‘সবার সাথে আলোচনা করে সাত কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ দিতে হবে’

শিক্ষার্থী-শিক্ষক সংলাপের চিত্র
শিক্ষার্থী-শিক্ষক সংলাপের চিত্র  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন বলেছেন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ভালো থাকলে দেশের সবাই ভালো থাকবে। সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের যা চাওয়া, আমারো একই চাওয়া। সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে হবে তা আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করতে হবে। বর্তমান এই সময়টা খুব ভালো সময়, এমন সময় দেশে আর আসবে কিনা জানিনা। সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা নিষ্পেষণের শিকার। আমাদের চিন্তা-ভাবনা করে এ সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।

বুধবার (২ আক্টোবর) ঢাকা কলেজ অডিটোরিয়ামে ‘৭ কলেজের শিক্ষা সংকট সমাধান কোন পথে?’ শীর্ষক শিক্ষার্থী-শিক্ষক সংলাপে এ মন্তব্য করেন তিনি। সাত কলেজ বিষয়ক শিক্ষার সংকট শিক্ষার্থী শিক্ষক সংলাপের আয়োজন করেন সাত কলেজ শিক্ষার্থী নেটওয়ার্ক। এতে শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা শিক্ষার ক্ষেত্রে সাত কলেজের  সমস্যা ও সমাধানের বিষয়ে মতামত দেন।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে কামরুল হাসান মামুন বলেন, আমরা কেউ কারো প্রতিপক্ষ না। আমি ছয়-সাত বছর ধরে ভেবেছি সাত কলেজের সমস্যার বিষয়ে। সমস্যা সমাধান আলোচনা স্বাপেক্ষ। সাত কলেজ সৃষ্টির পেছনে তোমাদের মঙ্গলের কথা বিবেচনা না করে, সব পক্ষের সাথে আলোচনা না করে, একজন বা দুইজন মানুষের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এটি করা হয়েছে। রাষ্ট্র তোমাদের কথা কখনও ভাবে নাই। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলোতে ক্লাসরুম, শিক্ষক কতজন? দুইটা রুমে অনার্স, মাস্টার্স, এইচএসসি সবকিছু হয়। শিক্ষকদের বসার জায়গার পর্যন্ত সংকট রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তোমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অবহেলা করা হয়। আমাদের যেকোন সিদ্ধান্তের পেছনে কোন ভাবনা নেই, অনেক গ্রুপের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় করা যায় কিন্তু ঢাবি এখনো পরিপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পোস্টডক, পিএইচডি লাগবে। পোস্টডক নেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে।  পোস্টডক,পিএইচডি মাধ্যমে নতুন নতুন জ্ঞান তৈরি হয়। আমাদের জ্ঞান তৈরির বিশ্ববিদ্যালয় নেই। 

সাত কলেজ শিক্ষার সংকট সংলাপ সভায় সাত কলেজের বিভিন্ন সংকটের কথা তুলে ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আইনুল ইসলাম বলেন, আমার বিভাগে পড়লে কী ধরণের স্কলার তৈরি হবে এটা আমরা ঠিক করতে পারিনি। আশা করি ক্রমান্বয়ে শিক্ষার মান বৃদ্ধি পাবে। বক্তব্যে সাত কলেজ কোন পথে যাবে তিনি প্রশ্ন রাখেন শিক্ষার্থীদের কাছে। শিক্ষার্থীরা এসময় সাত কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি জানান। 

অধ্যাপক আইনুল ইসলাম আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের ঠিকমতো সেবা দিতে পারে না। সেক্ষেত্রে সাত কলেজে কিভাবে দেড় লাখ শিক্ষার্থীদের সেবা দেওয়া সম্ভব। সাত কলেজকে একসাথে করে কি করা যায় সেটা নিয়ে এখন ভাবতে হবে। প্রত্যক কলেজকে সেন্টার এফ এক্সিলেশন করা সম্ভব। আমি মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় এর সমাধান। প্রত্যক কলেজকে বিশেষায়িত স্থান হিসেবে তৈরি করা যায়। যেমন- ইনস্টিটিউট অফ বিজনেস, ইনস্টিটিউট অফ সাইন্স ইত্যাদি। 

সাত কলেজ সমস্যার বিষয়ে ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস বলেন, ১৫ বছর ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আন্দোলন করেছিল সফল হয়নি। শিক্ষার্থীরা ১৫ দিনে সফল হয়েছে। সাত কলেজের সমস্যার সমাধান শিক্ষার্থীদের কাছেই আছে। শিক্ষার্থীরা চাইলে খুব শিগগিরই সাত কলেজের সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

সংলাপ সভায় সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন, সাত কলেজের জন্য কোন একাডেমিক ক্যালেন্ডার নেই। সার্টিফিকেট ও কাগজপত্র তুলতে গেলে অনেক সমস্যায় পড়তে হয় । কলেজগুলোতে ক্লাসরুমের সংকট। স্বতন্ত্র পরীক্ষা কেন্দ্র সাত কলেজের কোথাও নেই।  ফলাফলে প্রকাশে বিলম্ব হয়। যার ফলে ঠিকমতো ক্লাস হয় না। কলেজগুলোতে ২০ হাজার শিক্ষার্থী নতুন করে ভর্তি হয় কিন্তু পর্যাপ্ত আবাসন নেই। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নেই ইত্যাদি সমস্যার কথা তুলে ধরেন তারা। ঢাবির সাথে আমাদের সম্পর্ক শোষিতের উল্লেখ করে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি জানান সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

সংলাপ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুব, শিক্ষা ও শিশু রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক রাখাল সাহা সহ সাত কলেজ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence