ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ি নিয়ে প্রশ্ন, পরীক্ষা বাতিল
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৫, ০৭:৩৩ PM , আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৭:৪৩ PM

খুলনার ঐতিহ্যবাহী সরকারি বিএল কলেজে একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে বিতর্কিত প্রশ্নের কারণে পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। বুধবার (২ জুলাই) অনুষ্ঠিত সমাজবিজ্ঞান প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষায় ‘ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি’ সংক্রান্ত একটি সৃজনশীল প্রশ্ন নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। প্রশ্নের মাঝে বিষয়বস্তুর অসঙ্গতি ও ধারাবাহিকতার ঘাটতি ছিল।
প্রশ্নপত্রের ৯ নম্বর অংশে উল্লেখ করা হয়, ‘জনাব রিয়াজ তার নাতনিকে নিয়ে ধানমন্ডির ৩২নং বাড়ি পরিদর্শনে যান। সেখানে একজন মহান নেতার ছবির সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, এই ছবিটি আমাদের সেই প্রিয় নেতার, যিনি ১৯৬৬ সালে কিছু দাবি পেশ করেছিলেন। আর এগুলো ছিল আমাদের প্রাণের দাবি, প্রত্যাশিত স্বপ্ন পূরণের চাবিকাঠি।’
এই অংশের ওপর ভিত্তি করে চারটি সৃজনশীল প্রশ্ন রাখা হয়।
বিষয়টি পরীক্ষা শুরুর প্রায় দেড় ঘণ্টা পর কক্ষ পরিদর্শকের নজরে আসে। বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শেখ জহিরুল ইসলাম কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ৩০ নম্বরের এমসিকিউ হয়, এরপর ৭০ নম্বরের লিখিত প্রশ্নপত্র হাতে পাই। তখন দেখি প্রশ্নের ক্রম সম্পূর্ণ এলোমেলো—৫, ৬, ১, তারপর ২, ৩। আরও পড়ার পর দেখি বিতর্কিত বিষয় রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে অধ্যক্ষ স্যারকে জানাই এবং তাঁর নির্দেশে প্রশ্নপত্রগুলো সংগ্রহ করে প্রশাসনের কাছে জমা দিই।’
কলেজ কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে পরীক্ষা স্থগিত করে এবং পরে তা সম্পূর্ণ বাতিল ঘোষণা করে।
বিএল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘শুধু ৯ নম্বর প্রশ্ন নয়, প্রশ্নপত্রের ৪, ৭, ৯ ও ১১ নম্বরেও ভুল ছিল। কিছু প্রশ্নের সঙ্গে উদ্দীপকের কোনো মিল ছিল না। এমন ভুল প্রশ্ন ছড়িয়ে পড়লে কলেজের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়। কারণ, বিএল কলেজের প্রশ্নপত্র অনেক কলেজ অনুসরণ করে এবং তা বিভিন্ন টেস্ট পেপারে ছাপাও হয়।’
ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নিত্য রঞ্জন সরকারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে ইসলামী ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আবু তালেককে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অধ্যক্ষ আরও জানান, প্রশ্নপত্রের কিছু নমুনা সংরক্ষণ করা হয়েছে, বাকিগুলো নষ্ট করা হয়েছে।
ঘটনার পর শিক্ষক নিত্য রঞ্জন সরকারকে কলেজে পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।