সাত হাজার শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র ১০টি বাস কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে!
- ফারুক আহমেদ ও হাবিবুল্লাহ আল মারুফ
- প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০১৯, ০১:৩৭ AM , আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৯, ১১:০৯ AM
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাককানইবি) পরিবহন সংকটে শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে । বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের সংখ্যা কম হওয়ায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী প্রতিদিন দাঁড়িয়ে অথবা বাদুঁর ঝুলা হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করেন । এতে ক্লাস-পরীক্ষায় সময়মত অংশ নিতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। এছাড়া যে কোন সময় বড় দুর্ঘটনার আংশকা করছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সুত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা বর্তমানে সাত হাজারের ও অধিক। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত হল না থাকায় এসব শিক্ষার্থীদের সিংহভাগই অবস্থান করেন ময়মনসিংহ শহর ও আশপাশের এলাকায়। ময়মনসিংহ শহর থেকে বিশ্বিবিদ্যালয়ের দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার হওয়ায় প্রতিদিন বাসে করে এসব শিক্ষার্থীদের ক্লাসে যাওয়া আসা করতে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত হাজারের অধিক শিক্ষার্থীর জন্য বাস রয়েছে মাত্র ১০টি। এর মধ্যে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব। আর বাকী ছয়টি বর্তমানে ভাড়ায় চলছে। এতে তীব্র ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। বিশেষ করে ছাত্রীরা পড়ছেন বেশি সমস্যায়। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা গত ১০ মার্চ পরিবহন কর্মকর্তার রুমে তালা লাগিয়ে আন্দেলন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের ছাত্রী সাদিয়া আফরিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস সংকট থাকায় যাতায়াত করা অনেক কষ্টকর । এছাড়াও গাদাগাদি করে বাসে উঠতে গিয়ে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।’ এ সমস্যার দ্রুত সমাধানের দাবি জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী এহসান আহমেদ সবুজ গত বুধবার ফেইসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘হে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের কি মানুয় মনে হয় না? একটি বাসে ৫৬জন দাড়িয়ে ময়মনসিংহে যাচ্ছি। আমরা ছেলেরা না হয় দাড়িয়ে গেলাম, ২৭-২৮জন মেয়ে দাড়িয়ে যাচ্ছে, তাদের কি কষ্ট হয় না।’
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মোজাম্মেল হক অনিক বলেন, ‘পরিবহন সমস্যা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভয়াবহ সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। আমাদের আন্দোলনের মুখে উপাচার্য সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। প্রতি বছর শিক্ষার্থী বাড়ছে অথচ বাস বাড়েনি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক অপর এক শিক্ষার্থী জানান, ‘প্রতিদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় সব বিভাগের ক্লাস থাকায় শিক্ষার্থীদের একসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে হয়। কোন কোন দিন পরীক্ষা থাকায় দাঁড়িয়ে বা বাসের ছাদে চড়ে অথবা বাঁদুর ঝুলা হয়ে ক্লাস বা পরীক্ষায় হাজির হতে হয়। তাই আমাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের এ দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক রাশেদ সুখন জানান, ‘শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে বাস বাড়ানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আশা করছি অতি দ্রুত শিক্ষার্থীদের পরিবহন সমস্যার সমাধান হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ. এইচ. এম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘আগামী মাসে নতুন একটি বাস কেনা হবে। তাছাড়া আগামী দুই মাসের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনার কাছ থেকে আরো দুইটি বাস পাব।’