নবান্ন ও মেহেদী উৎসবে মেতেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
- ইবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৪০ PM
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অভয়ারণ্যের উদ্যোগে আয়োজিত নবান্ন ও মেহেদি উৎসবে মেতেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে বিকাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা প্রাঙ্গণে 'আরশীনগর ও কন্টেন্ট লাগবে' এর পৃষ্ঠপোষকতায় এই উৎসব পালিত হয়।
এদিন, প্রকৌশল অফিসের পার্শ্ববর্তী অভয়ারণ্যের নিজস্ব বাগানে উৎপাদিত ৬৩ টি মেহেদী গাছ থেকে একদম প্রাকৃতিক পাতা আহরণ করে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের হাতে মেহেদীর আর্ট, হেয়ার প্যাক, কলকা দেওয়া, আলতা দিয়ে দেয় অভয়ারণ্যের সদস্যরা। এদিন প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীর হাত মেহেদী দিয়ে রাঙিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও নবান্ন উৎসবে নকশী পিঠা, তুলি পিঠা, পাটিসাপটা, ঝাল ও মিষ্টি পিঠার ও নতুন চালের পায়েসের আয়োজন করা হয়।
আয়োজকরা জানান, এবারের উৎসব মূলত মেহেদী উৎসব ও নবান্ন উৎসব - দুটি ভাগে বিভক্ত। মূলত আধুনিক যুগের শিক্ষার্থীদের মাঝে বাংলার সংস্কৃতি তুলে ধরার জন্য এই আয়োজন। হেমন্তের অগ্রহায়ণ মাসে গ্রামবাংলার প্রতিটি ঘরে যে নবান্ন উৎসব করা হয় সেই আদলেই এই উৎসব আয়োজন করা হয়েছে। অগ্রহায়ণে নতুন ধানের চাল উঠার পরে সেই চালের গুঁড়া দিয়ে যেমন হরেকরকম পিঠাপুলির আয়োজন করা হয় ঠিক সেই আদলেই এই উৎসবেও রাখা হয়েছে নানান পিঠার সমাহার।
পাশাপাশি এই আয়োজনে বাঙালি সংস্কৃতির আরো একটি অংশকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। ছোটবেলায় অনেকেই মেহেদি নিতাম কিন্তু কালের ক্রমান্বয়ে সেটা হারিয়ে যেতে বসেছে। আলতা, কলকা দেওয়ার রীতিও আগের মতো আর নেই৷ আজকালকার বাজারে অনেক কেমিক্যাল মিশ্রিত মেহেদী ব্যবহার করার ফলে মেহেদীর যে প্রকৃত শুদ্ধতা তা হারিয়ে যেতে বসেছে। সেই প্রকৃত শুদ্ধতা যেন সবাই নিতে পারে এজন্য এই উৎসবের আয়োজন।
উৎসবে আগত শিক্ষার্থীরা বলেন, শুনেছি এবারই প্রথম ক্যাম্পাসে এভাবে বড় আয়োজন করে নবান্ন উৎসব ও মেহেদি উৎসব পালিত হচ্ছে। ক্যাম্পাসে ধারাবাহিক ভাবে এরকম সুন্দর উৎসব আয়োজন পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত। চারপাশে একটা উৎসব উৎসব আমেজ বিরাজ করছে। ক্যাম্পাসে এসেই এরকম আয়োজন পাওয়ার অনুভূতি আসলে ভাষায় ব্যক্ত করা যাবে না।
অভয়ারণ্যের সভাপতি নাঈমুল ফারাবী বলেন, নবান্ন উৎসবের ভেতরে আমাদের অন্তর্নিহিত শেকড়ের সন্ধান রয়েছে কিন্তু আজ যান্ত্রিকতার ভিড়ে আমরা আমাদের শিকড়কে ভুলে যেতে বসেছি। দেশীয় চর্চা ভুলে গেলে আমরা জাতিগতভাবে অনেকটাই পিছিয়ে যাব। এজন্য অগ্রহায়ণে নতুন ধানের প্রথম পিঠা খাওয়া যে আনন্দ, ঘটা করে সেটা উদযাপন করার যে ব্যাপারটা সেটাই আমরা এখানে তুলে আনার চেষ্টা করেছি। আমরা নিজেদের সংস্কৃতি লালন করি এবং অন্যদেরও উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করি।
তিনি আরো বলেন, আমরা নিজস্ব বাগানে উৎপাদিত মেহেদী পাতা দিয়ে মেহেদী উৎসব আয়োজন করেছি। মেহেদী উৎসব এই বিশ্ববিদ্যালয়কে রাঙ্গিয়ে দেয়, একসাথে অনেক মেয়ে একই দিনে মেহেদী পরছে - এটা একটা অনন্য সৌন্দর্য বহন করে। এছাড়াও আমরা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক মেহেদী ব্যাবহার করছি যেটা শুদ্ধতার প্রতীক বহন করে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহনের মাধ্যমেই আমাদের আয়োজন পূর্ণতা পাবে বলে আশাবাদী।