পূর্ণ মেয়াদেও শেষ হয়নি খুবির মেডিকেল সেন্টার নির্মাণ কাজ

খুবির মেডিকেলের নির্মাণ কাজ
খুবির মেডিকেলের নির্মাণ কাজ   © টিডিসি ফটো

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত শহিদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরী চিকিৎসা কেন্দ্র নির্মাণের কাজ গেল মার্চে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু চুক্তির মেয়াদ পেরিয়েও মাত্র ৫০ থেকে ৫৫ শতাংশ কাজ হয়েছে। ২০১৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর সোয়া ৬ কোটি টাকা বাজেটে মেডিকেল সেন্টারটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রকল্পের মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও সিংহভাগ কাজ এখনো বাকি রয়েছে। ভবনের নিচ তলার কাজ আংশিক সম্পন্ন হয়েছে, তবে দোতলার ছাদ, দেয়াল নির্মাণ, রঙ, পলেস্তরার ও ভেতরের নানান কাজ এখনো বাকি রয়ে গেছে।  

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এক হাজার বর্গমিটার আয়তনের এ মেডিকেল সেন্টারটি প্রথম পর্যায়ে চারতলা ভিত্তির ওপর দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হবে। ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘এফটি জেডটি এন্ড টিএমএস (জেভি)’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্পটির কাজ দেয়। প্রকল্প অনুযায়ী চলতি বছরের ৩১ মার্চ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার কথা ছিল। 

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, করোনার কারণে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় এমন পরিস্থিতি এবং বাজারে রড-সিমেন্টের দামের লাগামহীন ওঠা-নামা কাজের গতিকে ব্যাহত করেছে। এছাড়া নতুন করে পাইলিং, লেক থেকে সরিয়ে মসজিদের দিকে সম্মুখ অংশ রেখে নতুন নকশা করতে বেশ সময় নষ্ট হয়, যা মেয়াদকালীন কাজ সম্পন্ন না হওয়ার পেছনের কারণ।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোবারক হোসেন নোমান বলেন, আগের মেডিকেল সেন্টার থেকেও আমরা পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা পাইনি। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত মেডিকেল সেন্টার হবে এটা দেখে খুশি হয়েছিলাম। ঠিকাদারদের গড়িমসির কারণে মেয়াদ পেরোলেও কাজ শেষ হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত আরও বেশি নজরদারি করে দ্রুত কাজ শেষ করা। 

খুবির প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাসানুজ্জামান বলেন, দ্রুততম সময়ে কাজ শেষ করার জন্য আমরা সর্বদা চেষ্টা করে যাচ্ছি। মূলত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে কাজে দেড়ি হয়েছে। ঠিকাদারদের সাথে বারবার আলাপ হচ্ছে। দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ কামরুল ইসলাম জানান, ইতিমধ্যে এক তলার কাজ হয়ে গেছে। বাকি কাজ দ্রুত করার জন্য আমরা সার্বক্ষণিক চেষ্টায় আছি। করোনার প্রকোপ, অস্বাভাবিকভাবে রড-সিমেন্টের দাম বৃদ্ধি, ঠিকাদারদের গড়িমসি, মেডিকেল সেন্টারের নকশায় পরিবর্তন আনা মূলত এসব কারণে কাজে দেড়ি হয়েছে। 

আরেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সামিউল ইসলাম বলেন, করোনার কারণে প্রায় দেড় বছর কাজ বন্ধ ছিল। এ সময় শ্রমিকও পাওয়া যায়নি। আবার প্রথমে মেডিকেল সেন্টারটির সম্মুখভাগ লেকের দিকে ছিল। সেটা পুনরায় নকশা করে মসজিদের দিকে নেওয়ায় কিছুটা সময় ব্যয় হয়। এছাড়া প্রথম পাইলিং টেস্ট ফেল করে এবং নতুন করে পাইলিং-এর কাজ করতে আরও সাত মাস লেগে যায়। এসব কারণেই সময়ের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করা যায়নি। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক খান গোলাম কুদ্দুস বলেন, করোনার কারণে মেডিকেল সেন্টারের কাজ সময়মত করা সম্ভব হয়নি। এ কারণেই দীর্ঘদিন কাজ স্থগিত ছিল। এতে কাজে ধীরগতি হয়েছিল। বাকি কাজ যাতে দ্রুত শেষ করার বিষয়ে প্রশাসন তৎপর রয়েছে। 

উল্লেখ্য, বুধবার (২০ এপ্রিল) স্টিয়ারিং কমিটির (পিএসসি) সভায় ৩৩৫ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় সাপেক্ষ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) অধিকতর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের মেয়াদ (প্রথম সংশোধিত) বাস্তবায়নে দুই বছর বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছে। যে প্রকল্পের মধ্যে নির্মাণাধীন মেডিকেল সেন্টারও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সভায় করোনা মহামারী এবং উদ্ভূত অন্যান্য পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করে প্রকল্পভুক্ত অবকাঠামোর কাজ সম্পন্নে ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়াই আগামী ২ অর্থবছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence