পোস্টার আমাদের জীবনকে বদলে দেয়: প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ
- জবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:৫৭ PM , আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৫৫ PM
সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, পোস্টার চিত্র ও এতে লেখা বিভিন্ন স্লোগান, বাণী, বক্তব্য মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রামে আমাদের উজ্জীবিত করেছে, আলোড়িত করেছে। তাছাড়া এটি বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও আমাদের উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করেছে। মোদ্দাকথা, পোস্টার আমাদের রাজনৈতিক ও সমাজ জীবনকে বদলে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ আয়োজিত ‘বাঙালী, মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয়গাঁথা’ শীর্ষক আন্ত:বিশ্ববিদ্যালয় পোস্টার প্রতিযোগিতা ২০২২ এর পুরস্কার বিতরণ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পোস্টার আমাদের জীবনকে বদলে দেয়। বর্তমানে পোস্টার প্রেসে ছাপানো হয়। আগে এটা ছিলনা। ১৯৮৭,৮৮ সাল এবং গণঅভ্যুত্থানের সময় আমরা হাতে লিখে পোস্টার বানাতাম। আটা-ময়দা গুলিয়ে পোস্টারের পিছনে লাগিয়ে দেয়ালে সেঁটে দিতাম। পোস্টার লেখার ধরনটাই আলাদা। এখনকার পোস্টার আরও আধুনিক হয়েছে৷
সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিজয়ী হওয়া আর না হওয়ার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই৷ অংশগ্রহণ করাটাই বড় জিনিস।
মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে বিশিষ্ট শিল্পতাত্ত্বিক অধ্যাপক আবুল মনসুর ‘সৃজনশীল মানুষের দায়:ইতিহাসের ক্রান্তিকাল’ শীর্ষক বিষয়ে বলেন, সৃজনশীল মানুষ মানেই যে তিনি সবকিছুতে ঝাপিয়ে পড়বেন এমনটি নয়। কিন্তু তিনি একটি দায় অনুভব করবেন।
সৃজনশীলতার সাথে সাহিত্য, সংগীত, নাটক,দৃশ্যকলা,ভাবনা এসব সম্পর্কিত। একজন মানুষকে তার ভাবনা অন্য প্রাণীর চেয়ে আলাদা করে তুলেছে। মানুষ ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করতে পারে৷ অন্য প্রাণীরা সেটি পারেনা। মানুষের প্রথম ভাবনা হলো, আমি কে,আমি কোথায় থেকে এসেছি,আমি কোথায় যাব।
অনুষ্ঠানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নিসার হোসেন এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আলপ্তগীন। সম্মানিত আলোচক হিসেবে জনাব মইনুদ্দীন খালেদ ‘জনগোষ্ঠী শিল্প: পোস্টার’ শীর্ষক বক্তব্য প্রদান করেন।
চারুকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বজলুর রশীদ খানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য প্রদান করেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের চেয়ারম্যান ফারহানা তাবাসসুম, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের চেয়ারম্যান এ এইচ এম আকতারুল ইসলাম। এসময় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পোস্টারিং প্রতিযোগিতায় ৮টি বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অফ অলটারনেটিভ ডেভেলপমেন্ট ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) ও নারায়ণগঞ্জ চারুকলা ইনস্টিটিউট (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে মোট ৭৭ জন অংশগ্রহণ করেন।
প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করেন বিশিষ্ট শিল্পী আব্দুল মান্না। প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদিশা অধিকারী, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদিয়া নিশাত এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জান্নাতুল সায়মা। এছাড়াও বিশেষ পুরস্কার লাভ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাজমুন নাহার পিয়া, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হামি ফায়রুজ হিমতী এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তি খানম।
পুরস্কার বিতরণ ও আলোচনা সভা শেষে পোস্টার প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন দেশবরেণ্য চিত্রশিল্পী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুন নবী। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভবনের নিচতলায় আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উক্ত প্রদর্শনী চলবে।