ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্যের কাছে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক  © ফাইল ছবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ১৪তম উপাচার্য। ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পরের উপাচার্যের কাছে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা। তাদের প্রত্যাশা নতুন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে উপাচার্যও বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন উদ্যমে এগিয়ে নিবেন। শিক্ষা ও গবেষণায় মানোন্নয়ন, রাজনীতিসহ সকল ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুনভাবে গড়ে তুলবেন। নতুন উপাচার্যকে নিয়ে এমন প্রত্যাশা শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়ন প্রসঙ্গে শিক্ষার্থী অর্পিতা গোস্বামী প্রমা বলেন, নতুন উপাচার্যের কাছে একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমার প্রত্যাশা তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে মানসম্মত শিক্ষা ও গবেষণার দিক থেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবেন। তিনি আন্তর্জাতিক মানের গবেষণার সুযোগ তৈরিতে উদ্যোগী হবেন। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণার দিক থেকে অনেক পিছিয়ে আছে। শিক্ষার ক্ষেত্রেও আছে নানান প্রতিবন্ধকতা। শিক্ষক সংকট, শ্রেণীকক্ষ সংকট সহ সকল সংকট তিনি নিরসন করবেন বলে আশা করি। আমি চাই নতুন উপাচার্য ছাত্রকল্যাণমূলক কার্যক্রম, যেমন: স্কলারশিপ, স্বাস্থ্যসেবা, মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা এবং ক্যারিয়ার কাউন্সেলিংয়ের মতো বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দেবেন। সর্বোপরি আমি আশা করি নতুন ভিসি শিক্ষার মান উন্নত করবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার পরিবেশকে আরো সমৃদ্ধ করবেন।

ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ চেয়ে শিক্ষার্থী তুষার আলী বলেন, গণঅভ্যুত্থানে ঐতিহাসিক ‘নয় দফা’ দাবির অন্যতম একটা দাবি ছিল সকল  ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ করা। নতুন ভিসির কাছে আমার প্রত্যাশা থাকবে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি যেন বন্ধ করেন। লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি ফলে রাজনৈতিক দলগুলোর  হলগুলোতে আধিপত্যে করে। এর ফলে ক্যাম্পাসে নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা ও সমস্যা সৃষ্টি হয়। দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি পরিবর্তে সুস্থা ধারার ছাত্র সংসদ ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি চালু করা যায়। হলের রাজনীতি বন্ধ করে হলগুলোতে প্রশাসনিক উপায়ে রেজাল্ট ও অর্থিক অবস্থার ভিত্তিতে সিট দেয়া প্রয়োজন। এছাড়াও শিক্ষকদের রাজনীতি বন্ধ করা উচিত। শিক্ষকের কাজ গবেষণা করা ও জাতি গঠন করা। কিন্তু তারা শিক্ষা থেকে দূরে সরে গিয়ে রাজনীতিতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েন। ফলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি হয়।

আরও পড়ুন: ইবিতে বেড়েছে বহিরাগত, নিরাপত্তা শঙ্কায় নারী শিক্ষার্থীরা

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বীর আহমেদ বলেন, ইবির নতুন ভিসির কাছে প্রথম প্রত্যাশাই হলো সম্পূর্ণ সেশনজট মুক্ত একটি ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও শিক্ষার্থীবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে গতানুগত নিয়মের বাইরে এনে ডিজিটাল ও আধুনিক পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা। এছাড়াও আমাদের লাইব্রেরি সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বন্ধ থাকে। আমি চাই সবসময় লাইব্রেরী খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হোক। প্রতিযোগিতা মূলক চাকরির ক্ষেত্রে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে আরো যোগ্য করে গড়ে তুলতে লাইব্রেরীতে কর্মমুখী বই বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন রকম সুযোগ-সুবিধার আধুনিকায়নে নতুন উপাচার্য ভূমিকা রাখবেন বলে আশা করি।

ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের শিক্ষার্থী মুনিরা খাতুন বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতার পরে প্রতিষ্ঠিত প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠার এতো বছর পরেও শিক্ষার্থীদের জন্য শতভাগ আবাসিকতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকেই ক্যাম্পাসের বাইরে মেসে থাকতে হয়। ফলে নানা সময়েই শিক্ষার্থীরা মেসে বিভিন্ন অসুবিধায় পড়েন। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় মেয়ের। মেয়েরা বাইরের মেসে বিভিন্নরকমের হয়রানির শিকার হয়। তাই আমি চাই নব নিযুক্ত উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য শতভাগ আবাসিকতা নিশ্চিতের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের সকল রকমের সমস্যা  সমাধানে তিনি এগিয়ে আসবেন।


সর্বশেষ সংবাদ