জুমার নামাজ আদায় না করার শাস্তি

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি  © সংগৃহীত

ইসলামের দৃষ্টিতে সপ্তাহের দিনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ দিন হলো জুমার দিন। এই দিনকে আল্লাহ তাআলা বিশেষভাবে সম্মানিত করেছেন এবং একে সপ্তাহের ‘ঈদের দিন’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। হাদিস ও কোরআনের আলোকে এই দিনের গুরুত্ব অপরিসীম।

জুমার নামাজের গুরুত্ব বোঝাতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘হে মুমিনগণ! জুমার দিন যখন নামাজের জন্য ডাকা হয়, তখন আল্লাহর স্মরণের দিকে এসো। ক্রয়-বিক্রয় পরিত্যাগ কর, এটাই তোমাদের জন্য অতি উত্তম, যদি তোমরা জানতে! আর যখন নামাজ শেষ হয়, তখন জমিনে ছড়িয়ে পড়, আর আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর। আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করতে থাক যাতে তোমরা সাফল্য লাভ করতে পার। (সুরা: জুমা ৯-১০)

জুমার নামাজ কত রাকাত
জুমার নামাজের ওয়াক্ত জোহরের ওয়াক্তের সময়। জুমার দিন দুপুরে গোসল করে পরিষ্কার পোশাক পরিধান করে আজানের সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে উপস্থিত হয়ে নামাজ আদায় করা উত্তম। জুমার নামাজের রাকাতের সংখ্যা: চার রাকাত কাবলাল জুমা (জুমার নামাজের আগে), দুই রাকাত ফরজ, চার রাকাত বাদাল জুমা (জুমার নামাজের পর)।

জুমার নামাজ আদায়ের নিয়ম
দুই রাকাত ফরজ রয়েছে জুমার নামাজে। এ ছাড়া ফরজ নামাজের আগে চার রাকাত কাবলাল জুমা। পরে চার রাকাত বাদাল জুমা (সুন্নত নামাজ) আদায় করতে হয়। জোহরের নামাজের মতো ব্যক্তি চাইলে এ সময় অতিরিক্ত নফল নামাজ আদায় করতে পারে। তবে এসব নফল নামাজ জুমার অংশ হিসেবে পড়া হয় না। তা আবশ্যকীয়ও নয় বরং ব্যক্তি তা স্বেচ্ছায় করতে পারে। না করলে তার গুনাহ হয় না। জুমার নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা আবশ্যিক। তা একাকী আদায় করার নিয়ম নেই।

আরও পড়ুন: আজ ৪৯তম বিসিএস পরীক্ষা, হলে প্রার্থীদের মানতে হবে যেসব নির্দেশনা

কোরআনে জুমার নামাজের সময় হলে কাজ বন্ধ করে নামাজের জন্য মসজিদে যাওয়ার প্রতি তাগিদ দেয়া হয়েছে। তবে কোনো ব্যক্তি যদি যুক্তিসংগত কারণবশত (যেমন: খুব অসুস্থ ব্যক্তি) জুমা আদায় করতে না পারে, তবে তার ক্ষেত্রে জোহরের নামাজ আদায় করা নিয়ম। তা ছাড়া কিছু ক্ষেত্রে সুস্থ ব্যক্তির ওপর, যেমন: ভ্রমণকারী (মুসাফির) অবস্থায় জুমার আবশ্যকতা থাকে না এবং সে ক্ষেত্রে জোহরের নামাজ আদায় করলে তা গ্রহণীয় হয়। তবে ভ্রমণকারী চাইলে জুমা আদায় করতে পারে।
 
জুমার নামাজ আদায় না করার শাস্তি
জুমার গুরুত্ব কোরআনের আয়াতের মাধ্যমেই বোঝা যায়। জুমার দিন আজান হলেই সব কাজ ছেড়ে মসজিদে চলে যাওয়ার হুকুম দিয়েছেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। এত গুরুত্বের পরও কেউ যদি জুমার নামাজ ছেড়ে দেয় তার জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে।
 
রাসুল সা. ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি পরপর তিনটি জুমা বিনা ওজরে (কোনো কারণ ছাড়া) ও ইচ্ছা করে ছেড়ে দেবে, আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির অন্তরে মোহর মেরে দেবেন। (তিরমিজি, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)। আর এর পর তারা আত্মভোলা হয়ে যাবে। অতঃপর সংশোধন লাভের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হয়ে যাবে। (মুসলিম)।
 
চার শ্রেণির লোক ব্যতীত জুমার নামাজ ত্যাগ করা কবিরা গুনাহ। চার শ্রেণির লোক হলো: ক্রীতদাস, স্ত্রীলোক, অপ্রাপ্তবয়স্ক বালক, মুসাফির ও রোগাক্রান্ত ব্যক্তি। (আবু দাউদ)।

যে জুমার পরিত্যাগ করে সে ইসলামকে অবমূল্যায়ন করল। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল সা. ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি পরপর তিনটি জুমা পরিত্যাগ করবে, সে ইসলামকে পেছনের দিকে নিক্ষেপ করল। (মুসলিম)।
 
জুমার নামাজ ফরজ না ওয়াজিব
শুক্রবারের দিন যোহরের নামাজের পরিবর্তে জুমার নামাজকে ফরজ করা হয়েছে। জুমার দুই রাকাত ফরজ নামাজ ও ইমামের খুতবাকে যোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। সুতরাং জুমার নামাজ ফরজ।


সর্বশেষ সংবাদ