বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

অনাপত্তি পত্রে আপত্তি, বিপাকে শিক্ষকরা

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জুনিয়র’ পদে যোগদানের জন্য আবেদন করতে চাইলেও সেটি পারেন না বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মর্যাদা’ ক্ষুন্ন হওয়ার কথা বলে অনাপত্তি পত্র দেয়া হয় না তাদের। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, সিনিয়র পদ থেকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে জুনিয়র পদে যোগদান তাদের জন্য স্বস্তিকর নয়। 

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে আবেদন করতে না পেরে হতাশা প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকজন। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চাওয়া শিক্ষকরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। তারা পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক ও সহকারী অধ্যাপক পদে যেতে অনাপত্তি পত্র চেয়েছিলেন। তাদের সেটি দেয়া হয়নি।

আরও পড়ুন- ববি ভর্তিতে ফল পরিবর্তনের গুঞ্জন, প্রতারকচক্রের ধোকা বলছে কর্তৃপক্ষ

শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনাপত্তি পত্র না দেয়ার কোনো লিখিত নিয়ম বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নেই। মৌখিকভাবে এটি কার্যকর আছে। আগের ভিসি অধ্যাপক ড. এসএম ইমামুল হকের সময়ে এ নিয়ম জারি করা হয়েছে বলে শিক্ষকরা জানান। তারা বলেন, অনাপত্তি পত্র না দেয়া সংবিধানের ২৬ নং অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন। সংবিধানের ওই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, মৌলিক অধিকারের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ কোনো আইন করা যাবে না। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক জানান, কমপক্ষে দুই বছর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে হবে মর্মে চুক্তি করে নিয়োগ পান শিক্ষকরা। নির্ধারিত সময় পূর্ণ করার পরও তাদের জুনিয়র-সিনিয়র পদের হিসাব দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অনাপত্তি দেয় না। শিক্ষকরা বলেন, এখানে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে তিন বছর থাকার পর অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে গেলেও তো আমার অভিজ্ঞতা গণনা করা হবে। তারা বলেন, নিজের ক্যাম্পাসে সবাই যেতে চায়। ব্যক্তির পছন্দকে মূল্য দিতে হবে। 

এ নিয়মের কারণে আগের ভিসির সময় অনেক শিক্ষককে ভুগতে হয়েছে বলে জানান শিক্ষকরা। তারা বলেন, অনেকে অনাপত্তি পত্র না নিয়েও পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু ভিসি বোর্ডে প্রভাব বিস্তার করে তার নিয়োগ আটকিয়ে দিয়েছেন। পরে ওই শিক্ষকরা ক্যাম্পাসে ফিরে আসলে তাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করা হয়নি। অনেকের পদোন্নতি আটকে দেয়া হয়েছে। এ নিয়মের কারণে অনেক শিক্ষক হতাশ হয়ে পড়েছেন জানিয়ে তারা বলেন, শিক্ষকদের অনেকেই এখন উচ্চ শিক্ষার জন্য বাইরে গিয়ে আর ফিরে না আসার চিন্তাও করছেন। 

আরও পড়ুন- সশরীরে ক্লাস শুরু করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ( অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীন বলেন, অস্থায়ী পদে চাকরিরত কোন শিক্ষক যদি অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিতে চান তাহলে তিনি চাইলেই যেতে পারবেন। কিন্তু আমাদের স্থায়ী পদে যদি কোন শিক্ষক চাকরি করেন তাহলে নিয়োগ বিধি অনুসারে তাকে কমপক্ষে দুই বছর এখানে চাকরি করতে হবে। আগে তিন বছর ছিল। এখন সেটা দুই বছর করা হয়েছে। তাও আমাদের অভ্যন্তরীণ শিক্ষকদের জন্য। কিন্তু নতুন কোন শিক্ষক যদি হয় তবে তাকে তিন বছরই পূরণ করতে হবে।

তিনি বলেন, স্থায়ী পদের কোন শিক্ষক যদি অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে নিম্ন পদের চাকরিতে যেতে চান তাহলে তাকে অনাপত্তি পত্র দেয়া হয় না। কিন্তু যদি উচ্চ পদে যেতে চান বা সমপদে যেতে চান তাহলে চাকরির সময় তার সঙ্গে যে চুক্তি আছে তা পূরণ করে যেতে পারেন। এটা আমাদের লিখিত নিয়ম না কিন্তু এটা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য। আর যদি চুক্তির শর্তপূরণ না করেন তাহলে চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে যেতে পারবেন। রেজিস্ট্রার আরও বলেন, কেউ যদি এখান থেকে সহকারী অধ্যাপক পদ ছেড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে জয়েন করেন তাহলে সেটা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য স্বস্তিকর নয়।

শিক্ষকদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে শিক্ষক সমিতির নব নির্বাচিত সভাপতি সহকারী অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল কাইয়ুম বলেন, এটা শিক্ষকদের একটি মৌলিক দাবি। আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর শিক্ষকদের এ দাবিসহ সব ন্যায্য দাবি পূরণে আপোসহীন থাকবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মোঃ ছাদেকুল আরেফিন বলেন, সমমানের পদে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চাইলে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো বাধা নেই। তবে জুনিয়র পদে চাইলে নিরুৎসাহিত করি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence