এবার জবির হলে ছাত্রীকে নির্যাতন করে ভিডিও ধারণ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হলে তিন ঘণ্টা আটকে রেখে এক ছাত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে একই হলের একাধিক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। নির্যাতনের সময় ভিডিও ধারণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। এই ঘটনায় হল প্রভোস্টের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই ছাত্রী।

নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। আর অভিযুক্তরা হলেন- তন্বী, ইশিতা, ফাল্গুনী আক্তার, নিনজা শিকদার, ইরা ও নাজমুন নাহার স্বর্ণা। তারা সবাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নিজেদের রুমের তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাফসা বিনতে নূরের সাথে জুনিয়র রুমমেট রেবেকা খাতুনের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে রেবেকা খাতুন হলের অন্য রুমের মেয়েদের নিয়ে এসে রুমের দরজা বন্ধ করে হাফসাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন ও হেনস্তা করেন। নির্যাতনের এক পর্যায়ে হাফসা বিনতে নূর অজ্ঞান হয়ে যায়। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমার রুম পাশে হওয়ায় আমি এসে হাফসাকে রুম থেকে বের করে নিয়ে যেতে চেয়েছি। কিন্তু রেবেকা, নিনজা, ফাল্গুনী সহ সকলে তাকে ঘেরাও দিয়ে ধরে, যেন সে আসতে না পারে। একপর্যায়ে সে মোবাইল নিতে গেলেও তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে মোবাইল আনতে দেওয়া হয়নি। শুধু তাই নয়; এরা রাজনৈতিক ক্ষমতার কারনে ইদানীং হলে অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে হেনস্তা করে থাকে। এমনকি সিনিয়রদের সাথে একের পর এক বেয়াদবি করেই যাচ্ছে তারা। কিন্তু এগুলোর প্রতিবাদ করার কেউ নেই। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এদের কাছে একপ্রকার জিম্মি। 

এ বিষয়ে অভিযোগকারী হাফসা বলেন, এটা আমাদের রুমের অভ্যন্তরীণ ঘটনা। কিন্তু আমাদের দুই ব্যাচ জুনিয়র বোটানি বিভাগের রেবেকা খাতুন হলের অন্য রুমের ৭ /৮ জন মেয়ে নিয়ে আমাদের রুমে এসে আমাকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে লাঞ্ছিত ও মারধর করে। তারা সকলে মিলে রাত সাড়ে আটটা থেকে রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত আমার উপর মানসিক নিপীড়ন চালায়। নিনজা শিকদার নামের এক মেয়ে এ পুরো ঘটনা মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। এক পর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। শুধু তাই নয়; এই রেবেকার কর্মকাণ্ডে আমাদের অন্যান্য রুমমেটরাও শারীরিক ও মানসিক ভাবে হেনস্তার আশঙ্কার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। 

বিষয়টি সম্পর্কে নাজমুন নাহার স্বর্ণার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বিষয়টি জানার পর আমি ম্যামকে সাথে নিয়ে ওদের রুমে যাই। আমি গিয়ে ওদের শান্ত করার চেষ্টা করি। কিন্তু হাফসা আপুকে মারধরের বিষয় আমি কিছু জানি না। একপর্যায়ে আমি ওদের রুমে ম্যামকে রেখে নিচে চলে আসি। তারপর নাকি হাফসা আপু আমাদের ছাত্রলীগের মেয়েদের গাঁয়ে হাত দেয়। 

ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলের আবাসিক শিক্ষক মানসুরা বেগম বলেন, তুচ্ছ ঘটনার জেরে আবেগের বশবর্তী হয়ে এ কলহের সূত্রপাত। অবস্থা বেগতিক জেনে আমি সেখানে উপস্থিত হই। আমি যাওয়ার পরও তারা আক্রমনাত্নক ছিল। হাফসাকে তারা রুমের বাইরে যেতে ও ফোনটাও ধরতে দিচ্ছিল না। মূলত অন্য রুমের মেয়েদের নিয়ে আসার কারনেই এ ঘটনা এতদূর পর্যন্ত গড়ায়। আমি সকলকে বোঝানোর চেষ্টা করার পরও তারা আমার সামনে বসেই আরও উত্তেজিত হয়ে যায়। 

এ ঘটনার বিষয়ে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার বলেন, হলে বেশ কিছুদিন ধরে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। আমি এ ধরণের ঘটনায় আমি শঙ্কিত। আজ অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা আলোচনায় বসেছি। তারপর দু-পক্ষকে ডেকে বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence