হল না খুলে ইবিতে পরীক্ষা, নারী শিক্ষার্থীরা বিপাকে
- রাকিব হোসেন, ইবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২১, ০৮:২০ AM , আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২১, ০৮:২০ AM
করোনাকালে সেশনজট নিরসনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণের অনুমতি দেয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কতৃপক্ষ। এ পরীক্ষা গ্রহণের ঘোষণায় উচ্ছ্বসিত হলেও করোনার অজুহাতে আবাসিক হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছে ছাত্রীরা।
জানা গেছে, ক্যাম্পাসের পাশ্ববর্তী এলাকায় রয়েছে মেয়েদের মেসের স্বল্পতা। সেই সাথে সেসব মেসে রয়েছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও নিরাপত্তার অভাব। এছাড়া মেসের মালিকরাও বাড়িয়েছে ভাড়া যা অন্য সময়ের থেকে দিগুন। এ ভাড়া বহন করা অনেকেরই আর্থিক সক্ষমতার বাইরে।
ছাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ক্যাম্পাস খোলা অবস্থায় তাদের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই হলে অবস্থান করতো। এদের মধ্যে অনেকেই টিউশনি করে মাসিক খরচ চালাতো। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে টিউশনিহীন সময় কাটতে হচ্ছে তাদেরকে। এসময় হল বন্ধ থাকায় মেসের অতিরিক্ত ভাড়া ও আনুষাঙ্গিক খরচ চালানো যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে।
গত ২২ ডিসেম্বর ১১৯তম একাডেমিক কাউন্সিল সভায় হল বন্ধ রেখে অনার্স শেষ বর্ষ ও মাস্টার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা সিন্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ পরীক্ষার ঘোষণার পর শিক্ষার্থীদের মাঝে আবাসিক হল খোলার দাবি ওঠে এবং হল খোলা না রেখে পরীক্ষা নেয়ার বিষয়কে অযৌক্তিক দাবি করে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়।
জানা যায়, পরীক্ষা গ্রহণের ঘোষণার পর ইবি ছাত্র ইউনিয়ন সংসদ ও শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল খোলার দাবি জানায়। আবাসিক হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেয়ার বিষয়কে অযৌক্তিক দাবি করেন ছাত্র ইউনিয়ন সংসদ। এ দাবিতে সমাবেশ ও করে তারা। শিক্ষার্থীরা বলেছেন, কেবল স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরাই যেহেতু পরীক্ষা দেবেন, সেহেতু হল খুললেও সামাজিক দূরত্ব রেখেই সবাই থাকতে পারবেন। এছাড়া হলে থাকার সুযোগ না পেলে যদি মেসে-ই থাকতে হয়, সেটি অনেকের জন্যই আর্থিক সক্ষমতার বাইরে যাবে।
হল না খুলে পরীক্ষা প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ছাত্রীরা। এ বিষয়ে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আখি আক্তার জানান, আমরা যারা হলে অবস্থান করে আসছিলাম তাদের জন্য মেসে থাকা কষ্টকর। এখানে সকল সুযোগ সুবিধার অভাব। টেনশনে থাকা লাগে। এসব মেসে খরচও বেশি যা আমাদের আর্থিক সক্ষমতার বাইরে।
আরেক শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার বলেন, হল না খুলে পরীক্ষায় দারুণ বিপাকে পড়তে হবে। কারণ এক দুই মাসের জন্য অনেকে মেস ভাড়া দিতে চায় না এবং রয়েছে মাসের সল্পতা। এছাড়া মেসে থাকার কতটুকু নিরাপত্তা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। সুতরাং হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেয়া অযৌক্তিক।
এ বিষয়ে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. সেলিনা নাছরিন বলেন, প্রশাসক হিসেবে বলবো প্রশাসনের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করা উচিত। তবে একজন অবিভাবক হিসেবে চাই অবশ্যই পরীক্ষা হল খুলে নেওয়া হোক। কারণ বাইরে থাকলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিটা আরও বেশি এবং নিরাপত্তা কম। এক্ষেত্রে হলে বাড়তি নিরাপত্তা পাওয়া যায়।