মাস্টার্স শেষে কৃষিকাজে জবি ছাত্র বিদুৎ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১:২০ AM , আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২:৩৬ PM
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে বেছে নিলেন কৃষি কাজ। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স শেষ করে এখন পুরোদস্তুর একজন কৃষক। বলছি কে এম বদরুদ্দোজা বিদ্যুৎ এর কথা। নিজের জমি নেই মানুষের কাছ থেকে জমি বর্গা নিয়ে শুরু করেন এ কাজ। তার স্বপ্ন কৃষি উদ্যোক্তা হওয়া।
ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জের পৌরসভা এলাকার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত হারুনুর রশিদের ছেলে বদরুদ্দোজা। স্ত্রী, মা, দুই ভাই ও এক বোনকে নিয়েই তার সংসার। তার বউ মুস্তারিন আক্তার রানিশংকেল আবাদ কাচিয় দাখিল মাদরাসায় কামিল দ্বিতীয় বর্ষ পড়ছেন।
আরও পড়ুন: আসছে ওমিক্রন বিএ.২, দ্রুত ছড়ানো শঙ্কা
অভাবের মধ্য ছিলেন সব সময়। অভাবকে সঙ্গী করে পড়ালেখা চালিয়ে গেছেন সব সময়। ২০০৩ সালে মাদরাসা থেকে এসএসসি পাস করার পর বাবা মার যান। তারপর থেকে সংসারের হাল ধরতে হয়। অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা চালিয়ে যান। এ অবস্থার মধ্যও মাদরাসা থেকে এইচএসসি পাশ করেন। এর ভর্তি হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সংসারের খরচ চালানোর জন্য পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেছেন, টিউশনি করেছেন।
তিনি বলেন, পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা দিয়ে সুবিধে করতে পারিনি। তাই আর চাকরির পেছনে না ছুটে গ্রামে এসে ব্যাবসা শুরু করি। ব্যবসায় তেমন লাভ না পেয়ে কৃষি কাজ শুরু করলাম। আসলে ইচ্ছা থাকলে কৃষি কাজ করে অনেক কিছু করা যায়। তাই আমি কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে কৃষি কাজ করতে এসে গ্রামের মানুষের অনেক কটু শুনতে হয়েছে তাকে। বিদুৎ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে পড়ালেখা করে কৃষিকাজ করছি বলে মানুষ আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করে। আমার স্ত্রীও শিক্ষিত। আমার কৃষি কাজে স্ত্রী যথেষ্ট সাহায্য করে আমাকে। মাঠে কাজ করার সময় সে বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসে। আমরা মাঠে এক সঙ্গে খাবার খাই। কৃষি কাজে অন্য রকম এক আনন্দ আছে।
বিদ্যুতের স্ত্রী মুস্তারিন আক্তার বলেন, আমার স্বামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে গ্রামে এসে কৃষি কাজ করছেন দেখে প্রথমে খুব খারাপ লাগত। তবে এখন খারাপ লাগাটা আর নেই। এখন আমি আমার স্বামীকে কাজে সহযোগিতা করি।
আরও পড়ুন: ‘স্যার’ ডাক শুনতে চান জাবির কর্মকর্তারা
পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রেজাউল করিম বলেন, আমি ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারি কে এম বদরুদ্দোজা বিদ্যুৎ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন বিভাগের মাস্টার্স শেষ করে কৃষি কাজ করছেন। তারা স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই শিক্ষিত। তাদের ইচ্ছে কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার। আমরা তাদের ইচ্ছেকে সাধুবাদ জানাই। সরকারিভাবে কোনো সুযোগ-সুবিধা পেলে তাদের সহযোগিতা করা হবে।