‘যাকে জানানোর জানিয়েছি, কৈফিয়ত দিতে পারব না’, জবির দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষককে প্রধান প্রকৌশলী
- জবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৫, ০১:২৯ PM , আপডেট: ০১ জুন ২০২৫, ০১:৩৭ PM
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাসির আহমেদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৯) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক।
শনিবার (৩১ মে) ঘটনার বিস্তারিত জানাজানি হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বুধবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বর প্রাঙ্গণে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. নাসির আহমদের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও বাগবিতণ্ডা শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী।
প্রত্যক্ষদর্শী এক শিক্ষার্থী ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, শান্ত চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের সঙ্গে গল্প করছিলেন শিক্ষক নাসির আহমদ। ওই সময়ে উপস্থিত হন প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী। কথা বলার এক পর্যায়ে শিক্ষক নাসির উদ্দিন আহমদ স্যার প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত সেকেন্ড অডিটরিয়ামের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চান। এ সময় তিনি নাসির স্যারের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচারণ শুরু করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষক জানান, তিনি দ্বিতীয় অডিটরিয়ামের দেখভালের দায়িত্বে আছেন প্রশাসনিকভাবে। তিনি ওই কমিটির একজন সদস্য। তবে তাকে কিছু না জানিয়েই প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী অডিটরিয়ামের আসবাব ও অন্য দ্রব্যসামগ্রী কেনার জন্য টেন্ডার আহ্বান করেন।
আরও পড়ুন : জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন দেখুন এখানে
তিনি আরও জানান, তিনি প্রধান প্রকৌশলীকে বলেন, ‘টেন্ডারটি ছাড়ার আগে আপনি অন্তত আমাকে জানাতে পারতেন, একটা মিটিং কল করতে পারতেন। কিন্তু আপনি আমাকে কিছুই বললেন না। কিছুই জানালেন না।’ জবাবে প্রধান প্রকৌশলী উচ্চস্বরে বলেন, ‘আমি কি আপনার দ্বারে দ্বারে গিয়ে ঘুরব?’ এ সময় তিনি বলেন, ‘আমি তো আপনাকে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে বলিনি। আপনি তো একবার জানাতে পারতেন?’
এর উত্তরে প্রধান প্রকৌশলী বলেন, ‘যাকে জানানোর তাকে জানিয়েছি। এত কথার কৈফিয়ত দিতে পারব না।’ কথা বলার এক পর্যায়ে ওই কর্মকর্তা শিক্ষককে বলেন, ‘আমি আমার মতো করছি, যা করার করেন।’
এ সময় আশপাশে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা হতবাক হয়ে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেন। এ ঘটনার সময় উপস্থিত এক শিক্ষার্থী বলেন, উনি যেভাবে শিক্ষকের সঙ্গে আচরণ করলেন, উপাচার্যও (ভিসি) হয়তো এভাবে গরম দিয়ে কথা বলেন না। নাসির স্যার ভদ্র বিধায় কিছু বলেননি। তবে ঘটনাটি খুবই দৃষ্টিকটু।
আরও পড়ুন : ঘুষ ছাড়া ফাইল নড়ে না বালীগ্রাম ইউনিয়ন ভূমি অফিসে!
জানতে চাইলে সহযোগী অধ্যাপক ড. নাসির আহমেদ বলেন, আমি খুবই ভদ্রভাবে তাকে বলি আপনি তো এটা করলেন আমাকে জানালেনও না। তবে তিনি আমার সঙ্গে যে আচরণ করলেন, তা প্রত্যাশিত নয়। খুবই লজ্জাজনক।
এ ঘটনা সম্পর্কে প্রশাসনকে লিখিত কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মৌখিকভাবে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘দুজনের মধ্যে সামান্য ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছিল মাত্র। আমরা একসঙ্গে বসে বিষয়টি আন্তরিকভাবে মীমাংসা করেছি। এ নিয়ে আমি আর কিছু বলতে চাই না।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন বলেন, আমি দুজনকে ডেকে বিষয়টি আন্তরিকতার সঙ্গে মীমাংসা করে দিয়েছি। এক জায়গায় একসঙ্গে থাকতে গেলে মাঝেমধ্যে রাগ-অভিমান হতেই পারে। কিন্তু সেটি বড় করে না দেখে আমরা বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করেছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, এ বিষয়টা আমার কানে এসেছে। বেশি কিছু জানি না। বিস্তারিত জানতে হবে। এ বিষয়ে কথা বলব। এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। পেলে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।