বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

এক ব্যাচ বের হলে অপর ব্যাচ ঢোকেন, ছয় ব্যাচের এক ক্লাসরুম

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) দেখা দিয়েছে ক্লাসরুম সংকট। ফলে ব্যাহত হচ্ছে একাডেমিক শিক্ষা কার্যক্রম। প্রায়শই শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক ভবন-২ এর প্রবেশপথ এবং শ্রেণিকক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ক্লাসের জন্য অন্য ব্যাচের ক্লাস শেষ হওয়ার অপেক্ষায় থাকতে হয় শিক্ষার্থীদের। এর কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু বিভাগে ক্লাসরুমই নেই। কোনো কোনো বিভাগে ক্লাসরুম আছে একটি বা ‍দুটি করে। যার কারণে এক বিভাগের ৬-৭ টি ব্যাচের শিক্ষা কার্যক্রম এক বা দুই রুমে পরিচালনা শিক্ষার্থীদের জন্য ভোগান্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্লাসের জন্য ভবন বা শ্রেণিকক্ষের সামনে দাঁড়ানো নিয়ে কখনো কখনো বেধে যাচ্ছে হট্টগোল।

জানা যায়, শ্রেণিকক্ষ সংকট বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিত্যদিনের চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়টি অনুষদের আওতায় ২৫টি বিভাগের জন্য ক্লাসরুম রয়েছে মাত্র ৩৬টি। ফলে প্রায় সব বিভাগের ব্যাচগুলোকে শ্রেণিকক্ষ ভাগাভাগি করতে হয়। এর মধ্যে শ্রেণিকক্ষের সবচেয়ে বেশি সংকটে ভুগছেন সমাজকর্ম, দর্শন ও লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ২০২২ সালে যাত্রা শুরু করা সমাজকর্ম বিভাগের কোনো ক্লাসরুমই নেই। ক্লাসরুম নেই দর্শন বিভাগেরও এবং লোকপ্রশাসন বিভাগের চলমান ছয়টি ব্যাচের জন্য রয়েছে মাত্র একটি ক্লাসরুম। 

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র আরও জানা যায়, ছয়টি অনুষদের আওতায় ২৫টি বিভাগের জন্য পাঁচতলাবিশিষ্ট একটি ভবনের দুটি ব্লককে একাডেমিক ভবন-১ ও একাডেমিক ভবন-২ নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যেখানে ক্লাসরুম রয়েছে ৩৬টি ও ল্যাব রয়েছে ৩১টি। এর মধ্যে সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের আওতাধীন সমাজকর্ম বিভাগের কোনো ক্লাসরুমই নেই; অর্থনীতি, সমাজবিজ্ঞান, লোকপ্রশাসন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের জন্য ক্লাসরুম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মাত্র একটি করে। 

কলা ও মানবিক অনুষদের অন্তর্ভুক্ত ইংরেজি ও ইতিহাস বিভাগের আছে একটি করে ক্লাসরুম। বাংলা বিভাগের জন্য দুটি ক্লাসরুম বরাদ্দ থাকলেও তার একটি আবার ভাগাভাগি করতে হয় আইন বিভাগের সঙ্গে। এ অনুষদের দর্শন বিভাগের জন্য কোনো ক্লাসরুম নেই। 

বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের জন্য দুটি ক্লাসরুম বরাদ্দ থাকলেও মার্কেটিং বিভাগ, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগগুলোর জন্য বরাদ্দ একটি করে ক্লাসরুম। প্রশাসনিক ভবনে এ অনুষদের চারটি বিভাগের জন্য একটি যৌথকক্ষ আছে। 

বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের গণিত, পদার্থবিজ্ঞান এবং ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের জন্য দুটি করে ক্লাসরুম ও ল্যাব আছে। রসায়ন বিভাগের জন্য দুটি ল্যাব থাকলেও ক্লাসরুম আছে একটি। পরিসংখ্যান বিভাগের জন্য আছে একটি করে ক্লাসরুম ও ল্যাব। এ অনুষদের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের জন্য শুধু ছয়টি ল্যাব আছে। আলাদা কোনো ক্লাসরুম নেই। এ ছাড়া জীববিজ্ঞান অনুষদের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ক্লাসরুম দুটি, ল্যাব তিনটি, মৃত্তিকা ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের দুটি ক্লাসরুম এবং কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আছে একটি ক্লাসরুম ও একটি ল্যাব।

শুধু শ্রেণিকক্ষই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনুষদের ডিনদের জন্যও আলাদা কক্ষ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষকের কেউই পাননি আলাদা কক্ষও। তাদেরও এক কক্ষে তিন থেকে চারজন ভাগাভাগি করে বসতে হয়।

গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ক্লাসরুম সংকটের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ দেওয়ার চেষ্টা করছি। ক্লাসরুম সংকট তো একদিনে শেষ হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় হওয়ার সাথে বিভাগ বাড়ছে। সরকার থেকে বড় ধরনের বরাদ্দ না পেলে এত তাড়াতাড়ি এ সমস্যা শেষ হচ্ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেন বলেন, শিডিউল অনুযায়ী ক্লাস নিলে ক্লাসরুম সংকটে কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু শিডিউল মিস করলে ব্যাকআপ ক্লাস নিতে সমস্যা হয়।

এ বিষয়ে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। বিষয়গুলো উপাচার্যকে অবহিত করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence