কুবি শিক্ষার্থী বাসে শ্লীলতাহানি-ছিনতাইয়ের শিকার, গ্রেপ্তার ২

গ্রেপ্তার দুজন
গ্রেপ্তার দুজন  © টিডিসি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী চট্টগ্রামগামী সেন্টমার্টিন পরিবহনের বাসে শ্লীলতাহানি ও ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন। এ সময় অভিযুক্তরা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে বাস থেকে ফেলে দেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনের মধ্যে দুজনকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।

আটক দুজনের একজনের নাম মো. আলী হোসেন। তার গ্রামের বাড়ি বরুড়া। অন্যজন হলেন মোহাম্মদ আলী। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠী সূত্রে জানা যায়, ওই শিক্ষার্থী আলেখারচর থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার উদ্দেশে সেন্টমার্টিন বাসে উঠেন। এ সময় বাসে কোনো যাত্রী না থাকায় পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড যাওয়ার পথে গাড়িতে থাকা হেলপার ও তার সহযোগী আরও দুইজন তার হাত-পা বেঁধে পেলেন এবং তার গলায় থাকা সোনার চেইন ছিনিয়ে নেন। এ সময় শ্লীলতাহানির পাশাপাশি তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাস থেকে একজনকে পড়ে যেতে দেখে তারা বাস আটকান। এ সময় গাড়িতে থাকা পাঁচজনের মধ্যে তিনজন পালিয়ে যান। বাকি দুজনকে আটক করে রাখেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এলে অভিযুক্তদের মারধর করা হয়। স্থানীয়রা পুলিশকে কল দিলে তারা এসে দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে নিয়ে বিচার করতে চান, এমনটা বললে পুলিশের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়।

আরও পড়ুন: ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ‘খ’ ইউনিটের প্রশ্ন দেখুন এখানে

শিক্ষার্থীরা জানান, ভুক্তভোগীর কল পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে আসেন এবং অভিযুক্তদের বিচার চান। তবে পুলিশ প্রশাসন সঠিক কোনো সিদ্ধান্ত দিতে না পারায় তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় অভিযুক্তদের বহনকারী পুলিশের গাড়িও শিক্ষার্থীরা আটকে রাখেন। পরে সেন্টমার্টিন পরিবহনের দুটি বাস বিশ্ববিদ্যালয়ে আটকে রাখা হয়।

শিক্ষার্থীদের অবরোধের ফলে রাস্তার দুই দিকে প্রায় ২০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপার এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। আলোচনার পর অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চয়তার আশ্বাস পেয়ে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিলেও বিকেল ৫টা পর্যন্ত যানজট লেগে থাকে।

সদর দক্ষিণ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজীব তালুকদার বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ স্বীকার করে অভিযুক্তরা স্বাক্ষর দিয়েছে।’

আরও পড়ুন: ইকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে কর্মসূচি, ধারাবাহিক আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়া খানম বলেন, ‘যে দুজনকে আটক করা হয়েছে, আমরা মোবাইল কোর্ট অনুযায়ী দুই বছরের জেল দিয়েছি। বাকি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করা হবে। ভিক্টিমের যে ক্ষতি হয়েছে, তা আটক বাসের মালিকদের কাছ থেকে আদায় করা হবে।’

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, ‘নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দুই বছরের জেল দিয়েছেন, যা অজামিন যোগ্য। পুলিশ প্রশাসন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাকি তিনজনকে অ্যারেস্ট করবে। এক মাসের মধ্যে মামলার চার্জশিট প্রদা করবে। এ ছাড়া ছিনতাই, হত্যা ও ধর্ষণের চেষ্টা পুলিশ পৃথকভাবে খতিয়ে দেখবে। এ মামলার নিয়মিত আপডেট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নেবে।’


সর্বশেষ সংবাদ