলে দুজনকে নিয়ে বসে তদন্তের মাধ্যমে সুষ্ঠু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

অভিযোগের ব্যাপারে ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ঘটনার পরদিন সকালে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আমাকে ফোন দিয়ে অভিযোগ দিয়েছে। তবে আমি লিখিত অভিযোগ হাতে পাইনি। পরবর্তীতে আমি হল প্রাধ্যক্ষকে বিষয়টি অবহিত করে এর যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলেছি। দুজন শিক্ষার্থীকেই সতর্ক করে দেয়া হয়েছে ভবিষ্যতে যেনো এমন কিছু না করে। হল প্রশাসন যেকোনো সময় দুজনকে সাক্ষ্য প্রমাণসহ বসবে, অভিযুক্তকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

তবে বাঁধনকে হুমকির বিষয়ে রাজীব বিশ্বাস নয়ন বলেন, আমি তাকে একটুও তাকে চাপ প্রয়োগ করিনি। তাকে সেদিন মেরেছি ঠিক আছে, সেটাও তার অপরাধের কারণে। বাঁধনকে হল ও বিভাগের সবার পক্ষ থেকে বুঝানো হয়েছে। কিন্তু তবুও সে না বুঝায় তাকে হল সংগঠন (ইতিহাস বিভাগের) থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

লিখিত অভিযোগে বাঁধন জানান, ঘটনার সূত্রপাত সরস্বতী পূজার পর থেকে। পূজার পরদিন রাজীব বিশ্বাস নয়ন সিটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ুয়া আমার এক বান্ধবীকে রাতে ফোন দিয়ে বলেন, তোমাকে ছোট ছোট গেঞ্জি-প্যান্ট, ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরলে হট লাগে। পরবর্তীতে এসব বিষয় তিনি আমাকে বললে ঘটনাটি রাজিব বিশ্বাসের বান্ধবীর সঙ্গে শেয়ার করি। এরপর থেকে তিনি (রাজিব বিশ্বাস) আমাকে মেসেঞ্জারে হুমকি দিয়ে আসছে।

অভিযোগে তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার হলের ৩০১৪ নাম্বার রুমের সামনে তিনি আমাকে ৩০ মিনিট ধরে গালাগালি করে। আমি সরি বললেও পরবর্তীতে তিনি রাত ১২টার দিকে আমাকে রুমে এসে ভাত খাওয়া অবস্থায়' ঘাড়ে, মুখে, কানে চড়, ঘুসি মারে। এসময় রুমে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আকাশ মন্ডল থাকায় তিনি আমাকে তাৎক্ষণিক বাঁচান।


সর্বশেষ সংবাদ