সিটি কর্পোরেশনের দখলেই জবির খেলার মাঠ, হতাশ শিক্ষার্থীরা

জবির খেলার মাঠ
জবির খেলার মাঠ  © ফাইল ছবি

পুরান ঢাকার ধূপখোলায় দৃষ্টিনন্দন খেলার মাঠটি অবশেষে দখল করেছে ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশন। তাদের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনায় খেলার মাঠকে সংকীর্ণ করে সেখানে হচ্ছে মার্কেট ও পার্ক। সিটি কর্পোরেশন ইতোমধ্যে সেখানে গ্যালারিসহ খেলার মাঠ, শিশু কর্নার ও পশ্চিম পাশে একটি বহুতল মার্কেট নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করে দিয়েছে।

এরশাদ সরকার আমলে যে মাঠ বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছিল সেই মাঠে এখন ডিএসসিসির মার্কেট নির্মান মানতে পারছেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিকেট টিমের ১৩ ব্যাচের খেলোয়াড় সাজ্জাদুল ইসলাম সুকর্ণ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এরিয়ায় আমাদের কোন খেলার মাঠ নেই। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকেই এই মাঠেই খেলে আসছি আমরা।

তিনি বলেন, ধুপখোলা মাঠ ছাড়া তো আমাদের আর কোথাও খেলার জায়গা নেই। শেষ পর্যন্ত এটাও না থাকলে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিপূর্ণতাই হারাবে। আমি জানিনা পরবর্তীতে আমরা খেলবো কোথায়? আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও যথাযথ কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।

মাঠ দখল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের সাথে বৈঠকও হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ কর্মসূচী, মানববন্ধন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়ে আসলেও সিটি কর্পোরেশন তাদের পরিকল্পনা থেকে সরে যায়নি। এছাড়াও ধূপখোলার স্থানীয় জনগন খেলার মাঠ রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন সমাবেশ করলেও আশার আলো দেখেনি কেউই।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. ইমদাদুল হক বলেন, আমরা সিটি কর্পোরেশনের সাথে মিটিং করেছি। মাঠের বিষয়ে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরেছি। আমাদের সাথে কথা বলার পর তারা মাঠে বসানো খুঁটি তুলে ফেলছে। তবে মাঠের এক পাশে মার্কেট হবে ফলে মাঠ ছোট হয়ে যাবে। এটাকে সংস্কার করে ক্রিকেট, ফুটবল, বাস্কেট বলসহ বিভিন্ন খেলার জন্য উপযোগী করে তুলবে।

জবি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী তৌসিফ মাহবুব সোহান বলেন, এরশাদ আমলে যে মাঠটা বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যবহারের জন্য দেয়া হয়েছে সেখানে এখন মার্কেট নিমার্ণের পরিকল্পনা করেছে সিটি করপোরেশন।

তিনি বলেন, জানি না কোন লাভের চিন্তা থেকে তারা এই পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। শুধু যারা এই পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন তাদের সাবধান করে দিয়ে বলতে চাই শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না। শিক্ষার্থীরা জানে কিভাবে তাদের মাঠ দখলে রাখতে। এর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছেও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান রইল।

জানা যায়, সিটি কর্পোরেশন ঢাকার গেন্ডারিয়া এলাকায় ধূপখোলায় তিনটি মাঠকে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের আমলে তিনভাগে ভাগ করা হয়। তার এক ভাগ দেওয়া হয় তৎকালীন জগন্নাথ কলেজকে। আর একটি অংশ ‘ইস্ট অ্যান্ড খেলার মাঠ’ নামে একটি ক্লাবের কর্তৃত্বে রয়েছে। অপর অংশটি রাখা হয় জনসাধারণ খেলার জন্য।

এরপর থেকে এটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ হিসবে পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে এটি কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য ব্যবহার করে থাকে। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে তাদের বিভিন্ন টুর্নামেন্ট পরিচালনা ও শরীর চর্চা করে থাকে। এই মাঠেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন হয়েছিল।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence