শান্তির হ্যাটট্রিকে সাফ জয়, নিজ গ্রামে উৎসবের আমেজ

শান্তি মার্ডি ও তার সতীর্থরা
শান্তি মার্ডি ও তার সতীর্থরা  © সংগৃহীত

সম্প্রতি সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশীপের ভুটানের বিপক্ষে জয়লাভ করে বাংলাদেশ এক নতুন ইতিহাস তৈরি করেছে। নানা আলোচনা-সমালোচনার এই ম্যাচকে ঘিরে ছিল মানুষের অনেক আগ্রহ। পৃথক দুটি আলাদা মাঠে অনুষ্ঠিত হয় এই একটি ম্যাচ। ৪-১ গোলের ব্যবধানে বাংলাদেশ অর্জন করে বিজয়। এই বিজয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ জায়গা করে নেন এশিয়ান মূল পর্বে। আর এই ম্যাচেই দুর্দান্ত ভাবে খেলে হ্যাট্রিক গোল করেন শান্তি মার্ডি।

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পলাশবাড়ী গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকার আদিবাসী পরিবারের মেয়ে শান্তি মার্ডি। শান্তি দক্ষিণ পলাশবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। পরিবারে তার বাবা বাবু লাল মার্ডি পেশায় দিনমজুর, তার মাতা গৃহিণী। শান্তির বড় বোন খ্রিস্টিনা মার্ডির বিয়ে হয়েছে অনেক আগেই, ছোটভাই নয়ন মার্ডি পড়াশোনা করছেন সপ্তম শ্রেণিতে। শান্তির এত বড় সফলতায় এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

সরেজমিনে তার তার পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শান্তি ২য় শ্রেণি থেকেই ফুটবলের চর্চা শুরু করেন। এরপর আন্তঃ প্রাথমিকের ফুটবল টুর্নামেন্টে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন। একাধিকবার উপজেলা,জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয় শান্তিরা। এরপর বিকেএসপিতে খেলার সুযোগ পায় শান্তি। আর তারপরই খুলে যায় এই স্বপ্নবাজের ভাগ্যের চাকা। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন তিনি। তার জাদুকরী পায়ের কৌশলের মাধ্যমে একাই হ্যাট্রিক গোল করেন ও বাংলাদেশকে এনে দেয় বিজয়।

স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠক ও শিক্ষক নাজিরুল ইসলাম নাজির বলেন, সে ছোট থেকেই দারুণ খেলতো। অসাধারণ তার পায়ের কৌশলের। তার এত বড় অর্জনে আমরা সবাই অনেক আনন্দিত। ভবিষ্যতে যেনো আরো ভালো জায়গায় পৌঁছাতে পারে সেই দোয়া করি।

মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিনুর রহমান চৌধুরী শাহিন বলেন, ‘প্রত্যন্ত এলাকায় শান্তি শুধু আমাদের ইউনিয়নের নয় সারা বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। আমরা শান্তির পরিবারের খোঁজ নিয়েছি,তার বাবা খুবই মানবেতর জীবনযাপন করেন। আমরা তার পরিবারের মাঝে এক বস্তা চাল,শুকনো খাবার ও খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির একটি কার্ড প্রদান করেছি। ভবিষ্যতে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ হতে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে শান্তির পরিবারকে।’

জানা গেছে, শনিবার (১৯ জুলাই) বিকেলে শান্তির পরিবারের সাথে স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও এলাকাবাসীরা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ও পরিষদের পক্ষ হতে শান্তির বাবার হাতে চালের বস্তা,শুকনো খাবার ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির একটি কার্ড দেওয়া হয়।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!