জুমার দিন সবার আগে মসজিদে যাওয়ার ফজিলত

ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ
ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ  © সংগৃহীত

মুসলমানদের জন্য পবিত্র জুমার দিনকে সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে গণ্য করা হয়। এই দিনটি ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের কাছে সাপ্তাহিক ঈদের দিন হিসেবে পরিচিত। কেননা এই দিনের ইবাদত ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মতোই ফজিলতপূর্ণ। জুমার নামাজের আগেভাবে মসজিদে উপস্থিত হওয়ার ওপর ইসলাম বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে, যা রাসূলুল্লাহ (স:) এর হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।

ইবনে মাজাহ ১০৯৮ নম্বর হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন। অন্য হাদিসে তিনি বলেন, মহান আল্লাহর কাছে জুমার দিনটি ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মতোই শ্রেষ্ঠ দিন। এ দিনটি আল্লাহর কাছে অতি মর্যাদাসম্পন্ন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস নম্বর ১০৮৪)

রাসূলুল্লাহ (সা.) এর বাণী অনুযায়ী, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে, প্রথম প্রহরে মসজিদে যায়, সে যেন একটি উট কুরবানি করার, দ্বিতীয় প্রহরে যাওয়া ব্যক্তি গাভী কুরবানী, তৃতীয় প্রহরে যাওয়া ব্যক্তি একটি ভেড়া কুরবানী, চতুর্থ প্রহরে যাওয়া ব্যক্তি মুরগি এবং পঞ্চম প্রহরে যাওয়া ব্যক্তি একটি ডিম দান করার সওয়াব পায়। এরপর যখন ইমাম খুতবায় ওঠেন, তখন ফেরেশতারা খুতবা শুনতে বসে পড়েন। (সহীহ বুখারী: ৮৮৭; সহীহ মুসলিম: ৮৫০)

এই হাদিস থেকেই বোঝা যায় একজন মুসলমানের জন্য জুমার দিন আগেভাগে মসজিদে যাওয়ার ফজিলত কতটা। 

এছাড়া আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন, হে মুমিনগণ! যখন নামাজের আযান হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (মসজিদে) এগিয়ে যাও এবং  দুনিয়াবি যাবতীয় কাজ বিরত থাক। এটা তোমাদের জন্য অধিক কল্যাণকর যদি তোমরা জানতে। (সুরা জুমা : ০৯)।

জুমার দিনটি একটি পরিপূর্ণ ফজিলতময় দিন। এই দিনে দোয়া কবুল হওয়ার একটি সময় আছে, কোনো মুসলিম যদি সেই সময়টা পায়, আর তখন যদি সে দোয়া করে আল্লাহ তাঁর দোয়া কবুল করবেন। হাদিসে এই সময়টা আছরের শেষ সময় উল্লেখ করা হয়েছে। (আবু দাউদ: ১০৪৮, নাসাঈ : ১৩৮৯)

এই দিনে আল্লাহ তায়ালা আদম (আ.)-কে সৃষ্টি, এই দিনেই জান্নাতে প্রবেশ করানো এবং এই দিনেই তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে। এমনকি জুমার দিনেই কিয়ামত সংঘটিত হবে বলে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। এছাড়াও জুমার দিনে কিংবা রাতে যে মৃত্যুবরণ করবে, নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা তাঁকে কবরের ফেতনা থেকে বাঁচিয়ে রাখবেন। (তিরমিজি : ১০৯৫; মিশকাত : ১৩৬৭; আহমদ : ১১/১৪৭)

সুতরাং এই দিনটি মুসলমানদের কাছে শুধু ইবাদত পালনের জন্য নয়, আত্মিক উন্নতি, দোয়া এবং আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের মহাসুযোগ।


সর্বশেষ সংবাদ