রাজশাহী কলেজ ছাত্রাবাসে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

নেসকোর রাজশাহী আঞ্চলিক অফিস ঘেরাও করেন শিক্ষার্থীরা
নেসকোর রাজশাহী আঞ্চলিক অফিস ঘেরাও করেন শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি

রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাসে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা বিদ্যুৎ বিভ্রাট, অস্বাভাবিক বিল ও বিদ্যুৎ না থাকার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিনের দুর্ভোগের এক পর্যায়ে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বেলা আড়াইটার দিকে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) রাজশাহী আঞ্চলিক অফিস ঘেরাও করেন শতাধিক শিক্ষার্থী।

চলমান এ সংকট নিরসনের দাবিতে শিক্ষার্থীরা প্রথমে মুসলিম হোস্টেল চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে নেসকোর অফিসের সামনে অবস্থান নেন এবং সেখানে স্লোগান দিতে থাকেন। তারা দাবি করেন, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে শুধু দৈনন্দিন জীবনই নয়, তাদের পড়াশোনা ও পরীক্ষার প্রস্তুতিও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

ঘণ্টাখানেক অবস্থানের পর মুসলিম হোস্টেলের তত্ত্বাবধায়করা ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং নেসকো কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য বসেন। পরে কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. যুহুর আলী ও উপাধ্যক্ষ ড. মো. ইব্রাহিম আলী  হোস্টেলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন।

উপাধ্যক্ষ ড. মো. ইব্রাহিম আলী শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের কথা জানি। আপনারা যে শান্তিপূর্ণভাবে দাবি তুলেছেন, সেটা প্রশংসনীয়। সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

আলোচনার এক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয়, বর্তমানে হোস্টেলে বিদ্যমান প্রি-পেইড মিটারিং ব্যবস্থার পরিবর্তে ‘জি’ ব্লকে পরীক্ষামূলকভাবে পোস্ট পেইড মিটার স্থাপন করা হবে। যদি এতে বিদ্যুৎ বিল কম আসে এবং ব্যবস্থাপনা সহজ হয়, তবে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ব্লকেও এই ব্যবস্থা চালু করা হবে।

এ ছাড়া কলেজ কর্তৃপক্ষ আরও জানান, হোস্টেলে ছাত্র ক্যান্টিন আবার চালু করা হবে এবং সেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত ও স্বাস্থ্যকর খাবারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অনেক দিন ধরে সমস্যার মুখোমুখি হওয়া শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও বিলের অসংগতির কারণে তাদের ভোগান্তির শেষ নেই। ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে যাওয়া, বিল বেশি আসা এবং প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় তারা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামেন।

হোস্টেলের আবাসিক শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমরা দিনের পর দিন ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার ফলে রাতে পড়াশোনা করতে পারি না। এভাবে চলতে পারে না। আজকে অন্তত শুনছে, এটা স্বস্তির।’

আরেক আবাসিক শিক্ষার্থী আবু সামাদ বলেন, ‘হোস্টেলে বিলের পরিমাণ অনেক বেশি আসে। আমরা খরচ বুঝে উঠতে পারি না। পোস্ট পেইড ব্যবস্থা হলে স্বচ্ছতা আসবে বলে বিশ্বাস করি।’

কলেজ হোস্টেলকে নিজেদের দ্বিতীয় বাড়ি উল্লেখ করে শিক্ষার্থী আরিফ বলেন, ‘আমরা নেসকো অফিসে গিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে দাবি জানিয়েছি। হোস্টেল তো আমাদের দ্বিতীয় বাড়ি। এখানে নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক পরিবেশ না থাকলে আমরা কোথায় যাব?’

এ বিষয়ে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. যুহুর আলী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সমস্যা আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। বিদ্যুৎ সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান হয়েছে এবং সামনে আরও যেসব সমস্যা আছে, সেগুলোরও সুষ্ঠু সমাধান হবে।’

তিনি জানান, ক্যান্টিন চালু, খাবারের মান উন্নয়ন, নিয়মিত পরিদর্শন এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনার ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ