গোবিপ্রবিতে জুলাই বিরোধী শিক্ষকদের পদোন্নতি, আন্দোলনের হুশিয়ারি শিক্ষার্থীদের

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

জুলাই গণহত্যায় সরাসরি সমর্থন ও আন্দোলনকারীদের রাজাকার, জামায়াত-শিবির বলে দেশ ছাড়ার হুমকি প্রদানকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি দিয়েছে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (গোবিপ্রবি) প্রশাসন। এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রশাসন বিরোধী আন্দোলনের ডাকের হুশিয়ারি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। 

জানা যায়, গত ৩ জুলাই অফিস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সিলেকশন বোর্ডের সুপারিশে রিজেন্টবোর্ডের ৪০ তম সভায় শিক্ষকদের পদোন্নতি দেওয়া হয়। যার মধ্যে দুইজন বিতর্কিত শিক্ষক বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জাকিয়া সুলতানা মুক্তাকে সহযোগী অধ্যাপক ও বিজিই বিভাগের প্রভাষক ইমদাদুল হক সোহাগকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। যাদের বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলন চলাকালে সরাসরি বিরোধিতার অভিযোগ রয়েছে। জুলাই মাসে তাদের পদোন্নতি দেওয়ায় জুলাই শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানি হিসেবে দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। 

পদোন্নতি পাওয়া বাংলা সহকারী অধ্যাপক জাকিয়া সুলতানা মুক্তার বিরুদ্ধে জুলাইয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলে দেশ ছাড়ার হুমকিসহ বিভিন্ন ধরনের কটুক্তি অভিযোগ রয়েছে।  আরেক শিক্ষক বিজিই বিভাগের প্রভাষক ইমদাদুল হক সোহাগের বিরুদ্ধে শেখ রাসেল হলের প্রভোস্ট থাকা অবস্থায় দাড়ি রাখলে হল থেকে বের করে দেওয়া ও সাতক্ষীরা জামাতের এলাকা বলে ওই এলাকার শিক্ষার্থীদের শূন্য দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল ইসলামি  বিশ্ববিদ্যালয়ের  ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ সংগঠন)  সহ-সভাপতি থাকা অবস্থায় বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রীদের ধর্ষনের হুমকি দেওয়ায় সংবাদের শিরোনামও হতে হয়। জুলাই গণহত্যা চলার সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নাম, পরিচয়, ঠিকানা পুলিশকে দিয়ে সহায়তার গুরুতর অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী ওবাইদুল ইসলাম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সরাসরি বিরোধিতা করার পরেও দুইজন শিক্ষক কীভাবে পদোন্নতি পেতে পারে! এটা আমাদের  সাথে তামাশা ছাড়া আর কিছু নয়। স্বৈরাচারমুক্ত এই ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা তাদের ন্যূনতম অনুশোচনার লেশমাত্র দেখতে পাইনি। ৫৬ হাজার বর্গমাইলজুড়ে যখন কোটা আন্দোলনে একের পর এক লাশ পড়ছিল, তখন এই শিক্ষকরাই ছাত্রদের কটাক্ষ করে পোস্ট করেছে, হুমকি দিয়েছে। জুলাই আন্দোলনে যারা সরাসরি বিরোধিতা করেছে, তাদের তালিকা কয়েক মাস আগেই জমা দিয়েছি। তারপরও কীভাবে তারা পদোন্নতি পায়? আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই অবিলম্বে এই পদোন্নতি বাতিল করে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে, এই ক্যাম্পাসে আবারো ‘জুলাই’ নেমে আসবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সভাপতি বলেন, ২৪ পরবর্তী সময়ে এমনটা দুঃখজনক। এটা ২৪ এর শহীদের রক্তের সাথে বেঈমানী ছাড়া আর কিছুই নয়। উনারও হয়তো ভুলে গেছেন, উনারা ২৪ এর রক্তের উপর দাঁড়িয়ে দায়িত্বে এসেছেন।


সর্বশেষ সংবাদ