জুমার দিন কোন সময় দোয়া কবুল হয়
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১২:২৯ PM , আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩০ PM
জুমার দিন মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সম্মানিত একটি দিন। এটি শুধু সপ্তাহের শেষ দিন নয়, বরং মুসলিম উম্মাহর জন্য বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ এবং বরকতময় দিন হিসেবে পরিচিত। এটি মুসলমানদের নিকট সাপ্তাহিক ঈদ হিসেবেও পরিচিত। কোরআন ও হাদিসে জুমার দিনের উল্লেখ এবং এর মর্যাদা সম্পর্কে অনেক বর্ণনা এসেছে, যা এই দিনের বিশেষত্বকে আরও গুরুত্ব প্রদান করে। জুমার দিনের বহু ফজিলত রয়েছে। জুমার দিনে দোয়া কবুল হওয়ার একটি সময় রয়েছে। এই সময়টিতে কোন মুসলিম বান্দা যদি আল্লাহ্র কাছে কোন কল্যাণ চায় আল্লাহ্ তাকে সে কল্যাণ দিয়ে থাকেন। চলুন জেনে নিই কোন সময়ে দোয়া করা উত্তম-
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেন, আবুল কাসেম (কাসেমের পিতা) সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, জুমার দিন এমন একটি সময় রয়েছে কোন মুসলিম বান্দা যদি নামাযে (অর্থাৎ নামাযের অপেক্ষায়) থাকে এবং আল্লাহ্র কাছে কোন কল্যাণ চায় তাহলে আল্লাহ্ তাকে তা দিয়ে থাকেন (বুখারী (৫২৯৫) ও মুসলিম (৮৫২)।
এই সময়টি কখন তা নির্ধারণ করা নিয়ে বহু অভিমত রয়েছে। সর্বাধিক সঠিক অভিমত হচ্ছে দুটি।
১. এ সময়টি হচ্ছে— ইমাম মিম্বরে বসা থেকে নামায শেষ হওয়া পর্যন্ত। এ অভিমতের দলিল হল যা ইমাম মুসলিম (রহ.) তার সহিহ গ্রন্থে (৮৫৩) আবু বুরদা বিন আবু মুসা আল-আশআরি (রা.) থেকে সংকলন করেছেন যে, তিনি বলেন: আমাকে আব্দুল্লাহ্ বিন উমর (রা.) বললেন: আপনি কি আপনার পিতাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে জুমার দিনের সময়টির ব্যাপারে হাদিস বর্ণনা করতে শুনেছেন? তিনি বলেন: হ্যাঁ। আমি তাঁকে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেন: এ সময়টি ইমাম (মিম্বরে) বসা থেকে নামায শেষ হওয়া পর্যন্ত।
২. দ্বিতীয় সময়টি আসরের পর। উভয় অভিমতের মধ্যে এটি সর্বাধিক প্রাধান্যযোগ্য। এটি আব্দুল্লাহ্ বিন সালাম (রা.) ও আবু হুরায়রা (রা.) এর উক্তি এবং ইমাম আহমাদসহ অনেকের অভিমত। ইমাম আহমাদ তাঁর মুসনাদ গ্রন্থে (৭৬৩১) আবু সাঈদ আল-খুদরি (রা.) ও আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: নিশ্চয় জুমার দিন এমন একটি সময় আছে যে সময়টিতে কোন মুসলিম বান্দা আল্লাহ্র কাছে কোন কল্যাণ প্রার্থনা করলে আল্লাহ্ তাকে সেটি দান করেন। সে সময়টি হল আসরের পর।
ইমাম আবু দাউদ (১০৪৮) ও ইমাম নাসাঈ (১৩৮৯) তাঁদের গ্রন্থে জাবের বিন আব্দুল্লাহ্ (রা.) কর্তৃক রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে হাদিস সংকলন করেছেন যে, তিনি বলেন: 'জুমার দিনে ১২টি ঘন্টা রয়েছে। (এর মধ্যে এমন একটি ঘন্টা রয়েছে) যে সময় কোন মুসলিম বান্দা আল্লাহ্র কাছে কোন কিছু চাইলে আল্লাহ্ তাকে সেটি দান করেই থাকেন। অতএব, তোমরা আসরের (নামাযের) পর শেষ সময়ে সেটির সন্ধান কর।'
তবে, ইমাম মিম্বরে বসা থেকে নামায সমাপ্ত হওয়া পর্যন্ত এ সময়টি হওয়ার যে অভিমত রয়েছে সেটার ভিত্তিতেও এর অর্থ এ নয় যে, মুসল্লি খোতবা শুনা বাদ দিয়ে দোয়া করায় মশগুল হবেন। বরং তিনি খোতবা শুনবেন এবং ইমাম দোয়া করাকালে আমীন বললেন এবং নামাযের মধ্যে, নামাযের সেজাদাতে ও সালাম ফিরানোর আগে দোয়া করবেন। এর মাধ্যমে তিনি এ মহান সময়টিতে দোয়ার আমল করতে পারলেন। আর এর সাথে যদি আসরের পর দিনের শেষ সময়েও দোয়া করেন তাহলে সেটাই উত্তম ও ভাল। [সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব]