বিইউপি শিক্ষার্থীদের পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ ‘এগটিভেট’

‘এগটিভেট’ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীরা
‘এগটিভেট’ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীরা  © সংগৃহীত

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) ক্যাম্পাসের বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের মাধ্যমে টেকসই পরিবেশ সংরক্ষণে অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ‘এগটিভেট’ (EggTeaVate) নামের এই প্রকল্পের মাধ্যমে ক্যাফেটেরিয়ার ব্যবহৃত টি-ব্যাগ এবং ডিমের খোসা পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করে তৈরি করা হচ্ছে জৈব সার।

এই উদ্যোগের সূচনা করেন বিইউপির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আরিফুর রহমান। একদিন ক্যাফেটেরিয়ায় জমে থাকা ডিমের খোসা ও ব্যবহৃত চা পাতার স্তূপ দেখে তিনি এগুলোকে পুনর্ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব কিছু তৈরির চিন্তা করেন। প্রভাষক গোলাম মুক্তাদিরের সঙ্গে আলোচনার পর এই দুই শিক্ষক ক্যাফেটেরিয়ার বর্জ্য ব্যবহার করে কম্পোস্ট তৈরির সিদ্ধান্ত নেন।

পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০২২ ও ২০২৩ ব্যাচের কিছু শিক্ষার্থী এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়। শুরুতে ২০২২ ব্যাচের অর্পিতা, সাদিকা, নুসাইবা, নাবিহা, ফাহিম ও তাসিন প্রকল্পে কাজ শুরু করেন। পরে ২০২৩ ব্যাচের নাজলা, নাশিতা, লিজা, তাহিয়াত ও অর্ঘ্য দলটিতে যোগ দেন। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্যাফেটেরিয়া থেকে ডিমের খোসা সংগ্রহ করে, তা শুকিয়ে গুঁড়ো করে এবং চা পাতার সঙ্গে মিশিয়ে জৈব সারে পরিণত করেন।

বিশ্বজুড়ে রান্নাঘরের বর্জ্য দিয়ে কম্পোস্ট তৈরির ধারণাটি নতুন নয়। তবে, এই শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে কার্যকরভাবে কাজে লাগিয়ে ‘এগটিভেট’ তৈরি করেছেন, যা মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে এবং গাছের স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

‘এগটিভেট’ পরীক্ষামূলক পর্যায়ে থাকলেও প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, এতে থাকা ক্যালসিয়াম কার্বোনেট গাছের কোষ প্রাচীরকে শক্তিশালী করে এবং ফুল ও ফল উৎপাদন বাড়ায়। চা পাতা থেকে প্রাপ্ত নাইট্রোজেন ও ট্যানিক অ্যাসিড মাটির উর্বরতা বাড়ায় এবং সবুজ বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে।

এই জৈব সার মাটির বায়ু চলাচল ও পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ায়, যা ক্যালসিয়াম ও নাইট্রোজেনের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। এটি সম্পূর্ণ রাসায়নিক মুক্ত এবং বায়োডিগ্রেডেবল উপকরণ দিয়ে তৈরি, যা পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখে।

‘এগটিভেট’ শুধুমাত্র একটি কার্যকর জৈব সার নয়, এটি টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপও। ক্যাফেটেরিয়ার বর্জ্য পুনর্ব্যবহার করে এটি পরিবেশকে পরিষ্কার রাখতে ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে বিইউপির তিনটি ক্যাফেটেরিয়ার সীমিত পরিসরে এই উদ্যোগ পরিচালিত হচ্ছে।

সহকারী অধ্যাপক আরিফুর রহমান বলেন, ‘এগটিভেট’ সম্পূর্ণ নতুন কোনো ধারণা না হলেও এটি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার একটি ব্যবহারিক ও সহজলভ্য সমাধান, যা দৈনন্দিন জীবনে সহজেই অন্তর্ভুক্ত করা যায়।

শিক্ষার্থীরা মনে করেন, এই ছোট্ট উদ্যোগ ভবিষ্যতে বড় প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে। তাদের লক্ষ্য, ‘এগটিভেট’-এর সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিইউপিকে একটি জিরো-ওয়েস্ট ক্যাম্পাসে পরিণত করা।

পরিবেশ সংরক্ষণে শিক্ষার্থীদের এই প্রচেষ্টা প্রমাণ করে যে ছোট ছোট উদ্যোগও বৃহত্তর পরিবর্তন আনতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence