‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যাব না, পদত্যাগও করব না’

বেরোবি রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আলমগীর চৌধুরী
বেরোবি রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আলমগীর চৌধুরী  © সংগৃহীত

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আলমগীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে ছুটি ছাড়াই বাড়িতে বসে দিন কাটানোর অভিযোগ উঠেছে। সরকার পতনের পর  বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর, ট্রেজারারসহ ৪০ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। তাদের পদত্যাগে বিশ্ববিদ্যালয় অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে একমাত্র দায়িত্বে বহাল থাকা রেজিস্ট্রার আলমগীর চৌধুরী নিজের ইচ্ছামতো ছুটি কাটাচ্ছেন। বিষয়টা যেন ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যাব না, পদত্যাগও করব না’— এমনটাই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, প্রথমবার নিয়োগের পর থেকে অনিয়মিত অফিস করতেন আলমগীর চৌধুরী। তবে গত ফেব্রুয়ারিতে শেষবার নিয়োগ পাওয়ার পর অনিয়মিত তো বটেই, বেশিরভাগ দিন ছুটি কাটিয়েছেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ্য ও একমাত্র আবাসিক কর্মকর্তা হিসেবে রেজিস্ট্রারের অনুপস্থিতিতে স্বাভাবিক কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের শীর্ষ পদে কেউ না থাকায় অনিরাপদ বলেও মনে করেন শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে রেজিস্ট্রার চলে যাওয়ায় প্রশাসনের মধ্যে চলছে সমালোচনা।

৫ ফেব্রুয়ারি তৃতীয়বারের মতো চুক্তিভিত্তিক পুনঃনিয়োগ দেওয়া হয় রেজিস্ট্রারকে। সর্বশেষ নিয়োগ পাওয়ার পর ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ৮৬ দিনের মধ্যে ৫৩ দিনই ছুটি কাটিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার আলমগীর চৌধুরী। অথচ প্রতি মাসে লাখ টাকা বেতন নিচ্ছেন তিনি। মাঝে ২০ দিন বিরতি দিয়ে আবার টানা ৪০ দিনের ছুটি কাটাতে দেশের বাইরে যান। পরে ৭ আগস্ট অসুস্থতার কথা বলে ছুটিতে তার নিজ বাড়ি চট্রগ্রামে চলে যান।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি তৃতীয়বারের মতো চুক্তিভিত্তিক পুনঃনিয়োগ দেওয়া হয় রেজিস্ট্রারকে। সর্বশেষ নিয়োগ পাওয়ার পর ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ৮৬ দিনের মধ্যে ৫৩ দিনই ছুটি কাটিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার আলমগীর চৌধুরী। অথচ প্রতি মাসে লাখ টাকা বেতন নিচ্ছেন তিনি। মাঝে ২০ দিন বিরতি দিয়ে আবার টানা ৪০ দিনের ছুটি কাটাতে দেশের বাইরে যান। পরে ৭ আগস্ট অসুস্থতার কথা বলে ছুটিতে তার নিজ বাড়ি চট্রগ্রামে চলে যান। কতদিনে অফিসে যোগদান করতে পারবেন তা উল্লেখ করেননি। 

চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘সুস্থ হয়ে কর্মস্থলে যোগদানের আশা রাখি।’ কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন শুনে ৯ আগস্ট রাতে ক্যাম্পাসে তড়িঘড়ি করে চলে আসেন। এরপর আবার ২ সেপ্টেম্বর কাউকে না জানিয়ে ছুটিতে চলে গেছেন বলে প্রশাসনিক ভবন থেকে জানা গেছে।

সূত্রের তথ্য, রেজিস্ট্রার বছরের পর বছর অবৈধভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউজের একটি রুম দখল করে আছেন। এমনকি উপাচার্যের নামে বরাদ্দকৃত একটি গাড়িও সার্বক্ষণিক ব্যবহার করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গাড়ি চলাচল বন্ধ করলেও তিনি সার্বক্ষণিক ব্যবহার করেছেন বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন। 

এক কর্মকর্তা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কিছু বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। যেহেতু কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীর বাস চলছে না, তাই গাড়ি চললে শিক্ষার্থীরা সমালোচনা করছেন। তিনি রেজিস্ট্রারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ব্যবহার করতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু তিনি গ্রাহ্য করেননি।

এর আগে চুক্তির শর্ত ভেঙে গত বছর অবৈধভাবে প্রায় দেড় লাখ টাকা ঈদ বোনাস নিয়েছিলেন প্রকৌশলী আলমগীর চৌধুরী। এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে ইউজিসির নির্দেশনায় ওই অর্থ ফেরত দিতে বাধ্য হন তিনি।

আরো পড়ুন: ববি ও বিএম কলেজে সংঘর্ষের নেপথ্যে চাঁদাবাজি

বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো এক বছরের জন্য রেজিস্ট্রার পদে সর্বসাকূল্যে ১ লাখ ৫ হাজার ৬৬০ টাকা বেতনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালের অবসরে যাওয়া প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী। এরপর ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারসহ আরো কয়েকটি পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও পরিচালকসহ অন্যান্য পদে পূর্ণকালীন কর্মকর্তা নিয়োগের নির্দেশনা দেয়। 

এ নীতিমালা ও নির্দেশনা অমান্য করে গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বিতীয়বারের মতো চুক্তিভিত্তিক পুনঃনিয়োগ পান তিনি। সর্বশেষ চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি আবারো ইউজিসির নির্দেশনা ও চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা নিয়োগ নীতিমালা, ২০২২ লঙ্ঘন করে এক বছরের জন্য তাকে চুক্তিভিক্তিক পুনঃনিয়োগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।প্রশাসনিক ভবনের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর ভাষ্য, রেজিস্টার হঠাৎ কি কারণে গেছেন বলতে পারবেন না। তিনি কবে আসবেন সেটাও জানিয়ে যাননি।

জানতে রেজিস্ট্রার আলমগীর চৌধুরীকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence