সনদ জালিয়াতি করে শিক্ষকতা জবির পোগোজ স্কুলে

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ  © ফাইল ফটো

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. শরিফুল আলম স্নাতকোত্তরের সনদ জালিয়াতি করে শিক্ষকতা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে ২০০৪ সালের বিএড সনদ ও দারুল ইহসান ট্রাস্ট থেকে ইংরেজি বিষয়ের উপর স্নাতকোত্তর সনদ জালিয়াতি করে দীর্ঘদিন ধরে পোগোজ স্কুলে শিক্ষকতা করে আসছেন বলে অভিযোগে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, উক্ত দুটি সনদের সত্যতা নিশ্চিত করেনি ঢাকা মেট্রোপলিটন টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ও দারুল ইহসান ট্রাস্ট। এছাড়াও একই স্কুলের খণ্ডকালীন এক সহকারি শিক্ষককে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এ অভিযোগগুলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখছে বলে জানা গেছে।

এ সংক্রান্ত নথি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের হাতে এসেছে। তা থেকে এবং অনুসন্ধানে জানা যায়, পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. শরিফুল আলম ঢাকা মেট্রোপলিটন টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে ২০০২ সালে দ্বিতীয় শ্রেণীতে বিএড ডিগ্রি লাভ করেন। কিন্তু তার নামে ২০০৪ ও ২০১৪ সালে দুটি সনদ ইস্যু করা হয়।

এ নিয়ে অভিযোগ উঠলে কর্তৃপক্ষ তার সনদের সত্যতা জানতে চাইলে হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে জানানো হয়, তার সনদটি ২০০৪ সালে নয়, এটি ২০১৪ সালে ইস্যুকৃত। এছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক বন্ধ করে দেয়া দারুল ইহসান ট্রাস্ট থেকে ২০১১ সালে ইংরেজি বিষয়ে উপর করা একটি স্নাতকোত্তর সনদ স্কুলে প্রদান করেন।

তবে তার সনদ নিয়ে একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করলে এর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য দারুল ইহসান ট্রাস্টের কাছে চিঠি পাঠায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। গত ১৮ জানুয়ারি দারুল ইহসান ট্রাস্ট্রের ফিরতি চিঠিতে সনদের ব্যাপারে কোন সত্যতা নিশ্চিত করা হয়নি। এমনকি ওই সনদ তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইস্যুকৃত নয় বলে জানানো হয়।

অভিযোগ রয়েছে, স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. শরিফুল আলম একই স্কুলের খণ্ডকালীন সহকারী শিক্ষক প্রভাত চন্দ্র বণিককে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছেন। এ বিষয়ে প্রভাত চন্দ্র বণিক পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুলের সভাপতি বরাবর একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

অভিযোগপত্রে তিনি বলেন, ‘শরিফুল আলমের বিরুদ্ধে তার অন্যায় কাজকর্মের প্রতিবাদে অধিকাংশ শিক্ষক পোগোজ স্কুলের সভাপতি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ড. কামালউদ্দিন আহমেদকে অভিযোগ জানাই। এতে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে কোনো নোটিশ ছাড়াই আমাকে বিদ্যালয়ে আসতে নিষেধ করেন।’

তিনি বলেন, ‘এর কিছুদিন পর তিনি আমাকে ফোন করে বলেন, চাকরি করতে চাইলে আমাকে টাকা দেন, আমি কমিটির কাছে আপনার বিষয়ে সুপারিশ করবো। আমি তার কথায় রাজি না হওয়ায় অদ্যাবধি তিনি আমাকে স্কুলে আসতে দিচ্ছেন না। এছাড়াও ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে আমাকে কোনো বেতন প্রদান করা হয় না। কেন বেতন প্রদান করা হয় না এ ব্যাপারে কোন জবাব বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাকে দেয়নি।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. শরিফুল আলম বলেন, ‘আমি দারুল ইহসান থেকে সনদ নিয়েছি। এরপর সরকার এ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। আমি এই সনদ আর ব্যবহার করি না। এটাকে কেনো জাল সার্টিফিকেট বলছে, তাহলে আমাকে দারুল ইহসানে খবর নিতে হবে।’

 পোগোজ স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনির হোসেন এ বিষয়ে বলেন, ‘সনদ জাল কিনা তা তো আমি জানি না। তবে ওইটা যে দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটির সনদ না, এটা লেখা আছে। এটা যাচাই বাছাই করবে প্রশাসন। ট্রেজারার স্যারের কাছে গেছে, তিনি খতিয়ে দেখছেন।’

এ বিষয়ে পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুলের সভাপতি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ড. কামালউদ্দিন আহমেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পোগোজ স্কুলের সব অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। আমাকে সময় দাও, দেখো আমি কি করি।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence