সাপ আতঙ্কে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ফটো

প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের জন্যে দীর্ঘদিন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) বন্ধ থাকায় ক্যাম্পাসে বেড়েছে ঝোপ-ঝাড়। পরিচ্ছন্নতার অভাবে যেন সাপের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে ক্যাম্পাসটি। আবাসিক হল, রাস্তাঘাটসহ ক্যাম্পাসজুড়ে দেখা মিলছে বিষধর সাপের আনাগোনা। ইতিমধ্যেই একটি গোখরা ও একটি কাল কেউটে সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। এতে আবাসিক হলসহ রাস্তাঘাটে চলাচল অনেকটা অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। এ সাপ আতঙ্কে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ক্যাম্পাসের রাস্তাগুলোর দু’ধার দিয়ে আশঙ্কাজনকহারে বেড়েছে ঝোপ-ঝাড়। বিভিন্ন স্থানে রয়েছে আবর্জনার স্তুপ। এছাড়াও আবাসিক হলসমূহে, মফিজ লেক কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন এলাকা, একাডেমিক ভবনগুলোর আশেপাশে ও শিক্ষকদের আবাসিক এলাকাসহ সর্বত্র ভরে উঠেছে লতাপাতা, আগাছা আর ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে।

সর্বত্র ঝোপঝাড়ে পূর্ণ থাকায় বিষাক্ত সাপ ঝোপঝাড় থেকে বেরিয়ে আসছে প্রতিনিয়ত। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে এসব বিষাক্ত সাপ। বিভিন্ন হলের আনাচে কানাচে ও সিঁড়িতে সাপের খোলস পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এমনকি রুমের মধ্যেও দেখা মিলছে সাপের খোলস। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ২০টিরও অধিক সাপ মারা পড়েছে।

ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত আনসার সদস্যরাও প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকেন বলে জানিয়েছেন তারা। এদিকে আবাসিক হলসমূহ বন্ধ থাকলেও প্রতিদিনই শিক্ষার্থীরা হলে আসেন বই-পুস্তকসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিতে। কিন্তু দীর্ঘদিন রুম গুলো বন্ধ থাকায় ও হলের ভিতর-বাইরে সাপ আতঙ্কে রুমে প্রবেশ করতে ভয় পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘কয়েকদিন আগে হল থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিতে ক্যাম্পাসে যাই। আগের তুলনায় হলের চারিদিকে ঝোপঝাড় অনেক বেড়েছে। হলের ভিতরে বিভিন্ন স্থানে ও সিঁড়িতে অসংখ্য সাপের খোলস পড়ে থাকতে দেখা যায়। এটা রীতিমতো ভয়ের কারণ। আশঙ্কা জাগে না জানি কখন হুট করে সাপ বেরিয়ে আসে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল আলিম বলেন, ‘ক্যাম্পাসে পা বাড়ালেই সাপের আতঙ্ক। যেখানে সেখানে দেখা মিলছে গোখরো, কেউটে ও কালাচ সহ নানা বিষধর সাপ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে যেকোনো সময় সাপের দংশনে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে সাপের বংশবৃদ্ধি ঘটেছে। অনুকূল পরিবেশে সেগুলো সহজে বেড়ে উঠছে, যেটার ফলাফল প্রত্যেকের জন্য ভয়াবহ। সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া জরুরী।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘সাপের উপদ্রব রোধে দ্রুত ঝোপ-ঝাড় অপসারণ করা হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে ক্যাম্পাসের লাইটিং সিস্টেম মেরামত করা হবে। সাপে কাটার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত প্রধান চিকিৎসক ডা. এস এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সাপে কাটার পর প্রাথমিক চিকিৎসার জন্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ইনজেকশনের ব্যবস্থা রয়েছে। যদি কাউকে কামড় দেয় তাহলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা গ্রহণ করার অনুরোধ করেন তিনি।’


সর্বশেষ সংবাদ