শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের
- জবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২২ মে ২০২১, ০৮:১৩ PM , আপডেট: ২২ মে ২০২১, ০৯:৩৮ PM
মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের ফলে প্রায় দেড় বছর ধরে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। অন্যান্য সবকিছু সীমিত পরিসরে খোলা থাকলে বন্ধ রাখা হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সর্বশেষ শিক্ষা মন্ত্রণালয় আগামী ২৯ মে পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে সারাদেশের শিক্ষার্থীরা একই সাথে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে আগামী সোমবার (২৪ মে) সারাদেশে মানববন্ধনের ডাক দিয়েছেন। সেই সাথে একাত্মতা প্রকাশ বা যৌক্তিক বলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে আশু সিদ্ধান্ত নেওয়া এখন সময়ের দাবি, কিন্তু সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শতভাগ স্বাস্থের নিরাপত্তার বিষয়টাও আমাদের মাথায় রাখা উচিত। শিক্ষক, কর্মচারী, কর্মকর্তাদের এরই মধ্যে শতভাগ করোনা টিকা নিশ্চিত করা হয়েছে, এখন শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার ব্যাপারে সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে খুব দ্রুত সময়ে ক্যাম্পাস খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হবে।
আরও পড়ুন: আরও একমাস বাড়তে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম জাহিন বলেন, আমরা শুরু থেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করার দাবি জানিয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসের রোস্টারিং পদ্ধতি, আবাসন ও পরিবহন সমস্যা এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টিকাদানের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকা জরুরি ছিল। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সমস্ত পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে কোনো প্রকার অগ্রগতি নেই। আমরা দাবি জানাচ্ছি, দ্রুত রোডম্যাপ ও টিকাদান সেরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।
জবির বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ কে এম মনিরুজ্জামান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা থেকে দূরে সরে গেছে। অনলাইনে ক্লাস চালিয়ে গেলেও পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি এখনও, ফলে একটা জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার কথা একাধিকবার ভাবলেও আছে নানা জটিলতা। তাই শিক্ষার্থীদের সেশনজট থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
জবির আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সরকার আলী আককাস দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষার্থীদের বেদনা আমরা বুঝি। আমরা অনলাইনে ক্লাস নিলাম দুইটা সেমিস্টারের কিন্তু সেটার কোন বেনিফিট নাই। এমন তো হয় না যে আমরা অনলাইনে ক্লাস নিয়েই যাবো। আমি মনে করি এর আগে আমরা স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা যেভাবে নিলাম সেভাবে শারিরীক দুরত্ব বজায় রেখে স্বল্প সময়ে শিক্ষার্থীদের এই পরীক্ষাগুলো নেওয়া উচিৎ। তাহলে সেশনজটের থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: ওপেন বুক পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেবে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়
বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রবীন্দ্রনাথ মন্ডল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আসলে করোনাকালে সব থেকে বড় ক্ষতিটা হয়ে গেল শিক্ষা খাতে। কিন্তু করোনার বিপক্ষে সরকারেরও তো কিছু করা সম্ভব না। আমরা অনলাইনে যে ক্লাস নিলাম এটা আসলে অতটা ফলপ্রসূ না, যতটা স্বশরীরে হয়। আমিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পক্ষে। শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়ার পক্ষে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি আব্দুল্লাহ আলম নূর বলেন, শিক্ষার্থীদের যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। শিক্ষার্থীদের তো ক্ষতি হয়েছেই সেক্ষেত্রে তাদের ক্ষতির পরিমাণটা কমাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দ্রুত পরীক্ষা নেওয়া উচিৎ।